উমেদ বাস থেকে নেমে অফিস বিল্ডিংয়ের দিকে এগিয়ে যায়। চারপাশের কোলাহল তার মনে কোনো প্রভাব ফেলতে পারছিল না, কারণ তার মন ছিল শুধুই আল্লাহর উপর নির্ভরশীলতায় পূর্ণ। ভিতরে প্রবেশ করেই সে দেখে, অনেক মানুষ একই চাকরির জন্য অপেক্ষা করছে। সবাইকে দেখে উমেদের মনের মধ্যে অল্প ভয় হলেও সে দৃঢ় থাকে। আল্লাহর কাছে দোয়া করে নিজের নাম ডাকার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে।
ইন্টারভিউ রুমে প্রবেশ:
তার নাম ডাকা হলে, সে মৃদু হাসি নিয়ে রুমে প্রবেশ করে। ইন্টারভিউ বোর্ডের তিনজন সদস্য তার দিকে তাকিয়ে। তারা তাকে বসতে বলেন এবং সাধারণ কথোপকথনের মাধ্যমে শুরু করেন।
তার রেজাল্ট, অভিজ্ঞতা এবং জীবন সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন করা হয়। উমেদ নিজের সৎ মনোভাব ও কাজের প্রতি দায়িত্বশীলতার কথা তুলে ধরে। ইন্টারভিউ শেষে তাকে বলা হয়, রেজাল্ট জানানো হবে।
আয়েশার পরিচিতি:
অফিস থেকে বের হওয়ার সময় উমেদ মসজিদের দিকে যায়, জোহরের নামাজ আদায় করার জন্য। নামাজ শেষে মসজিদের বারান্দায় সে একটি মেয়েকে দেখে, যার পোশাক, আচরণ এবং চলাফেরা ছিল অত্যন্ত মার্জিত ও ইসলামিক।
এই মেয়েটি আয়েশা। আয়েশা তার বাবার জন্য ওষুধ কিনতে এসেছিল কাছাকাছি ফার্মেসিতে। উমেদ তাকে চিনতে পারে না, তবে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করে মেয়েটির স্নিগ্ধ এবং শান্ত চেহারা।
আলাপের সূত্রপাত:
আয়েশা মসজিদের বাইরে হঠাৎ পথের কাঁটায় পা দিয়ে হোঁচট খেয়ে পড়ে যাচ্ছিল। উমেদ সামনে এগিয়ে তার হাত বাড়িয়ে দেয়। আয়েশা মাথা নিচু করে ধন্যবাদ জানায়।
"আপনি ঠিক আছেন?" উমেদের কণ্ঠে আন্তরিকতা ছিল।
"জ্বি, ঠিক আছি। ধন্যবাদ," আয়েশা উত্তর দেয়। তাদের ছোট এই কথোপকথনই ছিল ভবিষ্যৎ সম্পর্কের প্রথম সেতু। তবে দুজনেই তখন একে অপরের সম্পর্কে কিছু জানত না।
উমেদের বাসায় ফেরা:
ইন্টারভিউয়ের ক্লান্তি এবং দিনের ব্যস্ততা নিয়ে উমেদ বাসায় ফিরে। বাসায় এসে সে প্রথমেই নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে নিজের জন্য এবং পরিবারের জন্য সাহায্য চায়। আয়েশার মিষ্টি ব্যবহার তার মনে এক ধরনের শান্তি এনে দেয়, যদিও সে জানত না, এই মেয়ে তার জীবনে কেমন প্রভাব ফেলবে।
আয়েশার দৃষ্টিকোণ:
অন্যদিকে আয়েশা বাড়ি ফিরে তার মায়ের সঙ্গে কথা বলে। আয়েশা একজন ইসলামের আদর্শ মেয়ে, যে সবসময় আল্লাহর উপর ভরসা করে। তার বাবা ফারুক আহমেদ একজন আলেম, যিনি তার মেয়েকে ইসলামিক শিক্ষা দিয়ে বড় করেছেন। আয়েশাও তার ভবিষ্যৎ জীবনসঙ্গীকে ইসলামিক মূল্যবোধ সম্পন্ন দেখতে চায়।
চলবে……
গল্পের নাম : বিশ্বাসের পথচলা
পর্ব : ০২
কাহিনি ও লেখা : শাহরিয়ার আহমেদ