জালালুদ্দিন মুহাম্মদ রুমি ত্রয়োদশ শতকের একজন ফার্সি কবি, ধর্মতাত্ত্বিক এবং সুফি দর্শনের শিক্ষক ছিলেন। তিনি রুমি নামে সর্বাধিক পরিচিত। ১৭ ডিসেম্বর বিখ্যাত এই কবির ৭৫১তম মৃত্যুবার্ষিকী।
এই উপলক্ষে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তার ভক্ত অনুসারীরা তুরস্কের কোনিয়া প্রদেশে এসে উপস্থিত হয়েছেন। এখানেই রয়েছে সুফি এই সাধকের মাজার। আর এই মাজারকে কেন্দ্র করে ১০ দিনের উৎসব শুরু হয়েছে ৭ ডিসেম্বর থেকে।
তুরস্কের সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই স্মরণোৎসব। ১০ দিনের এই উৎসব ‘শব-ই-উরস’ নামে পরিচিত। রুমি তার মৃত্যুর দিনকে স্রষ্টার সঙ্গে পুনর্মিলনের দিন হিসেবে গণ্য করতেন।
প্রতিবছর ৭ থেকে ১৭ ডিসেম্বর, ১০ দিন ধরে শব-ই-উরস পালন করা হয়। ৮০ বছরের বেশি সময় ধরে কোনিয়ায় এই উৎসবটি পালন করা হচ্ছে।
এই উপলক্ষে সিম্পোজিয়াম, প্রদর্শনী, কর্মশালাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া বিখ্যাত ঘুর্ণায়মান দরবেশ নৃত্য পরিবেশনের পাশাপাশি রুমির মসনভিও পাঠ করা হচ্ছে।
জালালুদ্দিন রুমি ১২০৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের বালখ নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। ১২৭৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর ৬৬ বছর বয়সে তুরস্কের কোনিয়ায় মারা যান মহান এই কবি।
ইউরোপ, আমেরিকার পাশাপাশি প্রাচ্যের দেশগুলোতেও রুমির কবিতা পাঠকদের অনেক পছন্দের। তিনি মূলত ফার্সি ভাষায় লেখালেখি করতেন। তবে মাঝে মাঝে তুর্কি, আরবী এমনকি গ্রিক ভাষায়ও কবিতা লিখেছেন।
রুমির মহাকাব্য ‘মসনভি’ ফার্সি ভাষার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবিতা হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি বিশ্বের প্রায় সব ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ৮১৪ বছর আগে জন্ম নেয়া এই কবির বইয়ের লাখ লাখ কপি এখনো যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হচ্ছে। ফলে তিনি দেশটির সবচেয়ে জনপ্রিয় একজন কবিতে পরিণত হয়েছেন। এভাবেই জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে বিগত ৭ শতক ধরে রুমির কবিতা মানুষকে আনন্দ দিয়ে আসছে।
সূত্র: টিআরটি ওয়ার্ল্ড