Posts

উপন্যাস

ঐশ্বর্য পর্ব ৭

January 21, 2025

Md Kawsar

Original Author নূর-এ-কাউছার

Translated by পর্ব ৭

38
View

ঐশ্বর্য 
পর্ব ৭-পার্ট১
নূর -এ- কাউসার
.
আজ ক্লাসে শুধু হুমাইরা এসেছে কিন্তু ওর মোনটা খারাপ করে বসে আছে তাই ঐশ্বর্য জিজ্ঞেস করলো কিরে হিমু তোর কি হয়েছে কথা বলে না তাই ঐশ্বর্য বলল আমাকেউ বলবি না? হুমাইরা বলল কাইল রাইত থিকা আমগো আব্বাই বাসায় আহে নাই তারে সারা গেরাম খুজা অইছে। ঐশ্বর্য চমকে যায় ভাবতে থাকে এক রাতে আর কতো কি ঘটতে পারে ঐশ্বর্য বলল হিমু কি হয়েছে খুলে বলবি? তরে গতকাইল কইলাম না আব্বাই কালি ঘাডে ভুত দেখছে তাই আব্বার জ্বর উঠছিলো ৪ দিন বিছানায় সুইয়া আছিলো উঠবার পারে নাই কাইল স্কুল থিকা বাসায় জাইয়া হুনি আব্বায় নাকি হটাত কাউরে কিছু না কইয়া বাইরাইয়া গেছে সারা রাইত আম্মায় ঘুমায় নাই এর আগেউ আব্বায় রাইতে বাড়িতে আহে নাই কিন্তু আম্মারে কয়া গেছে কাইল কইয়াও জায় নাই তার মধ্যে জ্বরের শরীর ডা লইয়া বাইর হইছে এহনো কুনো হোদিশ নাই। বলেই কান্না শুরু করে দিলো হুমাইরা ঐশ্বর্য মাথাই হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল ভয় পাস না সব ঠিক হয়ে যাবে। ঐশ্বর্য এবার বুঝতে পারলো হুমাইরার বাবার নিখোঁজ হবার পিছনে কালি ঘাটের কিছুতো কানেকশন আছে। কল্পনার জগত থেকে বের হয়ে ঐশ্বর্য বলল, তোর বাবাকে ফিরিয়ে আনতে চাস? হুমাইরা বলল, কেমনে 
ঐশ্বর্য : আগে বল আমি যা বলবো তাই করবি। 
হুমাইরা : ঠিক আছে কিন্তু আগে ক কি করতে হইবো?
ঐশ্বর্য : তোকে একটা চিঠি দিবো এটা একজন কে দিয়ে আসবি
হুমাইরা : কারে? 
ঐশ্বর্য : আগে বল অন্য কাউকে বুঝতে দিবি না ঐটা আমার লেখা? যাকে দিবো শুধু সেই যেনো জানে। 
হুমাইরা : আইচ্ছা ক কারে দিতে হইবো?
ঐশ্বর্য চিম ঠিটা লিখে বলল বাসায় জাউয়ার আগে থানায় জাবি নতুন এস.পি এসেছে তাকে এইটা দিবি আর আমি বাসায় গিয়ে দাদুকে পাঠাচ্ছি তার পর হুমাইরা অবাক হয়ে বলল তুই কি তারে চিনস ঐশ্বর্য বলল চিনি না কিন্তু উনি কালি ঘাটের বিষয়ে খুব সিরিয়াস এই কালকে ২ টা লাশ নদীতে ফেলার মামলাটাও উনিই সামলাচ্ছে। হুমাইরা সবি বুঝতে পারে বলল এইসব করলে কি আব্বাই আইয়া পরবো। এবার ঐশ্বর্য বলল এখনো তো আসল কাজ বাকি আছে তোকে সন্ধ্যা সময় আমার সাথে দেখা করতে হবে। হুমাইরা বলল আইচ্ছা আমি তর বাসায় জামুনে। আইচ্ছা আব্বাই কি তর বাসায় আইবো? ঐশ্বর্য বিরক্তিকর শব্দ মুখ দিয়ে বের করে বলল আহ তকে বলছি দেখা করতে আমি কখন বললাম তোর বাবা আমাদের বাসায় আসবে। হুমাইরা আবার কাদো কাদো কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো,  তাইলে কেমনে কি আমারে একটু খুইল্লা ক। ঐশ্বর্য হুমাইরার হাত ধোরে বলল শোন বাবাকে ভালোবাসিস? হুমাইরা বলল অনেক, ঐশ্বর্য বলল বাবার জন্য যোদি মরতে হয় পারবি? হুমাইরা ভয় পেয়ে গেলো। ঐশ্বর্য চোখ বন্ধ করে বলল যতোটা বলছি ততটার উত্তর দে বাহিরে কিছুই বলবি না। হুমাইরা বলল আমি পারমু আব্বার জন্য মরতে। ঐশ্বর্য