আমির মার খেয়েছে এইটা রাজকুমারী জানতো না। সেদিন রাতটা এভাবেই পার হয়।
পরের দিন সকালে রাজকুমারী ঘুম থেকে উঠে দেখে তার সখিরা দেখা করতে এসেছে। সে তার শহীদের সাথে দেখা করে। রাজকুমারীর সখিরা তাকে জানাই আমি কালকে তোমাদের প্রাসাদে কেন এসেছিল? কথাটা শুনে রাজকুমারী দুশ্চিন্তায় পড়ে আর বলে আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল। কেন তাতে কি কিছু হয়েছে? রাজকুমারীর সখিরা বলে আমিরকে কালকে তোমাদের প্রাসাদের প্রহরীরা অনেক মারধর করেছে। আমি অনেক অসুস্থ। সে বিছানা থেকে উঠতে পারছে না আমরা এসব কথা জানতে পেরে তোমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছি ্তোমাকে সবটা জানাতে এসেছি। এ কথাটা শুনে রাজকুমারী অনেক কষ্ট পায় কিন্তু কিছু করতে পারেনা। তারপরে রাজকুমারী তার সখীদের সাথে সব কথা শেয়ার করে। এতদিন ধরে তার মনের মধ্যে লুকিয়ে রাখা কথা সেটা সুখীদের সাথে শেয়ার করে। তার শখিরা কাকে বলে তুমি আমাদের আগে বলনি কেন আমরা তোমাকে সাহায্য করতাম। রাজকুমারী বলে আমি ওকে ভালোবাসি কিন্তু আমির আমাকে ভালবাসে কিনা সেটা আমি জানিনা। তাই আমি কাউকে কিছু বলিনি। তবে আমার এখন মনে হচ্ছে আমির ও আমাকে ভালবাসে। নয়তোবা এত রিস্ক নিয়ে আমার সঙ্গে দেখা করতে কেন আসবে। আবার আমার জন্য সে মার খেয়েছে। তাহলে কি আমির আমাকে সত্যি ভালোবাসে। তার সখিরা তাকে বলে হয়তো ভালবাসে তুমি তোমার মনের কথা তাঁকে জানাও তাহলেই তো তার মনের কথাও তুমি জানতে পারো। রাজকুমার বলে কিন্তু কিভাবে জানাবো।আমির কি আর তার সঙ্গে দেখা করতে আসবে। আমার মনে হয় সে আসতে পারবে না। আর আমিও তো কখনো এ প্রাসাদের বাহিরে বের হয়নি। আর আমাকে বাবা প্রাসাদের বাহিরে যেতেও দেবেনা। তাহলে এখন আমি কি করবো কিভাবে আমিরকে বলবো আমার মনের কথা।।।
তার সখিরা থাকে বুদ্ধি দেয়। আর বলে আমির যেভাবে তোমার সাথে দেখা করতে এসেছিল তুমি ও সেভাবেই যাবে দেখা করতে। তার সাথে থেকে আমাদের সাথে লুকিয়ে তুমি বের হবে আরে তো আমরা তোমায় সাহায্য করবো। রাজকুমারী নীলাঞ্জনা অনেক ভয় পায়। সেভাবে বাবা যদি জানতে পারে তাহলে কি হবে? বাবা অনেক রাগ করবে। আর আমাকেও অনেক বকাবকি করবে কিন্তু আমার তো আমিরের সাথে দেখা করতেই হবে। নীলাঞ্জনা সবকিছু ভেবে সিদ্ধান্ত নেয় সে আজ রাতেই আমিরের সঙ্গে দেখা করতে যাবে। নীলাঞ্জনা তার বন্ধুদের সাথে একটা পরিকল্পনা করে। আর প্রাসাদের সবাইকে জানিয়ে দেয় তার সখিরা আজ তার সাথে রাত্রে ভোজন করবে তারপরে বাড়ি ফিরবে। রাজকুমারী নীলাঞ্জনা বাবা নীলাঞ্জনা ও তার সখীদের জন্য অনেক রকম আয়োজন করে। রাজকুমারীর পরিকল্পনা মত তার সখিরা অনেক রাত অব্দি প্রাসাদ থাকে। তারপর রাত্রে ভোজন শেষ করে তার সখীদের যাবার পালা। তখন রাজকুমারী তার একজন সখীকে তার জায়গায় রেখে ওই সখির জায়গায় নিজে ছদ্মবেশ নিয়ে বাসা থেকে বেরই। তার সখিরা তাকে আমিরের বাসায় নিয়ে যায়। আমির এবং তার মা নীলাঞ্জনা কে দেখে অবাক হয়ে যায়। তারা বিশ্বাস করতে পারেনা যে রাজকুমারী তাদের ঘরে এসেছে। আমি এবং তার মা রাজকুমারীকে আপ্যায়ন করার জন্য উদ্বেগ হয়ে পড়ে কিন্তু রাজকুমারী তার মাকে এত কিছু করতে বারণ করে। রাজকুমারী বলে আমি আমিরের সাথে দেখা করতে এসেছি। ওর সঙ্গে দেখা করেই চলে যাব। কাল আমার জন্য তোমাকে মার খেতে হয়েছে এজন্য আমি তোমার সাথে দেখা করতে এসেছি। তখন আমি তাকে নিয়ে রুমের ভেতরে যায়। আমি এবং তার মা তাকে বলে এত রাতে তুমি এখানে কিভাবে এসেছো। রাজামশাই কি কিছু জানে? রাজামশাই তোমাকে এভাবে একা কিভাবে ছাড়লো তুমি তো কখনো আগে প্রাসাদের বাহিরে আসো নি। তখন রাজকুমারী নীলাঞ্জনা বলে আমার বাবা কিছুই জানে না আমি লুকিয়ে প্রাসাদ থেকে বের হয়ে এসেছি। তখন আমি বলে তুমি কেন এভাবে আসতে গেলে যদি ধরা পড়ে যাও তাহলে রাজা মশাই অনেক রাগ করবে তোমার প্রতি। রাজকুমারী নীলাঞ্জনা বলে এখন এসব কথা ছাড়ো আমার তোমাকে কিছু বলার আছে। আমির বলে কি কথা বলবে বলো। তখন রাজকুমারী তার মনের কথা আমিরকে খুলে বলে।
---..আমির আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। সেই ছোটবেলা থেকে তোমাকে আমার ভালো লাগতো। বলে উঠতে পারিনি। আমি ভাবতাম শুধু আমি তোমাকে ভালোবাসি তুমি আমাকে পছন্দ করো না। শুধু বন্ধু মনে করো তাই কিছু বলে উঠতে পারিনি।,,,,, ,,,,,
তখন আমির বলে ------
নীলাঞ্জনা আমিও তোমাকে অনেক ভালোবাসি। সেই ছোটবেলা থেকে। কিন্তু তোমাকে কখনো বলতে পারিনি। তুমি রাজার মেয়ে রাজকুমারী। আর আমি সামান্য গরিব ঘরের ছেলে। আমি তোমাকে কিভাবে আমার ভালবাসার কথা জানাবো। তুমি বন্ধুত্ব নষ্ট করে দাও তাই আমি তোমাকে বলিনি। আমি তোমার সাথে দেখা না করে, কথা না বলে থাকতে পারছিলাম না এজন্য আমি তোমার সাথে দেখা করার জন্য ছুটে গিয়েছিলাম।।
আমিরের মা সব টা সনে আর বলে। নীলাঞ্জনা তুমি এসব কি বলছ মা? তোমাদের সম্পর্ক কেউ মানবে না রাজামশাই শুনলে অনেক রাগ করবে আর আমাদের রাজ্য ছাড়া করে দেবে তুমি এসব কথা ভুলে যাও।
রাজকুমারী বলে আমি আমিরকে ছাড়া থাকতে পারবো না। বাবাকে আমি ঠিক বুঝিয়ে নেব।।।
সেদিনের মতো রাজকুমারী আমিরের বাড়ি থেকে তার সখিদের সাথে আবার প্রাসাতে ফিরে যায় কেউ কিছু টেরও পায়নি। সেদিন রাতে রাজকুমারী তার রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে কেউ কিছু বুঝতে পারেনি। কিন্তু পরের দিন রাজকুমারী বুঝতে পারে তার পা অনেক কেটে গেছে তার শরীরে অনেক ব্যথা আরো অনেক রকম সমস্যা। সে বুঝতে পারে এই ১৮ বছর পর সে রাত প্রাসাদের বাহিরে বের হয়েছে বলে তার এই সমস্যাগুলো হয়েছে। কারণ রাজকুমারী বাহিরের আবহাওয়ার সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারেনি তাই।