বাঙ্গালির বুদ্ধি
একদিন সন্ধ্যায় জনৈক এক বাঙ্গালি রায়বাবু হাওড়া থেকে দিল্লীগামী একটা ট্রেনে চাপলেন। তার সঙ্গে উঠলেন একজন বিহারী ভদ্রলোক তার নাম মিস্টার সিং
তিনিও দিল্লী যাচ্ছেন।
ট্রেন ছাড়ার কিছু পরে রাত্রে শুয়ে পড়ার আগে দু'জনে যে যার খাবার নিয়ে বসলেন।
মিস্টার সিং তার থালায় সাজালেন খাঁটি ঘিয়ে ভাজা পরোটা আর কষা মাংস!
এবং
রায়বাবু বের করলেন ডাল ভাত আর পুঁটি মাছ ভাজা!
মিস্টার সিং এর খাবারের গন্ধে রায়বাবুর জিভে জল এসে গেল। দুজনে মুখো মুখি বসে খাওয়া শুরু করতে যাবেন এমন সময়
মিস্টার সিং বললেন, দাদা, একটা কথা বলি?
-বলুন!
-আপনারা কাজ করেন, আমরাও কাজ করি কিন্তু কাজে আপনারা যতো উপরে পৌছেছেন আমরা কেনো পৌছিনি?
রায়বাবু গম্ভীর স্বরে বললেন, কারণ তোমাদের বুদ্ধি কম। ইস লিয়ে।
মিস্টার সিং অবাক হয়ে জানতে চাইলেন, বুদ্ধি কি জিনিস? ওটা কোথায় পাওয়া যায়?
রায়বাবু পুঁটি মাছ দেখিয়ে বললেন, এটা খেয়ে, এই মাছ খেলে বুদ্ধি হয়।
মিস্টার সিং ভাবে গদ গদ হয়ে বললেন, দাদা, তাহলে আজ আপনার এই বুদ্ধিওয়ালা খাবারটি আমাকে দিন আর আমার খাবারটা আপনি নিয়ে নিন।
প্রস্তাবটা শুনে রায়বাবুর আনন্দ হলেও মুখ গম্ভীর করে ভাব নিয়ে বললেন, না না! এতে যে আমার বুদ্ধি কমে যাবে!
মিস্টার সিং, আরে দাদা, আপনি তো অনেক আগে থেকেই এই বুদ্ধিওয়ালা মাছ খান। একদিন না খেলে তো আপনার কিছুই হবে না।
রায়বাবু ভাব করে মুখে নিমরাজি ভাব দেখিয়ে খাবার বদলা বদলি করলেন এবং প্রেমসে মিস্টার সিং এর পরোটা মাংশ খেয়ে নিলেন আর, সিং জী বিরস বদনে পুঁটি মাছ চিবোলেন।
পরের দিন সিং জীর মনে হলো কাল রাতে বাঙালী বাবুটা তাকে খুব ঠকান ঠকিয়েছে।
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে তিনি বললেন, দাদা, এই কাজটা আপনি ঠিক করেননি। কাল রাতে আমার দামী খাবার আপনি খেয়ে আমাকে পুঁটি মাছ খাওয়ালেন!
রায়বাবু বললেন, কাল আপকা ইয়ে বুদ্ধি কাঁহা থি?
অর আজ ও বুদ্ধি কাঁহাসে আয়া?
ও তো পুঁটি মাছলি সে হি আয়া!
16
View