একটা ছোট গ্রামের পাশ দিয়ে একলা এক মেয়ে হাঁটছিল। তার নাম মিনা। গায়ের পোশাক ছিল সাদাটে রঙের, আর চোখে ছিল কিছুটা বিষন্নতা, যেন কিছু একটা হারিয়ে ফেলেছে। বাড়ির সীমানা পেরিয়ে, সে একেবারে খোলা মাঠে চলে গিয়েছিল। তার মন একদম ভারী হয়ে ছিল, কিন্তু সে জানত, এই হাঁটার মধ্যেই তার শান্তি খুঁজে পাবে।
মিনা খুবই নিঃসঙ্গ ছিল। মা, বাবা, ভাই-বোনরা সবাই শহরে চলে গিয়েছিল কাজের জন্য। আর মিনা, ছোটবেলা থেকেই গ্রামের বাড়িতে তার দাদুর সঙ্গে থাকত। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরেই দাদুও অসুস্থ। মিনা তার দাদুর প্রতি দায়বদ্ধ, কিন্তু মাঝে মাঝে তারও মনে হত, কি আর করার আছে? সে একা, একদম একা।
আজ সে আবার মাঠে বেরিয়ে এসেছে, কারণ এখানে তার একান্ত নিজস্ব একটা জায়গা ছিল। বাতাসে ভেসে আসছিল মধুর ফুলের গন্ধ। দূরে মাঠের দিকে তাকালে দেখা যেত বিশাল সবুজের সমারোহ, আর আকাশে মেঘের বর্ণালি দৃশ্য। এমন দৃশ্যই ছিল, যা মিনা প্রায়ই খুঁজত। কখনো কখনো, এসব দৃশ্যই তার মনকে একটু হালকা করে দিত।
হাঁটতে হাঁটতে, মিনা কিছুটা পেছনে ফিরে দেখল। তার গ্রামের বাড়ি এখন অনেকটাই ফাঁকা। কিন্তু কিছু দিন আগে সে খুব হাসিখুশি ছিল। তখন তার সঙ্গে দাদু, মা-বাবা, আর বন্ধুরা থাকত। কিন্তু এখন, সেই হাসি কোথায় চলে গেছে? তবে, মিনা জানত, হারানো সব কিছু ফিরিয়ে আনা যায় না, তবে নতুন কিছু সৃষ্টি করা যায়।
সে একসময়ে থামল, কিছু সময় চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইল। আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল, “মা, বাবা, আমি ঠিক আছি। আমি চেষ্টা করছি। আর দাদুও হয়তো একদিন ভালো হবে।“
মিনা বুঝতে পারল, একলা থাকা মানেই একা থাকা নয়। মাঝে মাঝে, একলা থাকা নিজেকে জানার এক বিশেষ মুহূর্ত।