বলল হুম এটাই শুনতে চাইতাছিলাম এই সব আর কোনো দিন বলিস না পাপ হবে আমি শুধু পরিক্ষা করছিলাম তোকে আমি যেটা করতে চাইছি ওইটার জন্য তুই প্রস্তুত কিনা! হুমাইরা কিছুই বুঝতে পারলো না। ঐশ্বর্য বলল তুই কিছুই বুঝলি নাতো বুঝতে হবে না শোন তোর মরতে হবে না তুই আজকে সন্ধ্যা সময় আমার সাথে কালি ঘাটে জাবি। এটা বলতেই হুমাইরা আতকে উঠলো বলল কি সব কইতাছছ আমি অইনে জাইবার পাইতাম না আমি হুনছি অইনে আদমখুর ভুত থাহে। ঐশ্বর্য বলল বাবার জন্য মরতে পারবি কালি ঘাটে জেতে পারবি না? হুমাইরা চুপ হয়ে গেলো। দুই জনের মধ্যেই নিরবতা বিরাজ করছে, নিরবতা ভেঙে হুমাইরা বলল কালি ঘাটের সাথে আব্বার নিখোঁজ হউয়ার কি সম্পর্ক। ঐশ্বর্যের মাথার বুদ্ধি ছোটো থেকেই অনেক ভালো ছিলো কারণ ছোটো বেলাই ওর ইচ্ছে ছিলো পুলিশ হওয়ার একসময় তার এই ইচ্ছেটা আর থাকে না কিন্তু ছোটো থেকেই পুলিশ দের গল্প শুন শুনতে শুনতে তার মাথাই পুলিশ দের চাল চলন পুলিশ দের মতো মাথা খাটানোর সভাব গুলো রয়ে যায়। ঐশ্বর্য বলল শোন তাহলে আজ পর্জন্ত জারা দাবি করেছে কালি ঘাটে ভুত দেখেছে হয়তো তারা পাগল হয়ে কালি ঘাটের আশে পাশে ঘুরে নইতো কিছু দিন পর তাদের লাশ খুব বাযে ভাবে কালি ঘাটের পাশে ভাসতে দেখা যায়। হুমাইরা কিছু না ভেবেই কেদে দিলো তার পর বলল শোন আমি তোকে যা যা বললাম তাই তাই কর এই কাগজেউ তাই লেখা তুই শুধু এইটা উনাকে দিবি সন্ধ্যা সময় এসে পরবি আমাদের বাসায় আমি ততখনে আম্মাকে রাজি করবো আমাদের সাথে যাওয়ার জন্য।  হুমাইরা বলল তর মা রাজি অইবো? ঐশ্বর্য বলল রাজি না হয়লে তুই একা জাবি। হুমাইরা চোখ বড় বড় করে দিলো। ঐশ্বর্য বলল আরে ভয় পাস না তুই আমি কিছু একটা বলে আম্মাকে রাজি করিয়ে নিবো তুই আগে এই কাজটা কর।
,সাল ১৯৯১ সাহিনা এবার খেয়াল করে মেয়েটির চোখ বেয়ে আবার পানি পরছে একটি উন্মাদ যেভাবে একবার হাসে একবার কাদে আরেক বার ভয়ে চুপ হয়ে যায় ঐশ্বর্য তেমন হয়ে গেছে ঐশ্বর্য বলল আমাকে একটু ঘুমতে দেন আমি ৩ দিন ধরে চোখের পলক ফেলতে পারি নি। সাহিনা বলল এভাবে বলছো কেনো আমিতো তোমার মায়ের মতোই। ঐশ্বর্য আবার জোরে জোরে হাসতে থাকে আর বলতে থাকে পৃথিবীতে শান্তি একটাই জাকে মা বলে ডাকতে পেরে আমি ধন্য। সাহিনা বলল তুমি ঘুমাও আমি বাহিরটা দেখে আসি। এটা বলে চলে গেলো সাহিনা। নজরুল গ্রামে পৌছে গেছে গ্রামের রাস্তাই দুএকজন কে গ্রামের বাজারের কথা জিজ্ঞেস করাই রাস্তা দেখিয়ে দেয় কিন্তু কালি ঘাটের কথা বললেই সবাই চোখ বড় করে দিয়ে কোনো কথা না বলে চলে যায়। তার পর একটি লোককে জিজ্ঞেস করলো নজরুল যে কালি ঘাটের রাস্তা টা কোন দিকে সেই লোকটি ভয় না পেয়ে আঙুল বারিয়ে দিয়ে দেখিয়ে দেয় নজরুল অবাক হলেন আবার খুশি ও হলেন। এর পর বলল আপনি বাকি সকলের মতো ভয় পেইলেন না যে? লোকটি উত্তর দিলো ভয় পাউয়ার কি আছে মরবো আরেক জন আমি কেন ভয় পামু! নজরুল এবার ভয় পেয়ে গেলো বলল এমন ডা কইলেন যে? লোকটি বলল তা কিছুই না আপনেরা কালি ঘাডে কি করবেন অইনে মানুষ মরে। নজরুল