Posts

উপন্যাস

মেঘমালা এবং রোদ্দুর পর্ব 2

January 16, 2025

Mahi 599

8
View


---


পর্ব ২: মেঘমালা এবং রোদ্দুর

সময় পেরিয়ে গেছে। মেঘমালা আর রোদ্দুর এখন আর ছোট নেই। মেঘমালা ঢাকার এক বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা সাহিত্য নিয়ে পড়ছে। রোদ্দুর গ্রামে থেকেই বাবার ব্যবসার দেখাশোনা করছে। তাদের মধ্যে যোগাযোগ আছে, তবে আগের মতো আর প্রতিদিন দেখা হয় না।

মেঘমালা শহরে গিয়ে এক নতুন জীবন শুরু করেছে। বন্ধুদের সঙ্গে মিশে, নতুন জায়গা চিনে তার দিনগুলো কেটে যায়। তবে রোদ্দুরের কথা প্রায়ই তার মনে পড়ে। রোদ্দুর হয়তো এখনো ভোরবেলা মাঠে যায়, পুকুরের ধারে বসে সময় কাটায়, আর রোদে শুকনো ধান তোলার কাজ করে।

এক সন্ধ্যায় মেঘমালার ফোন বেজে উঠল। স্ক্রিনে ভেসে উঠল রোদ্দুরের নাম।
“কেমন আছিস?” রোদ্দুরের কণ্ঠে এক অদ্ভুত নরম ভাব।
“ভালো আছি। তুই কেমন?” মেঘমালার গলায় যেন খানিকটা সংকোচ।
“আমি ভালো। শোন, কাল গ্রামে একটা অনুষ্ঠান আছে। তোকে আসতেই হবে।”

মেঘমালা ভেবে দেখল। অনেক দিন পর গ্রামের মানুষদের সঙ্গে দেখা হবে। আর রোদ্দুর তো বলেছে, না গেলে সে রাগ করবে।


---

পরদিন সকালে মেঘমালা গ্রামে পৌঁছাল। চারদিকের সেই পুরোনো পরিচিত গন্ধটা তার মন ছুঁয়ে গেল। বাড়ির উঠানে রোদ্দুর দাঁড়িয়ে ছিল, পরনে সাদামাটা পাঞ্জাবি। মেঘমালাকে দেখে তার ঠোঁটের কোণে এক চিলতে হাসি ফুটল।

“তুই এলি, এটা আমার জন্য অনেক বড় ব্যাপার,” রোদ্দুর বলল।
“অনুষ্ঠান কেমন চলছে?” মেঘমালা জিজ্ঞেস করল।
“ভালো। তবে তোকে না দেখলে এতটা ভালো লাগত না,” রোদ্দুর সহজেই স্বীকার করল।

সন্ধ্যার দিকে, পুকুরপাড়ে বসে তারা কথা বলছিল। চারপাশে পূর্ণিমার আলো। রোদ্দুর হঠাৎ করে বলল,
“মেঘমালা, তুই কি কখনো ভেবেছিস, আমাদের সম্পর্কটা অন্যরকম হতে পারে?”

মেঘমালা থমকে গেল। সে জানত, রোদ্দুরের মনের কোণে অনেক দিন ধরে এই কথাটা ঘুরছে।
“রোদ্দুর, আমরা তো কাজিন... আমাদের জন্য সমাজের অন্য কিছু ভাবা কঠিন,” মেঘমালা নিচু গলায় বলল।
“সমাজ সবসময়ই কিছু না কিছু বলবে। কিন্তু আমি জানি, তুই ছাড়া আমার জীবন অসম্পূর্ণ,” রোদ্দুর দৃঢ় কণ্ঠে বলল।

মেঘমালা চুপ করে রইল। তার মন যুদ্ধক্ষেত্র হয়ে উঠল। একদিকে রোদ্দুরের প্রতি তার মায়া, অন্যদিকে সমাজের বাঁধা।


---

পর্ব ২ শেষ

পরের পর্বে তাদের সম্পর্ক আরও গভীরে যাবে। তাদের মনের দ্বন্দ্ব, সমাজের চাপ, আর তাদের নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো ধীরে ধীরে উন্মোচিত হবে।

Comments

    Please login to post comment. Login