বাদশাহ আদেশ দিলেন, অপরাধীর প্রাণদণ্ড হওয়া উচিত। লোকটিকে শূলে চড়াও।
বাদশাহ’র আদেশ অমান্য করে কে! লোকটিকে ধরে – বেঁধে নিয়ে আসা হল শূলে চড়ানোর জন্যে।
লোকটা কাতর অনুনয়-বিনয় করল। কিন্তু বাদশাহ অনড়। লোকটা বুঝল, বাঁচবার তার কোনো আশা নেই। তখন সে বাদশাহ’র উদ্দেশে গালাগালি শুরু করল। হাত-পা ছুড়ে চিৎকার করতে লাগল।
বাদশাহ বসে আছেন বেশ দূরে। লোকটির চিৎকার-চেঁচামেচির কোনো অর্থ তিনি বুঝতে পারলেন না। পাশে-বসা একজন সভাসদকে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, লোকটি কী বলতে চায়?
সভাসদ দেখলেন ভারি বিপদ! সত্য বললে বাদশাহ হয়তো ভয়ানক রেগে যাবেন। তাই তিনি বললেন– বাদশাহ, লোকটি বলছেঃ যে ব্যক্তি অপরাধীকে ক্ষমা করে সে সকলের শ্রদ্ধা অর্জন করে। আমিও তো সকলের শ্রদ্ধা অর্জন করতে চাই।
বাদশাহ লোকটির কথা শুনে খুব খুশি হলেন। বললেন, ওকে মুক্ত করে দাও।
পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন আরেক সভাসদ।
প্রথম সভাসদের ওপর তার ছিল ভারি রাগ। সে তাড়াতাড়ি বললঃ বাদশাহ, ঐ সভাসদ মিথ্যা কথা বলছে। লোকটা আপনাকে গালাগালি দিচ্ছে। একে মুক্ত করা উচিত নয়।
এই সভাসদের কথা শুনে বাদশাহ বেশ উত্তেজিত হলেন। রাগ করলেন তিনি। সভাসদের দিকে তাকিয়ে বললেন—ওর মিথ্যাকথা অনেকগুণে ভালো। কারণ ও মিথ্যা বলছে একটা লোকের প্রাণরক্ষার জন্যে আর তুমি সত্য কথা বলছ দুটো লোকের ক্ষতি করার জন্যে।
তাহলে আমি কার কথা শুনব? ক্ষতিকর সত্যের চেয়ে উপকারী মিথ্যা আমার কাছে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য।
বাদশাহ’র কথা শুনে সভাসদরা ধন্য ধন্য করতে লাগল।