আমি তাহেরা। অনেকদিন ভাড়া বাসায় ছিলাম। বাবা বাসা কিনবে বলে এত বছর টাকা জমিয়েছেন। এ বছর বাবা একটা ভালো পোস্ট পেয়েছেন। তাই আর দেরি না করে বাসা খুঁজতে শুরু করলেন। বাবা একটা বাসা খুঁজে পেলেন। দুই তলা। বেশ বড় বাড়ি। অনেক গুলো রুম রয়েছে। কিন্তু বাড়িটা শহর থেকে বেশ দূরে। তাই বাবা বাড়িটা থেকে অফিস কত দূরে তা দেখলেন তিনি দেখলেন বাড়িটার পেছনে বড় ঘন জঙ্গল রয়েছে। সেই জঙ্গলে রাস্তা দিয়ে বাবা যেতে পারবে । রাস্তাটা ঠিক শহরে এসে পৌঁছায়। বাড়িটার দাম ছিল কম। তাই বাবা আর কিছু না ভেবে বাড়ি টা কিনে নিলেন। মা একটু আপত্তি জানালেও বাবা কিনলেন। তিনি ভেবেছিলেন এত বড় বাড়ি এত কম দামে পাবেন না। বাবা বাড়ির ধুলা পরিস্কার করে নিলেন। আমরা এবার আমাদের নতুন বাড়িতে উঠলাম। আসতে আসতে দেখি অনেক দূর পর্যন্ত কোনো বাড়িঘর নেই। কিছু বাড়ি দেখলাম কিন্তু তালা দেওয়া। বাড়ি পৌছে দেখি চারপাশে বন জঙ্গল। আমার ছোট ভাই একটু ভয় পেল। মা বাড়িটা দেখে হালকা খুশি হলেন। আর বাবা ভীষণ খুশি। বাড়ি কেনার খবর শুনে আমার মামা, খালা, ফুফা, চাচা, চাচি,ও ভাই বোনেরা এক কথায় পুরো পরিবার বাড়ি দেখতে আসে।। মামা খুব ভালো ভূতের গল্প বলতে পারেন এবং ভয় দেখাতে পারে। তাই রাতে খাওয়া দাওয়া পর মামাকে নিয়ে উপরের বড় ঘরটায় আসলাম। সঙ্গে আমার ভাই জুনায়েদ, রুহি, সাবা, নুহা, আলিফ, সালমা, মিম, রবি। আমার ভাই ভুত খুব ভয় পায়। তাও এলো, সবাই আছে বলে। আমরা মামাকে ঘিরে গোল করে বসলাম। মামা ভুতের গল্প বলতে শুরু করল। মাঝে মাঝে ভয় দেখাতো, কিন্তু আমার ভালো লাগছে না। সেখানে মামার গল্প শুনে আমার একটু ভয় লাগছিল। তাই মামা কে বললাম ' মামা ; ভালো লাগলো না তো। মামা বললো কেন?
তোরাই তো আমাকে নিয়ে এলি, ভূতের গল্প বলার জন্য।
সিয়াম: মামা, তুমি আমাদের ভুত সেজে দেখাও।
মামা: কি? ভূত সেজে?
জুনায়েদ: না, মামা না দরকার নেই। এমনি গল্প বল।
নাহিন: না, মামা।
মামা: কিভাবে ।
নূহা: মামা, তুমি ভুত সাজো। তারপর লাইট অফ করে দিয়ে ভয় দেখাও।
মামা: ঠিক আছে।
তারপর তার মামা রেডি ভূত সেজে। অনেক মজা করছিলাম। সময় কখন পার হলো, জানি না। একবার আমরা ঘুড়ি তে দেখি রাত ১ টা বাজে। মামা বলেন,, এখন ঘুমাতে হবে। বলে আমি লাইট জ্বালিয়ে দেয়। সঙ্গে সঙ্গে লাইট অফ হয়ে যায়। আমি আবার লাইট জ্বালিয়ে দেয়। আবার বন্ধ হয়ে যায়। এবার আমি ভয় পাই অনেক।
কেউ ভারী কন্ঠস্বর বলল,,, কেন?? তোরাই তো বললি ভয় দেখাতে। শুনে আমার গা শিউরে উঠলো । একেবারে ভয় কেঁপে উঠলো। ভয়ে ভয়ে বললাম ,,,কে?? কোনো জবাব না পেয়ে লাইট জ্বালিয়ে দেয়া হয়। জা্বালাতেই আমার চোখ সামনে একটা লাল মুখ। কেমন পোড়া পোড়া, সবুজে,লাল, । দেখে ভয়ে চিৎকার করে উঠলো। হাসতেই তাদের সামনে একটা মুখ। সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে তাদের চোখে পড়ল উপরে দেওয়ালের কোণে। একজন কেমন কালো পোশাক রয়েছে। দেখে তারাও ভয় পেল,, চিৎকার করে উঠল। বাসা থেকে বের হয়ে গাড়িতে চড়ব দেখি চরছি না। চারদিকে অন্ধকার। হঠাৎ আমরা আওয়াজ শুনলাম,,,
লা লালা লালালালা লা লা ।লা লালা লালা লালা লা লালা। দেখি নুপুর পায়ে কেউ আসছে। ভূত দেখে ভয়ে রাস্তা দিয়ে পালাতে লাগলাম। বাবা বললেন, রাস্তা দিয়ে যেতে অনেক সময় লাগবে। জঙ্গল দিয়ে চলো। জঙ্গল দিয়ে যেতে যেতে গা শিউরে উঠলো। ভয়ে অবস্থা খারাপ। তারপর ও জঙ্গল দিয়ে যাচ্ছি। হঠাৎ সামনে ভূত এলো। চিৎকার করে পড়ে গেলাম। বলল,, এটা আমার বাড়ি। এখানে শুধু আমি থাকি । এ বাড়ির দিকে চোখ তুলেও তাকাবি না। বললাম,,, না, না । তাকাব না । আমাদের যেতে দাও। বলে অন্যদিকে দৌড়াতে লাগলাম। কোনো মতে শহরের দিকে। বাবা এরপর খবর নিলেন। জানতে পারলাম বাড়ািটা এক কিশোরীর। জমি জমা এর জন্য হত্যা করা হয়েছে। তারপর বাড়ির ভূত হয়ে আছে। নাচ, গান এর আওয়াজ পাওয়া যায়।