Posts

গল্প

ছেড়ে দেয়ার জন্য হাত ধরিনি প্রিয়

January 13, 2025

Nishat Khan

19
View

#ছেড়ে দেয়ার জন্য হাত ধরিনি প্রিয়। 
#লেখিকা:তাসনিম খান
#পর্বঃ১ 
দীর্ঘ চার বছর পর  রাফি তার গ্রামে ফিরছে, সে খুবই এক্সাইটেড তার গ্রাম নিয়ে না জানি তা এখন কতটা  সুন্দর রূপ ধারণ করেছে, সেই নদী ভরা জল মাঠ ভরা ধান সকাল হলেই পাখির কিচিরমিচির গান গাওয়া সেই বিকালে আকাশে ঘড়ি উড়ানো। সেই বন্ধুদের সাথে চায়ের দোকানে আড্ডা, আরো কত কি ... 
আজ আমি আবারও সেই গ্রামের আবহাওয়ায়.....আজ গ্রামের আকাশটা একটু অন্যরকম লাগছে কেমন যেন আকাশটা ধোঁয়াসে ধোয়াসে পকেট থেকে ফোনটা বের করে অন করলাম ওয়ালপেপার এ দেওয়া মানুষটার হাসি মাখা চেহারা  মনটাকে  একপ্রকার দুলা দিয়ে গেল, নিজের অজান্তেই ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে উঠলো, আচমকা  গাড়িটা থেমে যাওয়ায় সামনে ধাক্কা খেতে খেতে বেঁচে গেলাম, অমিত কে জিজ্ঞাসা করলাম, অমিত কি হয়েছে গাড়ি থামালে কেন? 
অমিত বলল :স্যার সামনে অনেক মানুষ গাড়ি আর সামনে নেওয়া যাচ্ছে না, গাড়ি থেকে নেমে অবস্থা বোঝার চেষ্টা করলাম, চারদিকে মানুষ দৌড়াদৌড়ি করছে একজনকে থামিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম ভাই কি হয়েছে এভাবে সবাই ছোটাছুটি করছে কেনো, লোকটি আমাকে যা জানালো তা শোনার পরে আমি  আর সেখানে দাঁড়াতে পারলাম না, লোকটার দেওয়া লোকেশনে ছুট দিলাম, অমিতের শব্দ কানে আসছে সে চিল্লিয়ে বলছে স্যার কই যাচ্ছেন, কিন্তু আমার কাছে এই সময়টুকু নেই যে আমি তার প্রশ্নের উত্তর দিব,লোকটার বলা লোকেশনে আমি এসে দাঁড়িয়ে আছি সামনে একটা তিনতলা বাংল  দাও দাও করে জ্বলছে দুই দুইটা ফায়ার সার্ভিস কিছু করতে পারছে না, একজন সোর্স কে থামিয়ে  জিজ্ঞাসা করলাম তোমাদের টিমকে লিড করছে কে, সে আমাকে তার হাতের ইশারায় দেখিয়ে দিয়ে তার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ল, আমি লোকটার দেখানো লোকটার কাছে গিয়ে বললাম, ভাই আপনি যেভাবে লিড করছেন তাতে করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসবে না, লোকটা বলল আপনি আমার থেকে বেশি জানেন যান দূরে গিয়ে দাঁড়ান পাবলিক পাবলিকের মতো থাকেন, আমি বললাম ভাই আমি সত্যি বলছি, লোকটা এবার আমাকে থাপ্পর মারতে উদ্বুদ্ধ হলো, আমারর রাগ এবার আর কন্ট্রোলে থাকল না, সে আমাকে থাপ্পর মারার আগে আমি তাকে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিলাম, লোকটা চোখ বড় বড় করে বলল তোর এত বড় সাহস তুই আমাকে থাপ্পর মারিস জানিস আমি কে? রাফি বললো :আপনি কে আর আপনার কি দায়িত্ববোধ সেটা আমি খুব ভালো করে ইতিমধ্যে জেনে গিয়েছি, এখন আপনার আমি কে এটা জানা উচিত,
কিছুক্ষণ পর.....
