জীবনে চলার পথে এই কথাগুলো হয়তো কখনো কোনো কাজে লাগবে।
কথাগুলো শুনে মানলে আপনি হয়তো খুব সহজেই অনেক ধরনের বিপদ থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন।
১। কখনো বাসে জানালার পাশে বসে মোবাইল টিপবেন না, কখন টান দিয়ে নিয়ে যাবে টের ও পাবেন না।
২। রিকশাতে বসে কোলে ব্যাগ রাখবেন না পাশ থেকে মটরসাইকেল কিংবা গাড়িতে করে এসে হ্যাচকা টান দিয়ে নিয়ে যাবে।
৩। যদি পারেন তবে যাত্রা পথের রাস্তায় কিছু খাবেন না, পারলে একেবারে কিছুই না। দূরপাল্লার যাত্রা হলে বাড়ি থেকে সাথে করে খাবার নিয়ে আসুন অথবা স্টেশনের বাইরের দোকান হতে কিনে আনা প্যাকেটজাত কিছু খান। পাশের যাত্রী কিছু খেতে দিলে কখনো খাবেন না। আপনি হয়তো ভাবছেন খেলে তাতে কি?
আপনি হয়তো জানেন না যে পানি বা ডাব কিনলেন বা অন্যের দেয়া কিছু খাবার খেলেন তাতেই থাকতে পারে চেতনা নাশক মারন ঔষধ।
৪। ট্রেন জার্নিতে দরজার পাশে, দুই বগির পাশে দাড়াবেন না কিংবা যতোই ভালো লাগুক দরজায় দাঁড়িয়ে সিগারেট খাবেন না। ট্রেনের ছাদে চলাচল যতোই রোমান্টিক লাগুক না কেনো, যে গ্যাং গুলো ছিনতাই করে, তারা খুবই নির্দয় এবং বেপোরোয়া হয়, ছাদে বা দরজায় দাঁড়ানোর কারণে অনেক যাত্রীর লাশ পাওয়া যায় সারাদেশের ট্রেন লাইনের আশে পাশে। তখন বেশিরভাগই বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করে ফেলা হয়।
৫। কপাল খারাপ হলে ছিনতাই এর শিকার হবেন। ধরা যাক হলেন। তখন কি করবেন? ছিনতাইকারীরা সংখ্যায় বেশ কয়েকজন। আপনি একা, আপনার চারপাশে কেউ নেই। তারা আপনাকে এক রকম ঘেরাও করে রেখেছে। আপনার পকেটে দামী ফোন, টাকা কিংবা শরীরে অলংকার। এসবক্ষেত্রে ভালো হয় ফোন বা অন্য কিছুর মায়া ত্যাগ করে তাদের দিয়ে দেয়া কারণ যারা ছিনতাইকারী তাদের বেশিরভাগই হয়তো নেশাগ্রস্থ। আপনার জীবনের দাম পৃথিবীর যেকোনো দামী জিনিস বা ফোনের চেয়েও অনেক বেশি, তাই না?
৬। বান্ধবী বা মেয়ে বন্ধুর সাথে রেস্টুরেন্ট বা পার্কে যাচ্ছেন হঠাৎ করে দেখবেন আপনার চারপাশে একদল ছেলের আবির্ভাব, এরা কিন্তু একটা গ্যাং! দেখবেন আপনাদের নিয়ে নানান রকম আজে বাজে কথা বলছে, বাজে ইঙ্গিত দিচ্ছে। আসলে ওরা চাইছেই আপনাকে উত্তেজিত করে একটা ঝামেলা বাঁধাতে!
এতে কিন্তু ওদেরই লাভ, সেটা কি রকম?
