১) তিনটি বিষয় আপনার যথাসাধ্য সর্বোচ্চ মনোযোগ দাবী করে। শারীরিক ফিটনেস। মানসিক ফিটনেস। অর্থনৈতিক ফিটনেস। এসব আপনার নিজের জন্যই। আপনার আশপাশের প্রিয়জনদের কাজেও আপনি লাগবেন।
২) অ্যাকাডেমিক লেখাপড়া যতই বোরিং লাগুক না কেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ভালো করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখুন। এই বিষয় গুরুত্বপূর্ণ।
৩) অ্যাকাডেমিক লেখাপড়ার বাইরে চোখকান খোলা রাখুন। এখন ইন্টারনেটের যুগ। কোডিং, এআই ব্যবহারে দক্ষতা, ট্রেডিং, স্টক, ক্রিপ্টো, ভূরাজনীতি এসবে প্রয়োজনীয় জ্ঞান আহরণ করুন এবং নিজ জীবনে কাজে লাগান।
৪) মোটিভেশনাল স্পিকারদের কথা শুনার সময় একটা বিষয় খেয়ালে রাখবেন, গেইমে তাদের স্কিন আছে কিনা। তারা লাস্ট বেঞ্চ থেকে ভালো করার কথা বলবেন, বলবেন কীভাবে ফার্স্ট বয়ের চেয়ে তারা এগিয়ে গেছেন। আপনার স্বপ্নের পিছনে সব ফেলে ছুটে যেতে বলবেন তারা। আপনার সাধ্যের বৃত্তের পরিধি আগে জেনে নিন।
৫) সম্পর্ক গড়ার ক্ষেত্রে আবেগ অবশ্যই অবশ্যই প্রাধান্য পায়, পাবে। আপনি সম্পর্কে সিনসিয়ার থাকুন। শুধুমাত্র রূপ, টাকাপয়সা নয়, পার্টনারের এমন ভ্যালু আছে কিনা যা আপনার ভ্যালুর সাথে মিলে কিংবা আপনাকে বুস্ট করতে পারে সেদিকটা দেখে নিন।
৬) আজকালকার যুগে বৈবাহিক সম্পর্ক বেশ ট্রিকি একটা বিষয়। তাই বিয়ের আগে অর্থনৈতিক, মানসিক এবং সুখি জীবন গড়ার জন্য যেরকম স্কিল গঠন করা প্রয়োজন তা জেনে নিন। বইপত্র আছে, আছেন বিজ্ঞজনরা, তাদের কাছ থেকে জ্ঞান আহরণ করে নিজ জীবনে যদ্দুর সম্ভব যোগ-বিয়োগ করে, নিজ বৈশিষ্ট্য বজায় রেখে এগিয়ে যান।
৭) ভার্চুয়াস, সৎ এবং আস্থাভাজন হওয়ার চেষ্টায় রত থাকুন। জীবনের প্রায় সব ক্ষেত্রে এসব কাজে দিবে।
৮) আজেবাজে অভ্যাস যেমন নেশা, অতিরিক্ত পর্ণাসক্তি একদম এড়িয়ে চলুন। মানসিকভাবে এসব আপনাকে বিগ লুজার বানিয়ে দিবে।
৯) বন্ধুত্ব সারাজীবনের জন্য খুব কমই হয় এবং এটিই ভালো। এক এক সময় যে বন্ধুকে মূল্যবান মনে হয়েছিলো পরবর্তিতে তেমন মনে না হওয়াটা স্বাভাবিক।
১০) পরিশ্রমী, ডিসিপ্লিনড, উচ্চাকাঙ্ক্ষী মানুষজনকে খুঁজে নিন। সঙ্গ কিন্তু বেশ দরকারী ব্যাপার।
১১) হারু মানসিকতার মানুষজনকে এড়িয়ে চলুন।
১২) সময় নদীর স্রোতের চেয়ে দ্রুত বহমান। টক্সিক সম্পর্ক, লক্ষ্য-উদ্দেশ্যহীনদের সাথে চলা কিংবা কোন এক নির্দিষ্ট মতাদর্শ, ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করে নিজের প্রতিভাকে নষ্ট করবেন না।