রাফি একটা মেয়েকে কোলে করে নিয়ে বেরিয়ে আসছে, মেডিকেল টিম মেয়েটাকে হসপিটালে  নিয়ে যায়, রাফি রাগে চোখ লাল করে ডিপার্টমেন্টের সকলের দিকে তাকিয়ে আছে, সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একটা লোকও মাথা উঁচু করে রাফির দিকে তাকাতে পারছে না রাফির পাশে দাঁড়িয়ে ছিল ওই লোকটি যে রাফি এখানে আসার আগে এই টিম লিড করছিল রাফি তার দিকে তাকিয়ে বলল তো মিস্টার...... পাশ থেকে অমিত বলল স্যার এর নাম আকবর! রাফি বললো আমি আপনাকে সাসপেন্ড করলাম  লোকটা তখনও নিজের মুখে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল, সে কোনদিন ভাবেনি আজ তার এই অবস্থা হবে, সে যেন কিছুক্ষণ আগের মুহূর্তটা ভুলতেই পারছে না,
কিছুক্ষণ আগে...... 
এখন আপনার জানা উচিত আমি কে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরে প্রধান পরিচালক রাফি চৌধুরী। 
সামনে দাঁড়িয়ে থাকা আকবার তার কথা শুনে চমকে  উঠলো রাফি আরো বললো যদি বিশ্বাস না হয় দেখো আমার আইডি কার্ড, আকবার যখন তার আইডি কার্ড দেখল মনে হচ্ছিল তার নিচের মাটি ফাঁকা হয়ে গেছে সে যেন অচিন পাতালে হারিয়ে যাচ্ছে, সে তার ভবিষ্যৎ স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে অন্ধকার। আকবার বললো স্যার আমি আপনার কি সেবা করতে পারি, রাফি বলল আমার একটা ইউনিফর্ম প্রয়োজন আর আপনি আপনার টিমকে জানিয়ে দিন এই মুহূর্ত থেকে আমি আপনার টিম পরিচালনা করব, যেই বলো সেই কাজ আকবার সমস্ত  কিছু সময়ের মধ্যে   ব্যবস্থা করে  দিল।
বর্তমান...... 
রাফি তাকে জিজ্ঞাসা করলো, আমি যতদূর জানি তুমি দুই দুইটা ফায়ার সার্ভিসের দ্বারা তুমি ইজিলি এই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারতা, কিন্তু তুমি তা করনি, আমি তার কারণটা জানতে চাই, এদিকে রাফি যে মেয়েটাকে উদ্ধার করেছে তার জ্ঞান  ফিরে আসে, তৎক্ষণাৎ এই সংবাদটা রাফিকে দেওয়া হয়, নার্স  এসে  জিজ্ঞাসা করলো:ম্যাম আপনার কি এখন ঠিকঠাক লাগছে , মেয়েটি বলল হ্যা,নার্স বলল আপনার সাথে কেউ দেখা করতে চায় তাকে কি ভিতরে আসতে বলব, মেয়েটি বলল হ্যাঁ আসতে  বল, আগন্তুক রুমে প্রবেশ করে বলল মামনি এখন ঠিকঠাক আছো,?