ধরা যাক, আপনি মাথা গরম করে ঝামেলায় জড়ালেন। ওরা আপনাকে অপমান করেছে বলে আপনি পাল্টা কিছু বললেন বা করলেন। এই পেয়ে গেলো চরম সুযোগ। ওরা তখন বাইরে থেকে নেতা গোছের কাউকে ধরে আনবে। যিনি এসেই আপনাকে আপনার বান্ধবীর সামনেই নানা রকমভাবে জেরা করবে। তারপর বিচারে আপনাকেই দোষী বানিয়ে দেবে। অতঃপর মিটমাট করার নাম করে আপনার কাছ থেকে জরিমানা বাবদ টাকা পয়সা কিংবা দামী ঘড়ি, ফোন অথবা ল্যাপটপটা রেখে দেবে। তাই এসব জায়গায় কথা বাড়ানো মানেই নিজের ঝামেলা ডেকে আনা আর নির্জন জায়গা হলে এদের দেখা মাত্রই আগেই সরে পড়ার চেষ্টা করুন।
৭। কখনো ভোর রাতে ঢাকা এসে পৌঁছেছেন। খুব সাহস দেখিয়ে কিন্তু রাস্তায় নেমে পড়তে যাবেন না। বাসস্টপে বা ট্রেন স্টেশনেই অপেক্ষা করুন। সকালে যখন রাস্তায় যথেস্ট মানুষ থাকবে তখন বের হউন।
৮। বাস ষ্টেশন, ট্রেন স্টেশন বা সদরঘাটে নিজে নিজে নিয়ে যেতে পারেন না এমন বোঝা নিয়ে এসেছেন তো একেবারে মরেছেন। মাথায় করে পৌঁছে দেয়ার নামে আপনার কাছ থেকে চাঁদার মতো চারশো বা পাঁচশো টাকা খসিয়ে ছাড়বে ওখানকার কুলিরা। তাই সাবধানে থাকুন, দরদাম করে তারপর কুলি ঠিক করুন।
৯। গুলিস্থান, নিউমার্কেট বা নীলক্ষেতের মতো জায়গায় কেনা কাটা করতে গেলে খুবই সাবধান থাকবেন কৌতুহলের বশে কোনো কিছুর দাম জিজ্ঞেস করলেও এখানে আপনাকে পাল্টা দাম বলার জন্য জোরাজুরি করবে। মনে রাখবেন এখানে মেজাজ দেখিয়ে কোনো লাভ নেই, এখানকার দোকানীরা সংঘোবদ্ধ হয়ে কাজ করে।
১০। বাসে উঠলে প্যান্টের পিছনের পকেটে মোবাইল, মানিব্যাগ এসব কিছু রাখা নিরাপদ না। দেখবেন ভিড়ের মাঝে বাসে উঠছেন যে কেউ টান মেরে নিয়ে যেতে পারে টের ও পাবেন না। তাই সামনের পকেটে এসব জিনিস রাখুন।
১১। বাণিজ্যমেলা, চিড়িয়াখানা, চন্দ্রিমা উদ্যান কিংবা শিশুপার্কে গিয়ে দাম খুব ভালো করে না জেনে কখনো কিচ্ছু খাবেন না। দেখা যাবে একটা সিংগাড়া কিংবা আধা প্লেট বিরিয়ানি খাইয়ে চারশো থেকে পাঁচশো টাকার বিল ধরিয়ে দেবে আপনাকে।
১২। যদি পারেন তবে রাতে খালি রাস্তায় ঘোরাঘুরি না করাই ভালো। ছিনতাইকারী ধরলে তো কোনো কথাই নেই। এমনকি কিছু বিপদগামী পুলিশ ধরলেও বিপদ। যদিও সকল পুলিশ বিপথগামী নয়। যতোই নির্দোষ হন, পুলিশ যদি বুঝতে না চায় আর আপনাকে আটকে রাখার নিয়তে যদি থাকে, তাহলে আপনার কিছুই করার থাকবে না। তাদের সাথে কোনো তর্ক করতে যাবেন না।
১৩। বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে আছেন, হঠাৎ একটা মাইক্রোবাস এসে থামলো আপনার সামনে। সেটা প্রাইভেট গাড়িও হতে পারে। আপনাকে চালক বলবে সে গ্যারেজে ফেরার পথে বাড়তি কিছু ট্রিপ নিচ্ছে। খুব অল্প ভাড়ায় আপনাকে গন্তব্যে পৌছে দেবার কথা বলবে। আপনি কোনো মতেই এমন গাড়িতে উঠবেন না। মেয়ে হলে তো আরো আগে না।
১৪। রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন হঠাৎ ভদ্রবেশি কেউ এসে, সে হতে পারে ছেলে বা মেয়ে বা বয়ষ্ক পুরুষ কিংবা মহিলা, আপনার ফোন চাইলো। বললো, উনার কোন একটা সমস্যার কথা, এক্ষুনি একটা ফোন দিতে হবে কাউকে। আপনি হয়তো তাকে বিশ্বাস করে ফোনটা দিলেন, দেখবেন পরোক্ষণেই হুট করে বাইকে উঠে হাওয়া!
১৫। আপনার সাথে সব সময় আইডি কার্ডের ফটোকপি সাথে রাখুন। বিপদে পড়লে খুব কাজে দেয়। হয়তো কোনো দূর্ঘটনা ঘটেছে, অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছেন, তখন যারা উদ্ধার কাজে আসবে তারা আপনার পরিবার পরিজনকে সহজেই জানাতে পারবে।
১৬। নতুন বিবাহিত হলে এবং স্ত্রীকে সাথে নিয়ে ঘুরতে গেলে কাবিননামার ছবি মোবাইলে তুলে রাখুন। কখন কোন কাজে লেগে যাবে আপনি তা বুঝতেও পারবেন না।
সবচেয়ে বড়ো কথা, সবসময় সতর্ক থাকুন, চোখ কান খোলা রাখুন। মনে রাখবেন, আপনার নিরাপত্তা আপনারই নিজের হাতে। এই বিষয়ে আপনারা সতর্ক থাকবেন। নিজে সতর্ক ও সচেতন থাকুন এবং অন্যকেও সতর্ক ও সচেতন করুন।