ঐশ্বর্য
পর্ব ৯
.
নূর -এ- কাউসার
.
নজরুল আবার গাড়িটা চালু করলো আর সবাইকে গাড়ি তে বসতে বলে তখনি, কেউ তার হাত টেনে ধরলো নজরুল দেখতে পেলো এটি লতিফ মিয়া তাই সে বলল ওহ কাকা ভুইল্লা গেছিলাম ঐ কাকারে কিছু টাকা দিয়া দে। লতিফ সাথে সাথে তার কর্লার টেনে ধরলো আর ফিসফিস করে বলতে লাগলো লাগবো না তোর টেহা যাহ গেরাম ছার যাহ এহনি যাহ বাছবার চাইলে আর কুনু দিন এই গেরামে পাউ রাহিছ না যাহ যা যা বের হ। নজরুল ব্রু কুচকে শুধু সব দেখছে লতিফ যেতে যেতে একাই কথা বলতে থাকলো আমার কথাতে বিশ্বাস না হয়েলে আজকের রাইতে কালি ঘাডে আহিছ সব পরিষ্কার হয়া যাইবো নজরুল একটি ঘোরের মাঝে হারিয়ে যাচ্ছে, হুস আসলো তার লোক দের ডাকে সবাই ভয়ার্ত চেহারা নিয়ে বলছে ভাই থাহার কুনু দরকার নাই চলো আমরা যাইগা নজরুল গাড়ি চালু করে নিজেই চালাতে লাগলো, লতিফের শেষ কথা গুলো তার মাথাই ঘুর পাক খাচ্ছে। এই দিকে সাহিনা তার ছেলের লোক দেরকে তারা হুরো করে পাঠাছে যেনো তার ছেলে কে কোনো রাক্ষসের মুখে ছাড়া হয়েছে সে বলতে লাগলো কে কোথাই আছো গড়ি নিয়ে বের হউ আমার ছেলেকে ঐ গ্রাম থেকে নিয়ে আসো। সাহিনা পাগলের মতো হয়ে গেলো। ঐশ্বর্য দেয়ালে হেলান দিয়ে বসে আছে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে চুল গুলো এলোমেলো এই অবস্থাতেই বলল ভয় পাচ্ছেন! কালি ঘাট এখন পাপ মুক্ত ওখানে যোদি কিছু থাকে তাহলে তা গ্রামের মানুষের আতংক আর ভয়ের ছাপ। সাহিনা বলল আচ্ছা তুমি তো বিবাহিত তুমার সামি সন্তান তুমার মা বাবা আর ভাই এখন কোথাই। ঐশ্বর্য কথা গুলো শুনে আবার কান্না শুরু করে দেয়। সাহিনা বুঝতে পারে মেয়েটার মনে ভিশন বড় একটা চাপা কষ্ট বইছে। সাহিনা জিজ্ঞেস করলো আচ্ছা তুমি তো সবটা বললেই না কি হয়েছে তুমার সাথে যার কারনে তুমার জীবনে কাল নেমে আসলো? আর তুমি তো বলেছিলে তুমি রহমান বাড়ির মেঝো মেয়ে তুমার বড় যে ছিলেন সে কি তুমার ভাই না বোন ? ঐশ্বর্য ধির্ঘ শ্বাস ছেড়ে বলল সে আমার বড় বোন উর্মি, ধিরে ধিরে সব বলবো আপনাকে সব বলার ইচ্ছে মনে। ঐশ্বর্য এবার সোজা হয়ে বসলো সাহিনা এসে তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো আর চুল গুলো ঠিক করে দিতে লাগলো। ঐশ্বর্য বলল জানেন আমার মা খুব সাহসী ও রাগি ছিলেন আমাদের খুব