মেয়েটি জিজ্ঞাসা করল আরে রোহিত চাচা, লোকটি বলল ওহ আমি ভাবলাম তুমি আমায় চিনবে না, যাইহোক মামনি  একটা সিগনেচার করতে হবে, কপাল কুঁচকে  বলল কিসের সিগনেচার..? রহিম বলল :জানি মামুনি তুমি শুনতে পারবে না তবুও আমাকে বলতে হবে, মেয়েটি বলল কি এমন যা আমি  শুনতে পারব না,রহিম একটা দীর্ঘশ্বাসের সাথে  বলল , মামনি তুমি এখন তোমার বাবার সকল সম্পত্তির একমাত্র উত্তরাধিকারী, মেয়েটি বললো বুঝলাম না সঠিক। রহিম বলল :মামনি তুমি একমাত্র তোমার ফ্যামিলির মধ্যে বেঁচে আছো এখন, বাকিরা সবাই স্পটেই মারা গেছে, মেয়েটি বলল ফাজলামো করতেছেন, রহিম বলল মা তোমার কি মনে হয় এটা এমন কোন বিষয় জেটা নিয়ে ফাজলামো করা যায়, রহিম বলল মামনি এখানে একটা তাড়াতাড়ি সিগনেচার করে দেও, মেয়েটি বলল না আমি কোন সিগনেচারন করব না আর আমি কেনইবা কোন সিগনেচার করব কি আছে এই কাগজে...? রহিম বলল মামনি ভয় পেয়ো না আমি তোমার কোন ক্ষতি করবো না তুমি তোমার পরিবারের শেষ সদস্য এবং একমাত্র উত্তরাধিকারী যে প্রাপ্তবয়স্ক মেয়েটি বলল  প্রাপ্তবয়স্ক বলতে , রহিম বলল তোমার  বয়স এখন ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে , এজন্য আমরা তোমার কাছ থেকে অনুমতি না পাওয়া পর্যন্ত তোমার আব্বু আম্মুর বডি পস্পাটাম করতে পারছি না, এবার মেয়েটি কান্নাকাটি শুরু করে দিল সে বলে আমি এসব বিশ্বাস করিনা, এমন সময় রাফি রুমে ঢুকলো, মেয়েটি তাকিয়ে বলল একে, রাফি বলল আমি রাফি চৌধুরী.... ম্যাম উনি যা বলছেন সত্যি বলছেন, মেয়েটি নিজেকে সামলে সিগনেচার করল, রহিম বলল, নিলিমা মামনি আমি আসি,, নীলিমা  বলল থামেন আমাকে নিয়ে যান আমি আমার বাবা-মাকে দেখতে চাই রহিম বলল মামনি তুমি এমনি নিজেকে সামলাতে পারছ না রাফি বলল ম্যাম আপনি আমার সাথে চলুন , নীলিমা রাফির সাথে চলে গেল, ওকে যখন সেখানে নেওয়া হল ও যেন বিশ্বাসই করতে পারছে না মা বাবা বড় আপু বড় আপু মেজ আপু  ছোট আপু আলিয়া মামুনি... সবাই মনে হচ্ছে এক লাইনে শুয়ে আছে.. কিন্তু কাউকে চেনা যাচ্ছে না রাফি নীলিমার দিকে তাকিয়ে দেখলো,নীলিমার হাফ ভাব  ভালো না ,রাফি আচমকাই  নীলিমাকে কোলে তুলে নিল,নীলিমা  কিছু না বলে ওর গলা জড়িয়ে ধরে কানতে শুরু করল।

#ছেড়ে দেওয়ার জন্য হাত ধরিনি প্রিয়। 
#লেখিকা :তাসনিম খান। 
#পর্বঃ ২ 
দীর্ঘ সময় যাবত রাফি পাইচারি করছে, আর নিজেকে দোষী মনে করছে, ও যদি আজ নীলিমাকে ওইখানে না নিয়ে যেত হয়তো এই অবস্থা হতো না, পাশ থেকে রোহিম চাচা বলল, রাফি! বাবা একটু কিছু খেয়ে নাও, রাফি বললো  না চাচা আমি খাব না, আপনারা খেয়ে নিন, এমন সময় অমিত পিছন থেকে ডাগ দেওয়ায়, রাফি পিছনে ফিরে তাকালো, অমিত বলল স্যার এ মহিলা এসে বলছে আপনার সাথে দেখা করবে সে নাকি আপনার বড় বোন, রাফি বলল আমার বড় বোন রেশমা আপু, রাফি রেশমার দিকে এগোতেই রেশমা এসে রাফিকে জড়িয়ে ধরল, কপালে হাত বুলিয়ে  