১৩) মানুষজনকে গুরুত্ব দিন। চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলুন তার সাথে, যতই আপনার চেয়ে ইনফেরিয়র হোক না কেন সে।
১৪) নিজের রাগের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় যা যা করনীয় করুন।
১৫) বাম, ধর্মীয় আদর্শবাদীদের কথায় কিংবা খ্যাতিমান কোন সাহিত্যিক যেমন মানিকের দারিদ্রকে গ্লোরিফাই করবেন না। আপনার অর্থ-বিত্তের প্রয়োজন আছে। সেই পথে মনোনিবেশ করুন।
১৬) ফেসবুক, টুইটার, এরকম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সময় দরকার ছাড়া কাটানোর অভ্যাস ত্যাগ করুন। ডোপামিন ওভারডোজ এক ভয়াবহ ব্যাপার আপনার শরীর-মনের জন্য।
১৭) ধর্ম মানবেন কি মানবেন না এসব নিয়ে অযথা তর্কবিতর্ক, টক্সিসিটিতে জড়িয়ে জীবনের মূল্যবান সময় নষ্ট করবেন না। ধর্মে বিশ্বাস থাকা না থাকা আপনার ব্যাপার। তবে ধর্মীয় চরমপন্থা পরিহার করুন।
১৮) ভিন্নমতের মানুষজন কী বলছে তাও একটু জানার চেষ্টা করুন। অনেক নির্মম সমালোচনায়ও সত্য লুকিয়ে আছে, আছে দিকনির্দেশনা।
১৯) ফেসবুকে এমন কোন মন্তব্য অযথা করবেন না যা ভদ্রতার মাত্রা ছাড়িয়ে যায় কিংবা কোন গোষ্ঠিতে উস্কে দেয়।
২০) সম্ভব হলে জিমে যান, হ্যান্ড টু হ্যান্ড কমব্যাট ট্রেনিং নিন, কাজে দিবে।
২১) নিজের গোপন কথা একান্ত বিস্বস্ত কেউ অথবা থেরাপিস্ট না হলে শেয়ার করবেন না।
২২) ভালো বই পড়ুন, চলচ্চিত্র দেখুন, গান শুনুন, সম্ভব হলে আর্ট গ্যালারিতে যান, শিল্পচর্চার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
২৩) আপনি মহাবিপদে পড়লে খুব খুব কম মানুষই কেয়ার করবে এটা আগে থেকে মেনে নিন। বরং অনেকে মনে মনে খুশি হতে পারেন, এটা হিউম্যান ন্যাচার।
২৪) আপনি ঠিকঠাক গাড়ি চালানোর পরও কোন মদ্যপ ট্রাকড্রাইভারের ধাক্কায় প্রাণ হারাতে পারেন, আহত হতে পারেন। জীবনে ক্যারিয়ার, সম্পর্ক এসবে প্রায় সবদিকে ঠিকঠাক চলার পর মানুষ আপনার ব্যাপক ক্ষতি করে বসতে পারে। পৃথিবীতে খারাপ মানুষও কম নেই। তাই নিজেকে সব সময় দোষ দিবেন না।
২৫) সমাজ আমাদের উপর অনেক কিছুই চাপিয়ে দেয়, যা কৃত্রিম। আপনার যদি এসব বুঝার এবং না মানার ফলে সৃষ্ট চাপ মোকাবিলা করার সক্ষমতা থাকে তাহলে এসব আপনি না মানলেও চলে।
২৬) মানুষের জীবন এক পুনরাবৃত্তির চক্র। স্মার্টফোনের জগত থেকে বেরিয়ে এসে সম্ভব হলে ব্যায়াম করুন, খেলাধুলা করুন, ভ্রমণে যান। নতুন নতুন স্কিল আহরণ করুন। এমন স্কিল যা বর্তমান এবং ভবিষ্যতে কাজ দিবে। কোন শখ থাকলে পূরণ করার চেষ্টা করুন।
