ফ্যাসিস্টের মুখোশের নিচে
রবি আল ইসলাম
একাত্তরের চেতনার নামে তারা পরেছিলো সোনালি মুখোশ,
তবে মুখোশের নিচে লুকানো ছিলো
ফ্যাসিস্টের নখর, রক্তমাখা থাবা।
তারা শিখাতো মুক্তিযুদ্ধের শপথ,
আর সেই শপথকে পরিণত করেছিলো
শোষণের ঢালে,
যেখানে প্রতিদিনের খবর ছিলো—
হত্যা, গুম আর খুনের বিভৎসতা।
ভার্সিটির হলগুলোতে ছাত্রলীগের লাঠির তাণ্ডব,
ফারাবীদের আর্তনাদ মুছে যায়
বুলেটের শব্দে।
তাদের স্বপ্নগুলো ঝরে যায় রক্তে,
তাদের জীবনের আলো নিভে যায়
অন্যায়ের তাপে।
মায়ের বুক খালি হয়,
বাবার চোখে নেমে আসে
অসহায় এক পৃথিবীর ছবি।
তারা আলেমদের বন্দী করেছিলো—
অন্ধকার কুঠরীতে
মাহফিলে বাঁধা, আজানে বাঁধা,
এটা ছিলো নিত্যদিনের রুটিন,
দাঁড়ি আর টুপির জন্য রাজাকার ট্যাগ।
তারা ইসলামকে পরিণত করেছিলো
ত্রাসের প্রতীকে,
আর নবীজির নামে
বিষ ছড়িয়েছিলো মুক্তমনার মোড়কে।
তাদের কথায় ছিলো বিদ্বেষের ঝড়,
তাদের চেতনায় ছিলো হিন্দুত্বের ছায়া।
ভারতের কাছে এই মাটি বিক্রির পায়তারা,
সীমান্তে ফেলানীর লাশ ঝুলিয়ে
তারা হাসি তামাশা করেছে তাচ্ছিল্যে,
তবু আমরা ছিলাম নির্বাক।
তাদের গোলামীর দামে
তারা কিনেছিলো
ভারতের মিথ্যা বন্ধুত্ব,
আর আমাদের স্বাধীনতাকে
পরিণত করেছিলো
পরাধীনতার জালে।
কাঁটাতারে ঝুলে থাকা ফেলানীর শরীর
একটি জাতির লজ্জার প্রতীক,
তবু তারা উদযাপন করেছিলো
স্বাধীনতার উৎসব।
এই মাটি, এই আকাশ, এই সীমানা—
সবই তখন ভ্রান্ত এক শাসনের জালে জড়িয়ে ছিলো।
তারা আমাদের রক্তে রঙিন করেছে
নিজেদের ক্ষমতার সিংহাসন।
কিন্তু আমরা কি আবার চুপ করে থাকব?
আমরা কি ভীত হয়ে যাব
ফের কোন লোভ আর শোষণের সামনে?
জুলাইয়ের সেই আগুন থেকে
আমরা শিখেছি লড়াই,
আমরা শিখেছি প্রতিরোধ।
আমরা প্রতিজ্ঞা করেছি—
এই মাটি হবে মুক্ত,
এই আকাশে উঠবে নতুন সূর্য,
যেখানে ফ্যাসিস্টের মুখোশ
জ্বলবে ইতিহাসের আগুনে।
আজ আমরা বলছি—
তোমরা যারা মিথ্যার বর্মে
একাত্তরের গল্পকে বিক্রি করেছো,
তোমাদের দিন শেষ।
তোমাদের অন্যায়ের ইতিহাস
রক্তমাখা আঙুল দিয়ে লিখা থাকবে
জাতির বিবেকের পাতায়।
আমরা জানি,
এই সংগ্রাম হবে দীর্ঘ,
তবু বিজয় আমাদের।
আমাদের প্রতিজ্ঞা—
এই মাটি আর কাউকে বিক্রি হতে দেবে না।
আমরা লড়বো,
আমরা জিতবো,
আমরা আবার গাইবো স্বাধীনতার গান।
২৭/১২/২৪
ভোর, ৪.০০
পল্লবী, মিরপুর।