ভালোবাসতেন বিশেষ করে আমার জন্য পাগল ছিলেন সে কোনো দিন আমাকে কষ্টে দেখতে পেতো না। (ফ্লেসব্যক ১৯৮৭) ঐশ্বর্য মিট মিট করে তাকাচ্ছে চোখে তিবৃ আলো অনুভব হলো তার সারা শরীর কাপছে তার মুখে কিছু একটা লাগানো শ্বাস কষ্ট হচ্ছে তার বেড এর আসে পাসে কিছু সাদা পোশাক পরা মানুষ ছুটোছুটি করছে ঝাপসা চোখে সে খেয়াল করলো কেউ তার হাতে ধারালো সুচের মতো কিছু গেথে দিলো কিছু খনের মধ্যেই সে আবার অচেতন হয়ে যায়। এক সময় তার ঘুম ভাঙে কারোর হাতের স্পর্শ অনুভব করে, সে ধিরে ধিরে তাকায় তার পর সে বুঝতে পারলো এটা রহমান বাড়ি না এটা হাস্পাতাল। সে দেখতে পেলো তার মাথায় রবি হাত বুলাচ্ছে ঐশ্বর্যর কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে তবুও বাবা বলে ডাকার চেষ্টা। রবি তাকে থামিয়ে দিয়ে বলল কথা বলো না মা এখন দাক্তার কথা বলতে নিষেধ করেছেন। সে আরো বলল কি দরকার ছিলো মা ঐখানে জাউয়ার জীবনের ৬ টা দিন হারিয়েছো তুমি। ঐশ্বর্য কথা গুলো শুনে অবাক হলো কিছু বলতে চাইলে রবি বারন করলো বলল আরাম করো এখন কোনো কথা নেই। ঐশ্বর্য তার দাদুর কথা জিজ্ঞেস করতে চাইছিল হুমাইরার কথা জিজ্ঞেস করতে চাইছিল কিন্তু তার বাবা তাকে কিছুই কথা বলতে দিলো না। রবি উঠে চলে যেতে লাগলো আর বলে গেলো আমি দেখি আজকের মধ্যে ছুটি নেউয়া যায় কি না নওয়াজ ভিতরে এসে বসো। ঐশ্বর্য নামটা চিনতে পারে, নওয়াজ ভেতরে আসে নওয়াজ সব সময় একটা ফতুয়া আর পায়জামা পরে আর এক জোরা সেন্ডেল। ঐশ্বর্য বুঝতে পারলো না তার বাবা কেনো একে ভিতরে এসে বসতে বলল কিন্তু সে মনে মনে বলল তা যাই হোক এর সাথে কথা বলে ঐদিন রাতের সব জানতে হবে নওয়াজ ভিতরে এসে মাথা নিচু করে দারিয়ে আছে। ঐশ্বর্য বলল শোনেন নওয়াজ কান খারা করে দিলো। আর বলল জি বলেন।
ঐশ্বর্য বলল আপনিও তো ঐদিন রাতে ঘাটেই ছিলেন একটু বলেন না দাদু আর হুমাইরা.. এত টুকু বলতেই নওয়াজ বলল কি করে যে বলি শোনেন আমি যা বলি সরা সরি বলি কিছু মনে নিবেন না। আপনার দাদু আর বেচে নেই উনাকে হত্যা করা হয়েছে। এতটুকু বলতেই ঐশ্বর্য চোখ বন্ধ করে নিলো দুই ফোটা জল গরিয়ে এলো চোখের কোনে। নওয়াজ আরো বলল ঐ দিন রাতে আমরা আপনাকে অচেতন অবস্থায় পরে থাকতে দেখি আপনার মা আপনাকে ঐ অবস্থায় দেখে প্রায় পাগলের মতো হয়ে গিয়েছিলেন