২০১৭ সালে ওয়াইমি টেকনোলজির ১১ জনকে গ্রেফতার করে র্যাব,যারা জড়িত ছিল জঙ্গী অর্থায়নের সাথে।আইব্যাক নামক যুক্তরাজ্য ভিত্তিক কোম্পানি ৯টি দেশে সফটওয়্যার কোম্পানি চালনা করছিলো।সেই আইব্যাকের প্রতিষ্ঠাতা শিপন ২০১৫ সালে সিরিয়াতে মারা গেলে তার ভাই সবুজ এর দায়িত্ব নেয় এবং সবুজ স্পেনে বসে আইব্যাকের আদলে গড়ে সিনটেল এবং সিনটেলের আদলে বাংলাদেশে গড়ে তোলে ওয়াইমি টেকনোলজি।এই ওয়াইমির ৫৩ শতাংশ অর্থ জঙ্গী সংগঠনে ব্যয় হতো বাকী ৪৭ শতাংশ অফিস,বেতন এসব কাজে খরচ করা হতো। ওয়াইমির স্পেনে বসা মালিক সবুজকে স্পেনের সরকার জঙ্গী অর্থায়নের অভিযোগে গ্রেফতার করে। আইব্যাক প্রতিষ্ঠানটি জেএমবির সারোয়ার-তামিম গ্রুপের বাশারুজ্জামান চকলেটের মাধ্যমে তামিম চৌধুরীকে ৫০ হাজার ইউএস ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি টাকা দিতে চেয়েছিল। তখন বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জেনে ফেলা। বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যে আইব্যাকের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়।
জঙ্গী অর্থায়ন কখনো হ্রাস পেয়েছে,কখনো বা বেড়েছে কিন্তু এটা নির্মূল করা যায়নি একবারে।২০২৪ এ #জুলাইজুলুম ঘটেছে বিপুল অর্থের ব্যয়ে।এই অর্থ কিভাবে এসেছে?অর্থ কি নেতারা বস্তা ভরে কর্মীদের দিয়েছে?না।
প্রযুক্তির এ সময়ে মাদক পাচার,সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা যে কোন বৈধ অবৈধ কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে ভার্চুয়াল মুদ্রা,মোবাইল ব্যাংকিং,অনলাইন জুয়া এ এক অন্যরকম জগৎ। ধরেন আপনার নিউটন নামক এপে একাউন্ট আছে।এখানে আপনি কথার কথা ক্রিপ্টোকারেন্সি কিনেছেন।আপনার নাম যাই হোক আপনি জন নামে কিনলেন।এই বিটকয়েন আপনি ডলারর কনভার্ট করতে পারবেন,সেই ডলার আপনি স্থানীয় মুদ্রা আমার দেশের জন্য টাকায় কনভার্ট করে বিকাশে বা নগদে পেমেন্ট করতে পারবেন।ক্রিপ্টো যখন ডলারে কনভার্ট হচ্ছে আপনি দেখবেন একটা রেমিট্যান্স এসেছে।ছোট ছোট ভাগে যখন এভাবে অর্থ আসে স্লিপার সেলগুলোর কাছে তা মনিটর করা খুব দু্ষ্কর হয়ে যায়।কারণ ক্রিপ্টোকারেন্সি বিভিন্ন দেশের সার্ভার থেকে পরিচালিত হয় এবং এটা খুঁজতে গেলে আপনাকে সার্ভার এর সাথে সংযুক্ত হতে হবে।
নানা ফরমেটে তাই টাকা আসে।ফ্রিল্যান্সিং এর আড়ালে আসে টাকা,আসে পণ্য আমদানী-রফতানি তে আন্ডার ইনভয়েসিং,ওভার ইনভয়েসিং করে এবং এখন ডার্কওয়েব,ক্রিপ্টোকারেন্সি,ব্লকচেইন ট্রানজেকশন একে অন্যের সাথে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত।
পরস্পরের সাথে সম্পর্ক
ডার্কওয়েব -> ক্রিপ্টোকারেন্সি -> ব্লকচেইন -> মোবাইল ব্যাংকিং
• ডার্কওয়েব:
• সদস্য সংগ্রহ, অস্ত্র কেনা, এবং গোপন চ্যাট গ্রুপের মাধ্যমে তহবিলের চাহিদা প্রকাশ।
• ক্রিপ্টোকারেন্সি:
• ডার্কওয়েবে চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার পর অর্থ স্থানান্তর।
• জঙ্গীদের ক্রিপ্টোকারেন্সি ওয়ালেটে তহবিল জমা।
• ব্লকচেইন:
