শৈশবের গ্রাম
রবি আল ইসলাম
তখন গ্রাম মানে ছিল এক বিশাল চিত্রপট।
ধানের শীষে ভরা মাঠ,
পথের ধারে তালগাছের সারি,
আর ঝিলের জলে ভেসে থাকা সন্ধ্যার আলো।
সকালবেলায় কুয়াশার পর্দা সরিয়ে
পাখিদের কোলাহলে জেগে উঠত গ্রাম।
বাড়ির পুকুর ঘাটে মা-চাচিদের হাঁড়ি-কলসির শব্দ,
আর কৃষকের লাঙ্গল কাঁধে মাঠে যাওয়ার দৃশ্য।
আমরা তখন ছোট,
মাটির গন্ধে মেখে যেত প্রতিটি দিন।
পুকুরের পানিতে ডুব দেওয়া ছিল দুঃসাহসিক অভিযান,
আর গাছ থেকে পাকা কাঁঠাল পাড়া ছিল এক উৎসব।
বৃষ্টির দিনে কাদা মেখে খেলতাম,
তালপাতার ছাতায় লুকাতাম শিশিরের ছোঁয়া।
গোধূলির রঙে রাঙা আকাশ
আর গ্রামের পথ ধরে ভেসে আসত সানাইয়ের সুর।
পুকুরের পাড়ে বসে জোনাকির আলোয়
আমরা খুঁজতাম অজানা কোনো গল্প।
সেই গল্পগুলো এখনো রয়ে গেছে,
যা শৈশবের মতই মিষ্টি,
আর সেই গ্রামের মতোই আপন।
আজ যখন শহরের কোলাহলে হারিয়ে যাই,
মনে পড়ে সেই উঠোন,
সেই সন্ধ্যা,
আর মাটির ঘরের জানালায় ঝুঁকে থাকা তারার আলো।
গ্রামটা বদলে গেছে,
তবু হৃদয়ের মাটিতে এখনো বসত করে
সেই শৈশবের স্মৃতি,
যেখানে আমি ছিলাম সত্যি সুখী।
২১/১২/২৪
দুপুর ১২.০০
পল্লবী, মিরপুর।