দিয়ে বলল সেই ছোট্ট রাফিটা কত বড় হয়ে গেছে, এতদিন কত করে তোকে গ্রামে আসতে বলেছি আসিস নি আজ হঠাৎ চলে এলি...? রাফি বলল তেমন কিছু নয় একটু মন চাইলো তাই চলে আসলাম, রেশমা বলল তাহলে বাড়ি চল, রাফি বলল না আপু আমি বাসায় যাব না, রেশমা বলল কেন বাবা-মা নেই বলে কি আমরা তোকে আদর করবো না, রাফি বলল এমন কিছু না, ওই যে দেখছো একটা মেয়ে শুয়ে রয়েছে রেশমা বললো হ্যাঁ, রাফি বলল একটু আগে আমার ভুলের কারণে ওর মিনি স্টক এসে গিয়েছে, রেশমা থমকে গেল, কিছুক্ষণ পর ডক্টর এসে বলল রুগীর অবস্থা ভালোর দিকে, পাশ থেকে অমিত বলল থ্যাংক গড ঠিক টাইমে আমরা ঢাকাতে নিয়ে আসতে পেরেছিলাম, নাহলে যে আজ কি হতো, প্রায় ৫ ঘন্টা পর, নীলিমার জ্ঞান  ফিরে আসে, ডক্টর এসে চেক  করে রাফিকে জানায় শি ইজ অল রাইট ..!রাফি একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিল।২ ঘন্টা পর নীলিমা নিজেকে এম্বুলেন্স আবিষ্কার করল, পাশে একজন মধ্য বয়স্ক মহিলা বসে আছেন, পাশে রহিম চাচাও বসে আছেন, নিলিমা কিছু বলার চেষ্টা করে কিন্তু শরীর ক্লান্ত থাকার দরুণ বলতে পারেনা পাশ থেকে রেশমা বলে আমি রেশমা রাফির বোন...! বিশ্রাম নেও। এক লং জার্নির পড়ে গ্রামে এনে এডমিট করা হয়, সেখানে বেশ কিছুদিন যায়, এরপর নীলমাকে হসপিটাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়, রাফি নীলিমার ব্যাকপ্যাক করছে, নীলিমার মাথায় কিচ্ছু ঢুকছে না কে আছে ওর, চারিদিকে আত্মীয় স্বজন থাকলেও সবাই ওকে না, ওর টাকাকে ভালোবাসে, এসব ভাবতে ভাবতেই ও কান্না করে ফেলল, আর তখনই রাফির চোখ ওর দিকে পড়ল, রাফি বলল আরে ম্যাম কান্না করছেন কেন? আমি বুঝতে পারছি আপনার উপর কি যাচ্ছে, তবুও আপনাকে নিজেকে সামলিয়ে নিতে হবে, নীলিমা রাফির দিকে তাকিয়ে আছে রাফি বলল কিছু বলতে চান আমায়..? 
নীলিমা বলল আমি আমার বাড়িতে যেতে চাই, রাফি বললো ম্যাম ওইখানে এখন আর মানুষ থাকতে পারবে না পুরো বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে, নিলিমা বলল আমি কখন বললাম আমি ওখানে থাকতে যাব আমি আমি ওইখানে যাব, আপনি আমাকে নিয়ে যাবেন কিনা বলুন, রাফি বলল ম্যাম ওখানে যেয়ে কি করবেন, নীলিমা বলল আমার যা করার আমি তাই করব আপনি কি আমার সাথে যাবেন না আমি একাই যাবো, রাফি বলল ওকে ডান।
কিছুক্ষণ পর..... 
নিলিমা ওর বাড়ির ভিতরে পায়চারি করছে, আর বাড়ির চার দিকটা দেখছে, রাফি বলল এবার যদি আপনি স্টক করেন আমি কিন্তু কোন  দায়ভার নিতে পারবো না, নীলিমা বাঁকা হেসে বলল, কি হয়েছিল সে সময়...? 