২৭) সেক্স একটি স্বাভাবিক ব্যাপার। পর্নোগ্রাফী কিংবা মিডিয়ায় আশক্ত হয়ে নিজের সেক্সুয়াল লাইফকে অস্বাভাবিক কিছুতে পরিণত না করাটাই উত্তম।
২৮) নিজের একশন নিজে ঔন করুন। সব সময় মা-বাবা, ভাইবোন, স্বামী / স্ত্রী, এক্স সমাজকে সব বিষয়ে দোষারোপ করাটা ঠিক নয়।
২৯) লেখাপড়া করুন। লেখাপড়া শুধুমাত্র বইয়ে এখন আর সীমাবদ্ধ নেই। নিজের নলেজের ব্যাপ্তি বাড়ান। শত শত বই, মুভি দেখলেই কাজ হয়ে যাবে এমনটা না। যা পড়েছেন, দেখেছেন, সেসবকে সম্ভাব্য সব দিক থেকে এনালাইস করুন। বই, মুভি থেকে মানুষ চিন্তার সূত্র পায়। শুধুমাত্র বই নির্ভর জ্ঞান অকার্যকর। বাস্তব জীবনকে গভীরভাবে দেখার অভ্যাস করতে হবে।
৩০) আত্মীয়-স্বজন, পরিবার-পরিজন, পার্টনার, বন্ধুদের সাথে ডিল করার সময় তাদের দিকটাও সারাজীবন যথাসাধ্য ভাবার চেষ্টা করুন।
৩১) ব্যক্তিগত জীবনে আপনি যেন একজন ফ্যাসিস্টে পরিণত না হোন সেদিকে খুব খেয়াল রাখবেন।
৩২) যেকোন ভুল করে বসলে, দুর্ব্যবহার করে বসলে, সময় মতো না পৌছালে আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করুন।
৩৩) রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় বিষয়ে আলাপ করার সময় কৌশুলি হন। আপনার কাজ শত্রু বাড়ানো না বরং পারস্যু করা।
৩৪) খাবার-দাবার বুঝে খাবেন। আপনি যা খান আপনি তা-ই। স্বাস্থ্যকর খাবার বিষয়ে এখন গুরুত্বপূর্ণ লেখা / ভিডিও ইন্টারনেটেই পাবেন।
৩৫) ইনভেস্টমেন্ট বুঝার চেষ্টা করুন। হোক তা ফাইনান্সিয়াল কিংবা ইমোশনাল।
৩৬) ঘৃণা-বিদ্বেষ থেকে নিজেকে দুরে রাখুন। ইন্টারনেটে ট্রলরা নয়, ওয়ান্ডারফুল পিপলদের অনুসরণ করুন। বাস্তব জীবনেও।
৩৭) আপনি একজন ব্যক্তি যে নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান। এভাবে ভাবলেই ভালো হয়। আপনার গুরু / মেন্টর / সিইও আপনি নিজেই হন, সম্ভব হলে। আপনার প্রতিটা পদক্ষেপ যেন আপনার ব্র্যান্ডকে উন্মোচিত করে।
৩৮) নিন্দা, কুৎসা, পরচর্চা, পরনিন্দা এসব গাধামিযুক্ত অপকর্মে নিজেকে যদ্দুর সম্ভব জড়াবেন না।
৩৯) নিজেকে প্রশ্ন করুন। সব সময় কনফিডেন্স ভালো না। একটু আত্মজিজ্ঞাসা থাকা দরকার। নাহলে আপনার মাঝে গোড়ামি সৃষ্টি হবে।
৪০) বয়স বাড়ার সাথে সাথে আপনার চামড়া কুচকে যাবে, চুল পাকবে অথবা পড়ে যাবে। শরীর আগের শক্তি পাবে না। এসব মেনে নিন।
৪১) আপনি মনে করছেন মানুষ আপনাকে নিয়ে অনেক ভাবে, আসলে কিন্তু তা নয়।
৪২) মজলুম এবং জালিমের পার্থক্য, অবস্থাভেদে তাদের পারস্পরিক অবস্থান পরিবর্তন জীবনের সব ক্ষেত্রে বুঝা দরকার।