সাথে সাথে গ্রামের মানুষ এসে হাজির হয় লাশ গুলো বের করা হয় এবং আপনার বান্ধুবি কে আমরা অনেক খুজি কিন্তু পাই না পরের দিন সকালে তার লাশ নদীতে। এতটুকু বলতেই ঐশ্বর্য চোখ বন্ধ করে নিলো আর বলল আম্মা কোথায় আছেন? নওয়াজ চুপ করে রইলো ঐশ্বর্য বলল কি হলো বলেন আম্মা ঠিক আছে তো? বলেন ঐশ্বর্য এবার কান্না করে দেয় আর কান্না আটকে রাখতে পারলো না। আর বলতে লাগলো শোনেন না দয়া করে বলেন আম্মা কোথায় আমার ভয় হচ্ছে। নওয়াজ বলল আপনার মা যেখানেই আছে ভালো আছে তার কিছুই হয় নি। আরো বলল, আপনাকে কথা বলতে বারন করা হয়েছে আর আমার সাথে কথা বলছেন আপনার বাবা দেখলে রেগে যাবে বলে চলে গেলো নওয়াজ। ঐশ্বর্য কিছুতেই স্থির হতে পারছে না। একটু পর ইউসুফ এসে ঢুকলো রুমে বলল খালা আইছে খালা তুমারে সাহায্য করবো রেডি হয়তে আমরা গেরামে জামু। ঐশ্বর্য জিজ্ঞেস করলো ইউসুফ আম্মা কোথায় রে? ইউসুফ বলল আম্মায় তো এতো টুকু বলতেই রেহানা এসে হাজির। রেহানা বলল কিরে ঐশ্বর্য কেমন আছিস এহন শরীর ডা কেমন আছে?ঐশ্বর্য উত্তর দিলো খালা ভালো আছি তুমি কেমন আছো? ঐশ্বর্য তার খালার সামনে আর কথা বারালো না কারণ তার খালা একটু মানুসিক ভাবে অসুস্থ। আমি ভালা আছি দেখ তোর বাপেরে কইলাম আর একটা দিন হাস্পাতালে তরে রাখতে, কই যে কাইলকা ঈদের একটা দিন এই দিন আর মেয়েডারে হাস্পাতালে থাকতে হইবো না। ঐশ্বর্য ঈদের কথা ভুলেই গিয়েছিল। এতো কিছু ঘটে গেলো তার সব কিছু কেমন ঘোর মনে হচ্ছে মায়ের কথা খুব মনে পরছে তার মধ্যে সে জানতে পারলো সে ৬ দিন কোমায় ছিলো। ঐশ্বর্য প্রস্তুত হলো থ্রি পিছ পরে নিলো উপরে হিজাব পরে নিলো। রবি হুইলচেয়ার নিয়ে এলো ঐশ্বর্য ধিরে ধিরে তার বাবার হাত ধরে বসে পরলো। তার পর নওয়াজ এসে হুইলচেয়ার ধরে এগতে লাগলো। রবি হটাত বলে উঠলো কিরে ঐশ্বর্য মন মরা হয়ে আছিস যে। ঐশ্বর্য বলল বাবা আম্মা কোথায় রবি সহজ ভাবে উত্তর দিলো তোর আম্মা তার বাবার বাড়ি গেছে। ঐশ্বর্য কিছুতেই এটা বিশ্বাস করলো না। হাস্পাতালের বাইরে এসে দারালো তারা গাড়ি করে স্টেশন এ যাবে ট্রেনের টিকিট কাটছে রহিম। তখনি সেখানে আকাশ তার সরকারি জিপ নিয়ে হাজির। ঐশ্বর্যর চোখ আকাশ কে দেখে কপালে উঠে গেছে। কারণ সে দিন রাতে তো ঐ ঘাটে আকাশ ও ছিল তাহলে ও কি করে বেচে গেলো?