• এই লেনদেনগুলো ব্লকচেইনে নথিভুক্ত হয় কিন্তু ব্যবহারকারীর পরিচয় গোপন থাকে।
• সাধারণত ব্লকচেইনের লেনদেন তদন্ত করা কঠিন।
• মোবাইল ব্যাংকিং:
• ক্রিপ্টো থেকে স্থানীয় মুদ্রায় অর্থ স্থানান্তরের জন্য বিকাশ বা নগদের মতো সেবা ব্যবহার।
• স্থানীয় লোকদের তহবিল সরবরাহে মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহৃত হয়।
ক্রিপ্টোকারেন্সি জঙ্গী সংগঠনগুলো ব্যবহার করে নিচের কারণে:
• পরিচয় গোপন: ব্যাংকিং ব্যবস্থার বাইরে থাকায় এটি নজরদারি এড়িয়ে যায়।
• জঙ্গী তহবিলের বৈশ্বিক বিস্তার: আন্তর্জাতিক দাতাদের কাছ থেকে সরাসরি অর্থ সংগ্রহ সম্ভব।
• বাজারে লেনদেন: অস্ত্র এবং অন্যান্য সামগ্রী ক্রয়ে ব্যবহার।
• অস্থিতিশীলতা: মূল্য পরিবর্তনের সুযোগ নিয়ে অধিক মুনাফা অর্জন।
ব্লকচেইন: লেনদেনের স্বচ্ছতা কিন্তু পরিচয় গোপন
ব্লকচেইন একটি বিকেন্দ্রীকৃত প্রযুক্তি, যেখানে লেনদেন রেকর্ড হয়।
জঙ্গীদের ব্যবহার:
• ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ।
• পরিচয় গোপন রাখার জন্য বিশেষত privacy coins (যেমন Monero, ZCash) ব্যবহার।
• ব্লকচেইনের মাধ্যমে বৈশ্বিক তহবিল স্থানান্তর।
সন্দেহভাজন সংস্থা ও কার্যক্রম
• এনজিও ও সিভিল সোসাইটি সংগঠন:
• কিছু এনজিও বা সিভিল সোসাইটি সংগঠন রাজনৈতিক পরিবর্তনে সরাসরি জড়িত নয়, তবে তাদের কার্যক্রম অনেক সময় রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার পেছনে ভূমিকা রাখতে পারে।
• মিডিয়া ও প্রচারণা:
• কিছু গণমাধ্যম বা সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাক্টিভিস্ট আন্তর্জাতিক অর্থায়নে প্রভাবিত হতে পারে।
• বক্তিগত অর্থায়ন:
• প্রভাবশালী ব্যক্তি বা উদ্যোক্তারা নিজেদের রাজনৈতিক এজেন্ডার জন্য তহবিল পেতে পারে।
বাংলাদেশে জঙ্গী অর্থায়ন দমন একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ। তবে সরকারি নজরদারি, জনগণের সচেতনতা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
ইজ আদ-দ্বীন আল-কাসেম ব্রিগেডস এর কেইস স্টাডি
চাঁদা বা অনুদান চেয়ে আল কাসেম ব্রিগেডের আবেদন
ফিলিস্তিনের ইসলামী মৌলবাদী গোষ্ঠী হামাসের সামরিক শাখা ইজ আদ-দ্বীন আল-কাসেম ব্রিগেড। তারা আল কাসেম ব্রিগেড নামেই বেশি পরিচিত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। কিন্তু নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া এবং যুক্তরাজ্যের তালিকায় সন্ত্রাসী হিসেবে নাম আছে শুধু আল কাসেম ব্রিগেডের।
২০১৯ সালের ৩১ জানুয়ারি আল কাসেমের টেলিগ্রাম চ্যানেলে পোস্ট করা একটি বিজ্ঞাপনের স্ক্রিনশট টুইট করে অরোরা ইন্টেলিজেন্স। তাতে Nj3y দিয়ে শেষ হওয়া একটি বিটকয়েন ঠিকানায় অনুদান পাঠানোর আবেদন জানানো হয়। দুইদিন পর টেলিগ্রামে পোস্ট করা আল কাসেমের আরেকটি বিজ্ঞাপন শেয়ার দেয় অরোরা। সেখানে ভিন্ন একটি বিটকয়েন ঠিকানা ছিল যা শেষ হয়েছে P6MD দিয়ে।
কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এই দু্ই ঠিকানায় প্রায় ৫,০০০ ডলার সমমূল্যের বিটকয়েন জমা পড়ে। যুক্তরাষ্ট্র ঘোষিত কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর জন্য এটিই সবচেয়ে সফল বিটকয়েন তহবিল সংগ্রহ অভিযান। ৫,০০০ ডলার শুনে অল্প মনে হতে পারে। কিন্তু আর্থিক অপরাধ বিশেষজ্ঞ ইয়াইয়া ফানুসি মনে করেন, এই গতিতে অনুদান সংগ্রহ করতে পারলে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর জন্য তহবিল যোগানোর নির্ভরযোগ্য একটি মাধ্যম হয়ে উঠতে পারে বিটকয়েন।
"কালার রেভল্যুশন" বা কোনো রাজনৈতিক আন্দোলনের পেছনে আন্তর্জাতিক অর্থায়ন নিয়ে বিতর্ক ও প্রশ্ন বিভিন্ন সময়ে ওঠে। বিশেষ করে ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (IRI)-এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে কেন্দ্র করে এই ধরনের প্রশ্ন ওঠা অস্বাভাবিক নয়। IRI একটি মার্কিন ভিত্তিক সংস্থা, যা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান তৈরি ও উন্নতির জন্য কাজ করে। তবে নির্দিষ্ট কোনো দেশ বা আন্দোলনে তাদের সম্পৃক্ততা এবং অর্থায়নের তথ্যের সঠিক সত্যতা বিচার করে বলা প্রয়োজন।
বাংলাদেশে IRI বা অন্য কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থার অর্থায়ন সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ বা প্রমাণের বিষয়টি অনেক সময় গোপনীয়তার কারণে নিশ্চিত করা কঠিন হয়। তবে বাংলাদেশে কালার রেভল্যুশন ধরনের রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরির ক্ষেত্রে যদি কোনো সংগঠন বা ব্যক্তি অর্থ পেয়ে থাকে, তাহলে তা নিয়ে সরকারের এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর তদন্ত এবং রিপোর্টের ওপর নির্ভর করতে হয়।
লেখাটি তৈরী করতে নীচের লিংকগুলোর এবং চ্যাটজিপিটির সহায়তা গ্রহণ করেছি
👇
ওয়াইমি টেকনোলজি-https://www.jagonews24.com/national/news/345025
নতুন জঙ্গী সংগঠন অর্থায়নে জামায়াতের আমীর-https://bangla.thedailystar.net/news/bangladesh/news-430516
জঙ্গিবাদে অর্থায়নের অভিযোগে সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশির কারাদণ্ড- https://www.dhakapost.com/amp/international/99503
জঙ্গী অর্থায়ন ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে হলে কিভাবে মনিটর করা যাবে-https://gijn.org/bn/%E0%A6%97%E0%A6%B2%E0%A7%8D%E0%A6%AA%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A7%82%E0%A6%B9/kriptokarensira-madhyame-jangi-arthayana-tryakim-karabena-yebhabe/
হুন্ডি অনলাইন জুয়া-https://www.dhakapost.com/economy/225584
রেমিট্যান্সের আড়ালে মানি লন্ডারিং-https://protidinerbangladesh.com/opinion/112157/%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%86%E0%A6%A1%E0%A6%BC%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A7%87-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%BF-%E0%A6%B2%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A1%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%82
67
View