### ভুতের গল্প: **"ছায়ার ফিসফাস" (পর্ব ১)**
---
অরূপ এবং তার তিন বন্ধু—রনিত, শুভ এবং দীপা—মিলে এক শীতের রাতে এক অদ্ভুত চ্যালেঞ্জ নেয়। গ্রামের এক প্রান্তে পুরোনো জমিদারবাড়ি, যেটা বহু বছর ধরে পরিত্যক্ত। মানুষ বলে, সেই বাড়িতে রাত কাটাতে গেলে কেউ আর ফিরে আসে না। গ্রামের লোকেরা এটাকে ভূতুড়ে বাড়ি বলে মনে করে। কিন্তু অরূপ আর তার বন্ধুরা এসব ভূতপ্রেতের গল্পকে মোটেই বিশ্বাস করত না।
“ভয় পেয়ে লাভ নেই, এ তো শুধু গাঁয়ের মিথ!”—অরূপ জোর দিয়ে বলে।
“ঠিক আছে, তবে এক রাত কাটিয়েই দেখি।” রনিত হাসতে হাসতে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে।
সন্ধ্যার পর গ্রামের লোকেদের সতর্কতা উপেক্ষা করেই তারা সেই জমিদারবাড়িতে পৌঁছে যায়। বাড়িটা যেন মৃত্যুর মতো চুপচাপ। চারদিকে জঙ্গল, আর দেয়াল জুড়ে কালচে শ্যাওলা। দরজাগুলো কাঠের, ছেঁড়া পর্দা জানালায় ঝুলছে। দীপা একটু ভয় পেয়ে বলল,
“আমার মনে হয় আমরা অন্য কিছু করতে পারতাম।”
“আরেহ, এত ভয় পাচ্ছো কেন? কিছু হবে না।” শুভ তাকে আশ্বস্ত করল।
বাড়ির ভেতরটা আরও ভয়ংকর। আসবাবপত্রে ধুলোর স্তূপ জমে আছে, মাকড়সার জাল ছড়ানো, আর বাতাস ভারী, যেন অনেক কিছু লুকিয়ে আছে। বন্ধুরা একটা বড়ো ঘরে জড়ো হয়ে বসলো। অরূপ একটা লন্ঠন জ্বালিয়ে বলল,
“চলো গল্প করি। সকাল হলে ফিরবো। কোনো সমস্যা হবে না।”
রাত বারোটা পেরোতেই হঠাৎ করেই একটা ঠান্ডা বাতাস ঘরটায় ঢুকল। লন্ঠনের আলো দুলে উঠলো। দূরের করিডোর থেকে কেমন একটা খসখস আওয়াজ ভেসে এলো। শুভ জিজ্ঞেস করল,
“কেউ কি কিছু শুনলে?”
“ওটা হাওয়া। ভয় পেয়ো না,”—অরূপ দ্রুত উত্তর দিল।
কিন্তু আওয়াজটা থামলো না। করিডোরের দিকে তাকিয়ে দীপা ফিসফিস করে বলল,
“ওই দেওয়ালে দেখ, কিছু যেন নড়ছে!”
তারা দেখলো করিডোরের দেওয়ালে একটা ছায়া, যেটা ধীরে ধীরে আকার বদলাচ্ছে। সবাই আতঙ্কে চুপ হয়ে গেল। শুভ কিছু বলার আগেই ছায়াটা যেন করিডোরের ভিতর মিশে গেল।
“আমরা কি বাইরে যাই?” দীপা কাঁপা গলায় বলল।
“না। এসব কিছুই কাকতালীয়। তুমি ভয় পাচ্ছো বলে মনে হচ্ছে এগুলো।” অরূপ দৃঢ়ভাবে বলল।
কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই ছাদের উপরে ভারী পায়ের আওয়াজ শুরু হলো। যেন কেউ ছাদ থেকে নেমে আসছে। বন্ধুরা বুঝতে পারল, এ জায়গাটা সত্যিই অস্বাভাবিক।
---
**পর্ব ১ শেষ।**
**পরবর্তী পর্বে: বন্ধুরা কি বাড়ি থেকে পালানোর চেষ্টা করবে? নাকি ঘটবে আরও ভয়ঙ্কর কিছু?**