রবি গিয়ে আকাশের সাথে কিছু একটা কথা বলে তার পর তারা আবার চলে আসে। এই ফাকে ঐশ্বর্য নওয়াজ কে জিজ্ঞেস করলো আচ্ছা উনিও তো ঐ রাতে কালি ঘাটেই ছিলেন উনি বাচলো কি করে? নওয়াজ বলল উনি ছিলেন না ঘাটে উনাকে আগুন যেখানে ধরেছে তার বা পাশে অচেতন অবস্থায় পাউয়া যায়। ঐশ্বর্য বিষয় টা সহজ ভাবে নিলো না। আকাশ আর তার বাবা কথা শেষ করে আবার এদিকে আসলেন। আকাশ বলল গ্রামে যাচ্ছেন চলেন আমার গাড়িতে করে পৌঁছে দেই রবি মানা করে দিলেন বললেন আমাদের টিকিট কাটা হয়ে গেছে। ঐশ্বর্য খেয়াল করলো আকাশ তার দিকে বার বার আর চোখে তাকাচ্ছে। তার পর আকাশ চলে যাই তারা একটা গাড়ি ভারা করে ঐ দিন শহরেও গাড়ি পাউয়া খুব কঠিন হয়ে উঠেছিলো কারন দিনটি ছিলো ঈদের আগের দিন। তারা স্টেশন এ পৌছায়। রহিম বলল রবি কাকা অনেক ভির ছিডের টিকিট পাই নাই তাই কেবিনের টিকেট নিছি। রবি বলল ভালোই করছছ মেয়েটা ভিরের মধ্যে বসতে পারবো না। ঐশ্বর্য খেয়াল করলো রহিমের মুখের হাসিটা মরে গেছে আগে যেকোনো কথায় দাত বের করে হেসে দিতো আর এখন প্রোয়জনের বাইরে কোনো কথাই বলছে না, হয়তো দাদু মারা জাওয়াতে খুব বড় ধাক্কা খেয়েছে। ঐশ্বর্য সব কিছুর জন্য নিজেকে দোষারোপ করছে ভাবছে হয়তো ঐদিন সব কিছু ওর বারাবারির কারনেই হয়েছে কেনো যে একটা মানুষ কে বাচানোর চেষ্টায় এতো গুলো মানুষের প্রান গেলো তারা কেভিনে এসে বসে রবি ঐশ্বর্য কে ধরে ধরে তুল্ল ট্রেনে তার পর তার খালা আর বাবা দুইজন মিলে ধরে ধরে কেভিনে বসালো তাকে একদিকে ঐশ্বর্য, ইউসুফ আর রেহানা বসলো অন্য পাসে রবি, রহিম আর নওয়াজ বসলো প্রথমে রহিম ঐশ্বর্যর সামনে বসলেও পরে নওয়াজ কে বলে ভাই নওয়াজ আমি জানালার কিনারে বইতে পারি না তুমি এইদিকে বও, তার পর নওয়াজ ঐশ্বর্যর ঠিক সামনে বসলো। ট্রেন ছেরে দিলো ঐশ্বর্য জনালা দিয়ে এক ধেনে বাহিরে তাকিয়ে আছে। ট্রেন ঢাকা থেকে ময়মনসিংহে যেতে ৩ ঘন্টা লাগবে তাই সবাই একটা ঘুম দেয় কারন রাতে ঐশ্বর্যর হোস ফিরে আসে তার ডাক্তাররা তাকে ইংডেক্সন দিয়ে ঘুম পারিয়ে দেয় সারা রাত সবাই জেগে ছিলো তাই এখন ঘুমাতেই হলো। শুধু জেগে আছে নওয়াজ আর ঐশ্বর্য।
ঐশ্বর্যের বুক ফেটে কান্না আসছে সে সব কিছুর জন্য নিজেকে দোষারোপ করছে তার হুমাইরার কথা ভেবে খুব খারাপ লাগছে মেয়েটার সবে মাত্র জীবনের আসল আনন্দের পার্ট গুলো শুরু হয়েছিলো তাছাড়া পুরো কদম পারায় একমাত্র সখি ছিলো হুমাইরা যার সাথে সে তার সুখ দুঃখের সকল কথা ভাগা ভাগি করতো। নওয়াজ জিজ্ঞেস করলো পানি খাবেন ঐশ্বর্য হকচকিয়ে গেল আর বলল হে. জি না লাগবে না আপনি ঘুমান নি?
নওয়াজ : না আমি ঘুমিয়ে পরলে আপনাকে দেখবে কে?
ঐশ্বর্য : জি কি বললেন?