রাফি বলল আপনার কিছু মনে নেই, নীলিমা বলল তেমন কিছু মনে নেই জাস্ট পৃথিবীটা কেমন যেন ঘোলাটে ঘোলাটে হয়ে এসেছিল, রাফি বললো জাস্ট এতুটুকুই, নীলিমা বলল হ্যাঁ আমার যতদূর মনে পড়ে আমার এতটুকুই মনে আছে, রাফি বলল বাস্তব এতটুকুই মনে আছে আপনার?  নীলিমা বলল হুম! রাফি আর কিছু বলতেই যাবে এমন টাইমে নিলিমা থমকে দাঁড়ালো, রাফি বললো কোন সমস্যা? বলল না জাস্ট আদরের ভাগ্নির  ঘোড়া টা দেখে ওর কথা মনে পড়ে গেল, রাফি ওর পায়ের দিকে তাকালো একটা খেলনা ঘোড়া নীলিমার  পায়ের কাছে পড়ে রয়েছে রাফিওটা  হাতে তুলে নিয়ে বলল এটা কি আমরা সাথে নিয়ে নিব....? নীলিমা বলল ইচ্ছা তো হয়..... রাফি বলল তাহলে নিজের সাথে নিয়ে নিন।নীলিমা আবার হাঁটা শুরু করলো,হঠাৎ বলে উঠলো আচ্ছা মিস্টার রাফি আপনার কি  মনে হয় এটা জাস্ট একটা দুর্ঘটনা , রাফি বলল জানিনা, নীলিমা বলল চলুন চলে যাই রাফও বলবো এই ঘোড়াটা কি নেবোনিলিমা বলল জানিনা, বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় রাফিকে আঁচমকা রাফি কে জিজ্ঞাসা করল কে হ্যান্ডেল করছে...? রাফি জুতার ফিতা বাধতে বাধতে বললো , ইন্সিপেক্টর বদিউল আলম। আর আপনি এটা জেনে কি করবেন, তার থেকে চলুন যাওয়ার পথে আমরা এই ঘোড়াটাকে রিপেয়ার করতে দিয়ে  যাব, এমন সময় নীলিমা বড়  বড় চোখ করে, তাকিয়ে আছে রাফি ফাস্টে ভাবে ও হয়তো রাফির দিকে তাকিয়ে আছে, তাই একটু ভাবনায়, কি ম্যাম এভবে তাকিয়ে আছেন কেন? মনে হচ্ছে ভূত দেখে ফেলেছেন? নীলিমা রাফির কোন কথার উত্তর না দেওয়ায়, রাফি পিছনে ফিরে তাকায়, রাফি বলে ম্যাম ইনিই বদিউল আলম, নীলিমা যেন নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না একটা মানুষের এত বড় ভুড়ি, একটা মানুষ এতো কালো হতে পারে একটা ছেলে মানুষের রুচি কোন পর্যায়ের খারাপ  হলে সে তার মাথায় তেল দিয়ে চুল কপালে লেপটে রাখতে পারে নীলিমা বলল মিস্টার এর তুলনায় আপনি আকাশে চাঁদের সমতুল্য।
রাফি বলল আপনার কি সমস্যা  মিস্টার বদিউল আলম, বদিউল আলম  কর্কশগলায় বলে উঠলো, আপনাকে না একবার বলেছি এখানে আসবেন না তবুও কেন এসেছেন এখানে, আর এই যে পিচ্চি মে নীলিমা, ছোট মানুষ ছোট মানুষের মতো থাকো বেশি পাকনামো করার প্রয়োজন নেই এখনো অনেক ছোট তুমি, পাশের গ্রামে তোমার সৎ ফুপির বাড়ি রয়েছে আমি তাকে বলে দিয়েছি তুমি তার বাড়িতে চলে যাও, নীলিমা বদিউল আলম এর কর্কশ কণ্ঠে ঘাবড়ে গিয়ে রাফির পিছনে গিয়ে