স্মৃতির অন্তরালে
হঠাৎ হাতের ছোক লেগে গড়িয়ে পড়া চা,
ঘরের কোনে বাঁধ ভাঙা বৃষ্টি, চশমার কাচ—
কাঁচের উপরে জড়ো হওয়া কুয়াশা,
মেঘ মেয়ের বুক চিরে সূর্যের হাতছানি,
কমলা রঙের বাতাস ভেঙে ছুটে চলা বাস,
ধূসর রঙের আমার প্রিয় সবচেয়ে শার্ট;
সবকিছু স্মৃতির অন্তরালে গহীনে হারাচ্ছে।
তোমার মুখ, ঠোঁটের ভাঁজ, চোখের স্থিমিত পলক,
নাকের তরীর মতন বাঁক, কথার মন্থর ঢেউ,
কান্নার করুন ধ্বনি, হাসলে বিস্তিত মুখ,
রঙের কালো মিশানো শাড়ির আঁচল, শাড়ির পাড়,
কাজল দিতে গিয়ে বাচ্চাদের মতন লেপ্টানো চোখ,
থুতনির নিচে জড়ো করে রাখা অব্যাক্ত অজানা কিছু,
মিছেমিছি হাতছানি, দুরুত্ব মাপার নাম কথোপকথন,
সবকিছু স্মৃতির অন্তরালে গহীনে হারাচ্ছে।
শনি থেকে আবার শনি পর্যন্ত জীবন!?
দুঃখ থেকে গাছের উচ্চতায় দুঃখের পাতা,
সুখের পায়ের নিচে পূর্বপুরুষের মাটিখোৱা গুপ্তধন,
নাম না জেনেও গোগ্রাসে গিলে যাওয়া ঘৃণা,
প্রেমের মতন কোনো বাতাসের ঘ্রানের মদিরতা,
পঁচা পানির মধ্যে গোড়ালি পর্যন্ত ডোবানো পা,
ব্রিজ থেকে অসীম দুরুত্বে পানির লেভেল,
কিঞ্চিৎ কান্নার বদৌলতে সুখের প্রত্যাবর্তন,
সবকিছু স্মৃতির অন্তরালে গহীনে হারাচ্ছে।
ইতিহাস, সাহিত্য, দর্শন, জ্ঞানগর্ভ, মাতৃগর্ভ,
কুকুরের কুঁইকুঁই ডাকে মৃত লাশের গা–
শিউরে শিউরে ওঠার দেওয়ালে ফটোগ্রাফ,
বাসি নোংরা ফেনা উঠা খাবারের উপরে লোলুপ দৃষ্টি,
সৃষ্টির পরেই স্বাধীন ইচ্ছেয় অনাসৃষ্টি,
কথিত উন্নতির স্বর্ণশিখরের হাতছানি,
সোনার তৈরী চকচকে স্বপ্ন, ক্রমাগত দেজাভু,
সবকিছু স্মৃতির অন্তরালে গহীনে হারাচ্ছে।