নওয়াজ : না মানে আমি ঘুমিয়ে পরলে আপনার যদি কিছু দরকার হয় কাকে বলবেন তাই জেগে আছি।
ঐশ্বর্য : আচ্ছা আপনি সব সময় মাথা নিচু করে থাকেন কেন?
নওয়াজ : কই না তো আমি কখন মাথা নিচু করে রাখলাম।
ঐশ্বর্য : আমি তো সব সময়ি দেখি।
নওয়াজ : হে আপনার সামনে নিচু করেই রাখি শুধু আপনি না যে কোনো মেয়ের সামনে মাথা নিচু করে রাখি এর মাধ্যমে শিক্ষার পরক হয়।
ঐশ্বর্য : আজ কাল এমন কজনি বা আপনার মতো মেয়েদের এভাবে সম্মান দেয়।
ঐশ্বর্য ভাবে হয়তো ছেলেটা বানিয়ে বলছে কিন্তু নওয়াজ এক কথা বলে ওর এই ভুল ধারণা ভেঙে দেয়।
নওয়াজ : পৃথিবীতে দুটো জিনিস কে আমি খুব সম্মান করি প্রথম সৃষ্টিকর্তার বিধান দ্বিতীয় নারি। তারা মা হওয়ার ক্ষমতা রাখে মায়েদের শক্তির সাথে পেরে উঠা কঠিন।
ঐশ্বর্য কথাটা শুনে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো আপনি কোন পর্যন্ত পরা লেখা করছেন? নওয়াজ বলল, আমি মেট্রিক পাস কেরেছি। ঐশ্বর্য আর কথা বারালো না। আচ্ছা আমাকে ঢাকা নেউয়ার কি দরকার ছিলো ময়মনসিংহেই তো এতো ভালো হাস্পাতাল নওয়াজ বলল আমি জানি না আপনার এখন কথা বলা উচিত না বলেই নওয়াজ মুখে রুমাল রেখে মাথা ঘুরিয়ে নিলো। ঐশ্বর্য ছেলেটাকে যতই দেখছে ততই অবাক হচ্ছে। তার মনে হাজারো চিন্তার মাঝেও একটা প্রশ্ন চলে আসে যে তার দাদু বলতো তাকে নাকি যেই দেখে তার বাড়ির লোক নিয়ে বিয়ের প্রোস্তাব দিতে চলে আসে। তার মা ও বলে তার দেখা সব থেকে সুন্দরী নারী আমি আচ্ছা ধরলাম মা বানিয়ে বলছে বাকিরা স্কুলেও সবাই এমনটাই বলে। আর এই ছেলে আমার দিকে তাকায়ও না! ঐশ্বর্য আনমনে বলে উঠলো, আজকাল এমন মানুষ খুব বিরল। সাথে সাথে সে হোসে আসে আর ভাবতে থাকে এইসব কি ভাবছি আমি! এবার তার মায়ের কথা মনে পরে গেলো মা তো আমাকে এমন না আমি বুঝতে পারছি সবাই মিথ্যা বলছে মা কি সত্যি নানু বাসায় গেছে? ঐশ্বর্যর মন ভারি হয়ে আসছে চাপা কান্না অনুভব হচ্ছে। আরো কিছু সময় এভাবে কেটে যায় ট্রেন ময়মনসিংহ জং এ এসে থামে সবাই স্টেশন থেকে বের হয়ে গাড়িতে করে ব্রম্মপুত্র নদীর ঘাটে এসে তারা চন্দনপুর জাউয়ার লঞ্চে উঠে পরে ময়মনসিংহ থেকে লঞ্চে করে চন্দপুর গ্রামে যেতে ১ ঘন্টা লাগবে। ঐশ্বর্য হুইলচেয়ারে বসে আছে আকাশ টা অন্ধকার হয়ে আসছে মাথার উপর সূর্য ঢেকে যাচ্ছে ঐশ্বর্য এখনো ভাবছে তার মায়ের কথা। এবার সে তার বাবাকে খেয়াল করলো দেখলো লঞ্চের রেলিং ধরে একাই দারিয়ে আছে ঐশ্বর্য ভাবলো হয়তো দাদুর জন্য তারও মন খারাপ তাই সে রহিমকে বলে রহিম ভাই একটু আমাকে বাবার কাছ পর্যন্ত পৌছে দেন। রহিম তাই করলো। ঐশ্বর্য তার বাবা কে খুব নরম শুরে ডাক দিয়ে বলে বাবা কি ভাবছো?