দাঁড়ালো, আর রাফির সার্ট এর হাতায় হালকা ঝাঁকি দিয়ে বলল, রাফি আমি যেতে চাই না আমার ফুপির  কাছে, রাফি নীলিমার দিকে  তাকালো, নীলিমার চোখে পানি ছল ছল করছে, রাফি বলল,মিস্টার বদিউল আলম, আপনার মিস নীলিমার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোন অধিকার নেই কারণ তিনি প্রাপ্তবয়স্ক। বদিউল  আলম বলল... এই মেয়ের বয়স যতই হোক বুদ্ধিশুদ্ধি একদমই নেই, রাতে এবার ধমকে শুরু বললো...চুপ থাকুন! যথেষ্ট হয়েছে এখানে আসার পর থেকে দেখছি আপনারা নিজেদের দায়িত্ব পালন করছেন না এমন কি কেউ যদি দায়িত্ব পালন করতে চায় তাও তাকে করতে দিচ্ছেন না, আর হ্যাঁ আর একটা কথাও বলবেন না আমি নিলিমাকে নিয়ে এখান থেকে চলে যাচ্ছি, বলে রাখি নীলিমার হাত ধরে বদিউল আলমকে ধাক্কা দিয়ে বেরিয়ে গেল। নীলিমাকে একটা বাড়িতে নিয়ে আসে, রাখি বলল  মিস এটা আমার বাড়ি, বাড়ির ভিতর থেকে রেশমা বেরিয়ে এলো, সে বলল,এতক্ষণ লাগে  কই ছিলি তোরা, আমি তোদের জন্য খাবার বানিয়ে সে কখন থেকে বসে আছি তোদের জন্য অপেক্ষা করছে, রাফি নীলিমাকে ভিতরে একটি রুম দেখিয়ে দিল, নীলিমা ঠায় দাঁড়িয়ে আছে সে নড়ছেও না চড়ছেও না কোন কথা বলছেও না রাকি বলল,  কি হয়েছে আপনার...? নীলিমা নিচু স্বরে  বলল আমার হাতটা ছাড়লে ভালো হতো,রাশি বললো,  উফ সরি ম্যাম!নীলিমা কোন কথা না বলে রাফির দেখিয়ে দেওয়া রুমে চলে গেল, কিছুক্ষণ পর..... 
নীলিমা  ফ্রেশ হয়ে আয়নার সামনে বসে চুল আঁচড়াচ্ছে আর ঘরটার চারপাশটা দেখছে, আচমকা ও লক্ষ্য করল দরজার নিচে কারো পা দেখা যাচ্ছে, নীলিমা বলল কে ওখানে? রাফি  বেরিয়ে এসে বলল ম্যাম আপনার জন্য খাবার এনেছিলাম নীলিমা বলল  আমার ক্ষুধা নেই, রাফি বলল খোদা নেই বললেই তো হবে না ম্যাম আপনাকে সুস্থ হতে হবে নিজের লাইফটাকে  গুছিয়ে নিয়ে সামনে অগ্রসর হতে হবে, নীলিমা বলল একটা রিকোয়েস্ট করি, আমি আপনার বাড়িতে থাকতে চাই না,  রাফি ভ্রু কুচকে বলল তাহলে কার বাসায় যাবেন, জানিনা যেদিকে দুচোখটা যাবে সেদিকে চলে যাব। রাফি বলল ম্যাম আমি আপনাকে একটা কথা বলি,  নিলিমা বলল হ্যা বলুন, রাফি খাবারটা টেবিলের  উপরে রেখে বলল, ম্যাম..... 
আমি আপনাকে বিয়ে করতে চাই।
নীলিমা এক ঝটকায় বসা থেকে দাঁড়িয়ে গেল। রাফি বলল কি হলো কোন সমস্যা, উত্তর দিন নীলিমা বলল,আমি দুঃখিত মিস্টার রাফি, আমি আপনাকে বিয়ে করতে পারব না আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি।

Comments