শিরোনাম: মেঘমালা আর রোদ্দুর
গ্রামের নাম মেঘবাড়ি। সেখানেই বড় হয়েছে মেঘমালা আর রোদ্দুর। মেঘমালা রোদ্দুরের চাচাতো বোন, কিন্তু তাদের সম্পর্ক ছিল শুধু রক্তের বাঁধনে বাঁধা নয়। ছোটবেলা থেকেই তারা ছিল একে অপরের ছায়া।
মেঘমালা যখন গাছের নিচে বসে বই পড়ত, রোদ্দুর ঠিক তার পাশে বসে মাটিতে আঁকিবুকি করত। তাদের হাসি, খুনসুটি আর ছোট ছোট ঝগড়ায় ভরা দিনগুলো ছিল এক স্বপ্নের মতো। কিন্তু সময়ের স্রোতে যখন তারা বড় হলো, তখন মেঘমালা অনুভব করল যে, রোদ্দুরের প্রতি তার অনুভূতি বদলে গেছে।
মেঘমালা সবসময়ই জানত, রোদ্দুর একটু অন্যরকম। সে সহজ-সরল, অথচ গভীর। মেঘমালা যখনই তার দিকে তাকাত, রোদ্দুরের চোখে এক অদ্ভুত মায়া দেখতে পেত। কিন্তু এই অনুভূতিটা তাকে অস্বস্তিতে ফেলত, কারণ সমাজের নিয়ম তাদের জন্য অন্য কিছু বলে।
একদিন গ্রামের স্কুলের মাঠে বসে রোদ্দুর বলল,
"মেঘমালা, তোকে ছাড়া আমার দিন শুরু হয় না।"
মেঘমালা মুচকি হেসে বলল, "তুই আবার কি সব বলছিস? আমরা তো একে অপরের কাজিন!"
কিন্তু রোদ্দুর চুপ করে তার দিকে তাকিয়ে থাকল। সেই দৃষ্টিতে ছিল অজস্র প্রশ্ন।
দিনগুলো এভাবে এগিয়ে যেতে থাকে। রোদ্দুর মেঘমালার সামনে কখনো তার মনের কথা বলে না, কিন্তু তার প্রতিটি কাজে ভালোবাসার ছোঁয়া স্পষ্ট। মেঘমালা মনে মনে স্বীকার করে, সে রোদ্দুরকে ছাড়া তার জীবন কল্পনাও করতে পারে না।
একদিন সন্ধ্যায় বৃষ্টির দিনে মেঘমালা আর রোদ্দুর গ্রামের পুকুরপাড়ে হাঁটছিল। রোদ্দুর হঠাৎ মেঘমালার হাত ধরল।
"আমাদের যা আছে, সেটা ভুল নয়, মেঘমালা। ভালোবাসা কখনোই ভুল হতে পারে না।"
মেঘমালা একটু থমকে দাঁড়ায়। তার হৃদয় আর সমাজের নিয়মের মধ্যে এক অসম লড়াই চলছিল।
কিন্তু ভালোবাসা তো সব বাধা অতিক্রম করে, তাই না?
তারা সিদ্ধান্ত নেয়, যা-ই হোক, নিজেদের পথ নিজেরাই ঠিক করবে। সমাজের কথা ভেবে নয়, বরং নিজেদের মনের কথা শুনে।
শেষ নাকি শুরু?
তাদের ভালোবাসা হয়তো একটা অন্যরকম গল্পের শুরু। যেটা সবাই বুঝবে না, কিন্তু তাদের জন্য সেটা হবে জীবনের সবচেয়ে সুন্দর অধ্যায়।