জিজ্ঞেস করলো আপনি কি জানেন কালি ঘাডের বিষয়ে? লোকটি উত্তর দিলো, আমি কিছুই জানি না আমি গেরামে নতুন কালি ঘাডে জাউয়া নিষেধ আছিলো এত দিন এহন জাউন যায় কিন্তু সময় পাই না তাই যাই না! কিন্তু অইনে না জাউয়াডাই ভালা। আর হুনেন আপনি যুদি কিছু জানবার চান কালি ঘডের বিষয়ে তাইলে লতিফ কাকার কাছে জান কালি ঘডের বিষয়ে আইজ পর্জন্ত ঘডা সব ঘটনা জানে উনি। নজরুল জিজ্ঞেস করলো,  কই থাহে লতিফ মিয়া যার বিষয় জানতে আইছেন তার কাছে জান পাইয়া জাইবেন। নজরুল বুঝতে পারলো তাকে কালি ঘাটের পারেই পাউয়া যাবে তাই সে  আর কথা না বারিয়ে এগতে লাগলো লতিফ মিয়াকে অনেক খুজে তার পর বের করলো। নজরুল বলল কি লতিফ চাছা ভালো আছেন? লতিফ বলল কিছু খাইতে দে আমার খিদা লাগছে। নজরুল  তার সাথে আনা রুটি আর তরকারি বের করে দেয় লতিফ মিয়াকে। লতিফ খুদার্ত রাক্ষসের মতো খেতে থাকে আর বলতে থাকে তোদের মতো মানুষ এই গেরামে আর নাইরে তোরা খুব ভালা মানুষ। নজরুল হেসে দিয়ে বলল আইচ্ছা কাকা তুমি কি আমারে এই কালি ঘাডের বিষয়ে কিছু কইতে পারবা? লতিফ খাবার বন্ধ করে দিয়ে হাত ধুয়ে চলে জেতে নেই তখনি নজরুল বলে 200 টেহা দিমু ঘাডের বষয়ে সব খুইলা কইলে। লতিফ মিয়া পাগল টাইপের ছিলেন ঠিক মতো খাউয়া হতো না তবুও বললেন, দেহ এই ঘাডের বিষয়ে জানতে চাইও না এই ঘাডে আদমখুর থাহে। এটা বলতেই নজরুল রেগে গেলো, কি আদমখুর আদমখুর লাগাইছেন আপনারা আমার তো সবি ভুয়া মনে হয়তাছে। লতিফ ভয়ানক রাক্ষস এর মতো হাসি দেয় তার পর বলল, আই আমার সাথে। তারা রওনা হলো লতিফ মিয়া সবার আগে একটি লাঠিতে ভর করে এগচ্ছে তার গায়ে খয়েরি রঙের চাদর এবং পিছনে পিছনে সবাই আসছে লতিফ সামনে একাই হাটছে এবং বলছে, ঘাড দেখতে আইছে ঘাড আজকে সব কইটারে ঘাড দেহামু কিছুটা পথ জাউয়ার পর লতিফ মিয়া দারিয়ে পরলেন বলল, আমি এর আগে জাইতে পারতাম না তরা জাইতে পারলে যা। নজরুল দেখতে পেলো একটি পরিত্যক্ত স্থান সব কয়টা গাছ মরে গেছে একটি গাছের গায়েউ পাতা নেয় সব ঝরে গেছে বিকেল গরিয়ে সন্ধ্যা হচ্ছে  নদীর উপর এখনো কুয়াশা আছে ঘাট থেকে নদীর উপর পর্যন্ত একটি কাঠের মাচা বানানো মনে হয় মাচাটি অনেক পুরাতন হলেউ আজও কেউ ঐটা যত্ন করে পরিস্কার করে রাখে। মাচার পাশেই একটি বিশাল বড় বট গাছ শুধু মাত্র ঐ একটি দানব আকৃতির বট গাছেই আছে জীবন। দেখেই মনে হচ্ছে এর নিচে না জানি কতো রহস্যময়ি বিষয় লুকিয়ে আছে ঘাটের চারি দিকে কাটা তার দিয়ে আটকানো ঘাটে ঢুকার মূল রাস্তায় ছিলো একটি পুরাতন বিশাল আকৃতির কাঠ দিয়ে তৈরি গেইট উপরে স্পষ্ট লেখা বড় করে কালি ঘাট। নজরুল একটু জোরেই বলল এই জায়গার নাম শুনে ভয় পেয়েছিলাম আজ দেখে আরো ভয় করছে আমি ভয়ানক ভেবেছিলাম এতো টা ভয়ানক ভাবি নি।

সকলেই ভয়ার্ত দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে ঘাটের দিকে। 

.

.

ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ। 

পর্ব ৮ জলদি আসবে

Comments

    Please login to post comment. Login