Posts

গল্প

কাঠ রঙের ডায়েরি

December 17, 2024

আফরোজ মেহরুবা

একা বসে কাঠ রঙের ডায়েরিটা খুলে বসেছে জারা। ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই তার মাঝে কেমন যেন একটা কবি কবি ভাব জেগেছে। সে অন্তত দশ বিশটা কবিতা লিখে ফেলেছে। কিন্তু এটা কি তার দক্ষতা? তা সে জানে না। তার নিজের একটা মৃত প্রজাপতি কালেকশনও আছে, ছবি তোলা রিলেটেড বিষয় এই আর কি!
আর তাছাড়া এখন তার অনেক ব্যস্ততা, অ্যাসাইনমেন্ট করতে হবে, সামনের মাসে একবার বাড়ি যেতে হবে, পাত্রীই যদি না থাকে তাহলে বিয়েটা কার? এইতো এক বছর আগে সবার সাথে কেমন চেনাজানাই না ছিল কিন্তু সে নিজে থেকে কথা না বললে কথা বলার তেমন কেউ ছিল না, সেদিক দিয়ে সবাই নতুন, কারোই চেনাজানা ছিল না মনে হয় নিজেদের মধ্যে। বিয়ের কথা চিন্তা করে গা শিউরে ওঠে জারার। তাদেরই ভার্সিটির এক শিক্ষকের মেয়ে মারা গেছে মাত্র ছয় বছরে, মনে খটকা লাগারই কথা। এতো ছোটো মেয়ে! ক্লাসের অন্যদের জিজ্ঞেস করে জেনে ফেলেছে সে অনেকটা। মেয়েটি যখন মারা যায় তখন নাকি তার প্রাইভেট টিউটর তাকে পড়াচ্ছিল। সেদিক থেকে ধরতে গেলে প্রতিহিংসার কারণে এমনটি হয়ে থাকতে পারে, ছেলেটা জারাদের সাথে পড়ুয়া একজন। আর্থিক অনটনের কারণ সে টিচারকে জানিয়ে ঐ মেয়েটির হোম টিউটর হয়েছিল। আরও একটা বিষয় যে, মেয়েটি মারা যাওয়ার পর থেকেই ছেলেটি পলাতক। সেই ছেলেটির ব্যাপারে তার মনে অনেক সন্দেহ হতে থাকে। জাহিদ না কি যেন একটি নাম। এসবের কিছুই জারা ঠিক বুঝে উঠতে পারে না। এদিকে পাশের রুমে থাকা একটি মেয়ের ভাইয়ের নামও জাহিদ। এতো জোরে ফোনে কথা বলে যেন সবাই শুনতে পায়। জারা তো কারণ ছাড়াই যারপরনাই বিরক্ত হচ্ছে। যদি তার পরীক্ষার ফলাফল একটু ভালো হতো, তাহলে আর কোনো চিন্তাই করা লাগতো না। এমনিতে অবসরে সে ডায়েরি লেখে এমনভাবে যেন সবাই তাকে নিয়েই চিন্তা করে, যেন সেও মানুষের দোষ খুঁজে বেড়ায়। সে নিজেকে প্রবোধ দেয়, যেই দায়ী হোক যেন উপযুক্ত শাস্তি পায়। ছিঁড়ে ফেলে আরও একটি পাতা। লেখা ভালো হয় নাই, সময় নষ্ট খালি খালি।

Comments

    Please login to post comment. Login