জানুয়ারি
জানুয়ারি, শুকনা পাতার মতন নদী।
ভেজা চোখের গাল গড়াতেই অশ্রু পায়ে হাঁটা পথ দুরুত্বে,
ভেড়ার পালের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রত নেকড়ের
চোয়াল বয়ে তখনও লালার ফেনা গড়িয়ে পড়ছে।
গড়িয়ে পড়ছে অগ্নিয়গিরি থেকে লাভা;
গড়িয়ে পড়ছে প্রেমিকার চোখের অঢেল ভালোবাসা।
জানুয়ারি, সেদিনের দেখা আজকে অসীম বিরহ।
প্রতিমুহূর্তে মনে হতে থাকা কথা, মুখ, মুখের, চোখের ছাঁচ;
অনবরত বুকে ফুটতে থাকে মুঠো হাতে কাড়াকাড়িতে ভাঙা চুরির কাচ।
বাতাসে চেনা ঘ্রান, আঙুলের রেখা বরাবর ঘুরে চলেছে
ঘুরে চলেছে ইলেক্ট্রনের দিক সচরাচর
ঘুরে চলেছে ক্রমাগত দূরে চলে যাওয়ার মোচড়।
জানুয়ারি, সেদিন পেলাম প্রথম প্রহরে দেখা।
মোহিনী কাঞ্চনে গেথে রাখা ছিল বেলিফুলের মালা।
হাতের ফাঁকে একরাশ বালির দুঃখ লেগে আছে
লেগে আছে মৌমাছির চুরি করা ফুলের পরাগ
কেমন করে শীত ফুরালেই ফুল মারা যাবে
শীত ফুরালেই জানুয়ারি গম্ভীর চোখে হারাবে।
জানুয়ারি, তীব্র আকাঙ্খার সমাপ্তি
পায়ে হেটে চলা পথে তখন নীরবতা বিরাজমান।
ঘুমের মধ্যে বলশেভিক বিপ্লবের আশংকা;
ঘুম ভাঙলে মুরসির সঙ্গে করা সেনাপতির অবিচার।
পায়ের নিচে সবুজ মাইন্ পোতা,পায়ের নিচে সুখের ধুলো মাখা।
জানুয়ারি, তিনমাস ধরে শেষ করতে চাওয়া রহস্য উপন্যাস।
যার শেষ অংশে বন্দুকের বারুদের গন্ধ,
যার শেষ অংশে বুকে গুলি লেগে ভিলেন আদি থেকে অন্ত।
লাঠিতে ভর করে শীতের হুহু বাতাস ভেসে আসছে জানালা দিয়ে;
জানালা দিয়ে ভেসে আসছে মৃত্যুর মতন রেডিয়েশন,
জানালা দিয়ে ভেসে আসছে কোনো কথার দাহক অন্নেষণ।
জানুয়ারি, এক মূহুতের মধ্যে শৈতপ্রবাহ।
ক্ষনিকের প্রভাবে হারাতে চলেছিল অনন্ত।
যে ভায়োলেট ফুলের গন্ধ নেই, ভুল করে ফুটেছিলো সে।
সেই বাগানে গন্ধ বিহীন এক মরুভুমি বালি জড়ো করে–
বসে আছে, বসে আছে অধীর আগ্রহে মরীচিকা নিয়ে।