করিম সাহেব মৃদু হেসে বললেন, "আচ্ছা, বলো তোমাদের ধাঁধা।"
রতন বলল, "ধরুন, একটি বাড়িতে তিনটি কক্ষ আছে। প্রতিটি কক্ষে একটি করে বাতি জ্বলছে। বাড়ির বাইরে তিনটি সুইচ আছে, যেগুলো ওই বাতিগুলো নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু একবার ভিতরে ঢুকলে আবার বাইরে আসা যাবে না। কীভাবে আপনি নির্ধারণ করবেন কোন সুইচ কোন বাতি নিয়ন্ত্রণ করে?"
করিম সাহেব কিছুক্ষণ ভেবে বললেন, "এটা তো সহজ। আমি প্রথমে একটি সুইচ চালু করব এবং কিছুক্ষণ অপেক্ষা করব। তারপর সেই সুইচ বন্ধ করে দ্বিতীয় সুইচ চালু করব। তৃতীয় সুইচ বন্ধ রাখব। এরপর বাড়ির ভিতরে ঢুকব। যেই বাতি জ্বলবে, সেটা দ্বিতীয় সুইচের। যেটা গরম থাকবে কিন্তু বন্ধ, সেটা প্রথম সুইচের। আর যেটা ঠান্ডা এবং বন্ধ, সেটা তৃতীয় সুইচের।"
রতন আর সুমন হতবাক হয়ে গেল। তারা করিম সাহেবের কাছে হেরে গিয়ে বলল, "আপনার সত্যিই অনেক বুদ্ধি। আমরা আপনার ভক্ত হয়ে গেলাম।"
করিম সাহেব হাসলেন। বললেন, "বুদ্ধি হলো ধৈর্য আর পর্যবেক্ষণের ফল। তবে মনে রেখো, সব সময় বুদ্ধি দিয়ে নয়, মনের উদারতায়ও মানুষকে জয় করতে হয়।"
সেদিনের পর থেকে সুমন আর রতন নিয়মিত গ্রন্থাগারে আসতে লাগল। তারা শুধু ধাঁধার উত্তর খুঁজত না, বরং করিম সাহেবের সঙ্গে কথা বলত, বই পড়ত। তাদের জীবনের একটি নতুন দিক খুলে গেল।
করিম সাহেব তাদের হাসিমুখে দেখতেন। তার মনে হতো, এই তরুণদের মধ্যে হয়তো আগামী দিনের আলো লুকিয়ে আছে। আর সেই আলো জ্বালানোর জন্য সামান্য একটু বুদ্ধি আর ভালোবাসাই যথেষ্ট।