সখি
যদি সখি কথা দাও আসবে আমার বাড়ি;
নিতে এসো, নিতে এসো কল্পনা এক হাঁড়ি।
সঙ্গে দেব গুটি কয়েক কথার মালা।
হাত বাড়ালেই আমাকে পাও– এমন এক থালা।
চোখের দিয়ে দিবো পাতিলের কাজল,
হাতে আগাছা লতার শুকিয়ে যাওয়া চুরি,
কণ্ঠে সদ্য ছেঁড়া বকুল ফুলের হাড়,
মাজায় রাখা জলপাইয়ের কুড়ির বিছা,
ঠোটে রক্ত জবার লাল রঙের আঁকিবুকি,
কপালে টিপ্ ধার করা কলমের ছোট বিন্দু।
যদি সখি আসো কিছু গল্প নিয়ে এসো;
অবসরে শুনবো নাহয় মাথা রেখে তোমার কেশে।
ইনিয়েবিনিয়ে কথার ছলে সময় পারা-পারে,
এজন্মে বাকি রইলো তোমার আশায় বসে।
তুমি এসো আমার জন্যে রঙিন রূপকথা নিয়ে।
আমার স্বপনে এসো, জাগরণে পাশে বস।
হাতে হাত রেখে আয়ু রেখা পড়বে বলো?!
চাদরের নিচে শরীর ঢেকে, মাথা ঈষৎ বাহিরে;
ঝিঝি পোকার ডাক শুনবো এক বারান্দায় বসে।
চুলের গোছায় বানিয়ে দেব ঝিনুক খোঁপা,
দুজনে মিলে গুনবো তারা থোকা-থোকা।
মাটি বেয়ে তুলে আনবো বৃষ্টিভেজা মহুয়া গন্ধ,
মাটির নিচে পুড়ে রাখবো ধনদৌলত ছিল যত।
যদি তুমি কেবলই আমার হও সখি;
তোমার জন্যে প্রত্নতাত্ত্বিকবিদ হবো,
পুরানো সকল সভ্যতা তোমার নামে উৎসর্গ
আনবো তুলে পুরোনো নকশার মাটির বাটি।
আনবো খুঁড়ে এক গহীন নির্জন আধার রাত্রি;
যে রাত আমাদের দুইজনের চারিপাশে কাশ্মীরি শাঁল,
কেউ দেখতে পাচ্ছিনা কিছু কল্পনা করে নেওয়া ছাড়া
তারই মাঝে তোমায় পাবো, সমস্ত জীবন ছন্নছাড়া।
দুকূল ভাঙা অন্ধকারে একুল-ওকুল মিলে তুমি;
আমার পথভুলো তরী দিলাম, তোমার হাতে তুলি।
তোমার জন্যে রাত্রি আনবো, অলীক নিশিদেশ থেকে–
তোমার জন্যে স্বপ্ন আনবো স্বপ্নপুরী গিয়ে।
ব্যাস্ততাতে সময় অনবো চতুর্থ মাত্রা(ফোর্থ ডাইমেনশন)থেকে:
কল্পনাতে দুঃখ অনবো নিয়ত বাস্তবতা নিংড়িয়ে।
ব্যাথা আনবো, রান্নার সরঞ্জাম সাথে–
কচুপাতার শাক আর গরম বাড়া ভাত পাতে।
নদীর ঘাটের ছুটে চলা মাছ– হাতের নিচে বাধে,
অনবো ধরে কৈ খোলসে ইলিশ মাছ সাথে।
তুমি যদি কাঠ পুড়িয়ে মাটির চুলোয় রাঁধো–
আমি নাহয় কাঠই হবো তুমি পোড়ার জন্য।