শেয়াল আর হাসি
এক ছিল শেয়াল, নাম ছিল মিঠু। মিঠু ছিল গ্রামের সবচেয়ে চালাক শেয়াল। তবে তার বড় সমস্যা ছিল, সে খুবই লোভী। সে সবসময় কোনো না কোনো ফন্দি আঁটত, কিভাবে অন্যের খাবার নিজের পেটে চালান করা যায়।
একদিন মিঠু শেয়াল গাছে বসে ছিল। তার চোখ পড়ল একটি হাসির উপর, যে নদীর ধারে ঘাস খাচ্ছিল। মিঠুর মুখে পানি এসে গেল। সে ভাবল, “এই মোটা হাসিটাকে পেলে আজকের দিনটা ভালো যাবে। কিন্তু কিভাবে একে ধরা যায়?”
মিঠু শেয়াল ধীরে ধীরে হাসির কাছে গিয়ে বলল, “ওহে হাসি ভাই, তুমি তো খুব সুন্দর আর মোটা। তোমার মতো হাসি আমি আগে কখনো দেখিনি।”
হাসি মাথা তুলে বলল, “তুমি কে? আর আমার প্রশংসা কেন করছ?”
মিঠু বলল, “আমি মিঠু শেয়াল। আমি এক বড় রাজা। আমার রাজ্যে তোমার মতো মোটা হাসির খুব প্রয়োজন। রাজা তোমাকে খাওয়াবে এবং তোমার যত্ন নেবে।”
হাসি একটু সন্দেহ নিয়ে বলল, “তুমি কি সত্যি রাজা?”
মিঠু বলল, “অবশ্যই! আমি রাজাদের মতো কথা বলছি না? আমার কথা বিশ্বাস করো। তোমাকে নিয়ে রাজা খুব খুশি হবে।”
হাসি একটু ভেবে বলল, “ঠিক আছে, আমি তোমার সঙ্গে যাব। তবে রাজা আমার জন্য কী করবে?”
মিঠু বলল, “রাজা তোমার জন্য সব কিছু করবে। শুধু তোমাকে রাজ্যে যেতে হবে।”
হাসি রাজি হয়ে মিঠুর সঙ্গে হাঁটতে শুরু করল। মিঠু তার বুদ্ধি আর চতুরতা দিয়ে হাসিকে ফাঁদে ফেলতে চাইছিল। সে ভেবেছিল, রাজ্যে নিয়ে গেলে রাজা তাকে পুরস্কৃত করবে, আর হাসিটা সে নিজেই খেয়ে ফেলবে।
যখন তারা রাজ্যের দরজার কাছে পৌঁছাল, তখন হাসি বুঝতে পারল, মিঠু আসলে রাজা নয়। সে মিঠুর চালাকি ধরে ফেলল। হাসি তৎক্ষণাৎ চিৎকার করে বলল, “সবাই শুনে রাখো, এই মিঠু শেয়াল একজন মিথ্যাবাদী! সে নিজেকে রাজা বলছে, কিন্তু আসলে সে একজন ধুরন্ধর চোর!”
রাজ্যের অন্যান্য প্রাণীরা তখন দৌড়ে এসে হাসির কথা শুনল এবং মিঠুর মিথ্যে ফাঁস হয়ে গেল। সবাই মিলে মিঠুকে ধাওয়া করল। মিঠু দৌড়ে পালাতে বাধ্য হলো। হাসি আনন্দে বলল, “দেখলে মিঠু, মিথ্যে বলার ফল ভালো হয় না!”
মিঠু লজ্জিত হয়ে বলল, “হ্যাঁ, আমি ভুল করেছি। আমি আর কখনো মিথ্যে বলব না।”
সেই দিন থেকে মিঠু আর কোনো দিন মিথ্যে বলল না, আর হাসি সুখে-শান্তিতে জীবন কাটাতে থাকল।
গল্পের শিক্ষা: মিথ্যে বললে কখনো ভালো ফল আসে না। সততা ও সত্য কথাই সর্বদা জয়ী হয়।
শেষ।
এই গল্পটি কেমন লাগল? আরেকটি মজার গল্পের প্রয়োজন হলে বলুন।