রবি : ঐশ্বর্য তুমি তখন অনেক ছোটো একটা ঘটনার কারণে আমরা তুমার মায়ের সাথে একটা ভুল বুঝা বুঝিতে সবাই খুব খারাপ ব্যবহার করি আমিও সবার মতোই ভুল বুঝি তাকে এবং কি মানুষিক ভাবে অত্যাচারও করি সমাজের লাঞ্ছনা সকলের কুটো কথার পরও এই সংসারের হাল ধরে রেখেছে এক সময় জানতে পারি তোমার মা নির্দোষ আজও তোমার মা হয়তো আমাকে ক্ষমা করতে পারেনি। এতো টুকু বলে একটা ধির্ঘ শ্বাস ছেড়লেন রবি মনে হলো সকল চাপা কষ্ট এক সাথে বের হলো। ঐশ্বর্য বুঝতে পারে তার বাবা এর জন্য আফসোস করে আম্মাও তো বাবার কথা অনেক ভাবে আর কি এমন হয়েছিলো যা কেউ তাকে বলে না আম্মাও বলতে চায় না!
ঐশ্বর্য বলল তুমার কি দাদুর জন্য মন খারাপ হয় না?
রবি : যুদ্ধের সময় অসংখ্য মানুষ চখের সামনে মারা গেছে এইসব দেখতে দেখতে এখন আমি অভস্ত্য কিন্তু যতোই হোক জন্ম ধাতা পিতা কষ্ট তো একটু হয়েছিলো এইসব কিছুই না মৃত্যু সকলের একদিন আসবেই।
তারা এই ভাবেই অনেকক্ষণ কথা বলে রেহানা এদিকে আসতে চাই কিন্তু নওয়াজ তাকে বাধা দেয় আর বলে এতো দিন পর দুজনে মন খুলে কথা বলছে বলতে দেন না সামনে মেয়েটাকে আরো বাজে কিছুর সম্মখিন হতে হবে। এভাবেই চলতে চলতে একসময় তারা খেয়াল করলো তাদের গ্রামের কিছু অংশ দেখা যাচ্ছে। ঐশ্বর্যর মনে পরলো আরেকটু সামনেই তো কালি ঘাট তাই সে লঞ্চের বাদিকে চলে আসে ঘাট টা দেখার জন্য। ঐশ্বর্য খেয়াল করলো ঘাটের সামনে নদীতে লাল কাপর দিয়ে চিন্হিত করা ঐশ্বর্য বুঝতে পারে কালি ঘাটের কাছ দিয়ে নৌকা লঞ্চ চলাচল করে না রবি বলল অনেক আগেই এই ঘাট পরিত্তেক্ত হয়ে গেছে আমরাও কোনো দিন এই ঘাটে মানুষের চলাচল দেখিনি। ঐশ্বর্য বুঝতে পারলো এই ঘাট আরো বহু বছর আগেই পরিত্যক্ত হয়ে গেছে। আকাশ একদম অন্ধকার হয়ে গেছে মনে হচ্ছে খুব জোরে বৃষ্টি আসবে। লঞ্চ চন্দনপুর ঘাটে এসে পৌছায় ঐশ্বর্য ঘাটের দিকে তাকিয়ে আকাশ থেকে পরলো ঐশ্বর্য মনে মনে বলল, একি দেখছি আমি আম্মার হাতে হেন্ডকাপ সাথে আকাশ ও তার পুলিশ ফোর্ছ...
.
.
ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন ধন্যবাদ,
পর্ব ১০ জলদি আসবে