Posts

গল্প

ভূতের পুকুর

January 24, 2025

Abdul Awal

Original Author অধ্যক্ষ এমএ আউয়াল

48
View

গ্রামের নাম ছিল কানাইপুর। চারপাশে ঘন জঙ্গল আর মাঝখানে একটি ছোট পুকুর। পুকুরটি "ভূতের পুকুর" নামে পরিচিত ছিল। কেউ সেখানে দিনের বেলাতেও যেতে সাহস করত না। কথিত ছিল, পুকুরে রাত নামলেই ভুতুড়ে কাণ্ড ঘটে।

একদিন গ্রামের নতুন বাসিন্দা রাহুল এসব গল্পকে ভ্রান্তি বলে উড়িয়ে দিল। সে সাহসী এবং বিজ্ঞানমনস্ক ছিল। তার বিশ্বাস ছিল, এসব ভূতের গল্প কেবল মানুষকে ভয় দেখানোর জন্য বানানো। একদিন রাতে, চাঁদের আলো ঝলমল করছে, রাহুল সিদ্ধান্ত নিল পুকুরে যাবে। তার বন্ধুদের জানিয়ে বলল, “যদি সত্যিই কোনো ভূত থাকে, আমি তোমাদের প্রমাণ দিয়ে দেখাব।”

রাহুল পকেটে একটা টর্চ আর একটা ছোট ছুরি নিয়ে রওনা দিল। পুকুরের দিকে যাওয়ার পথে চারদিক নিস্তব্ধ, কেবল ঝিঁঝি পোকার ডাক। পুকুরের কাছাকাছি পৌঁছাতেই ঠান্ডা হাওয়া বইতে শুরু করল। রাহুল টর্চ জ্বালিয়ে পুকুরের পানির দিকে তাকাল। হঠাৎ করে মনে হলো, পুকুরের পানিতে কারো ছায়া দেখা যাচ্ছে। সে কিছুক্ষণ স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকল।

অন্ধকারে একটা ফিসফিস শব্দ শোনা গেল। রাহুল সাহস করে ডেকে উঠল, “কে আছে ওখানে?”

হঠাৎ করেই পুকুরের পানি তোলপাড় হতে লাগল। পানির নিচ থেকে একটা সাদা ছায়ামূর্তি উঠে এল। মূর্তিটির চেহারা মানুষের মতো হলেও চোখদুটি জ্বলজ্বল করছিল। চারপাশের হাওয়া আরো ঠান্ডা হয়ে গেল। ভয়ে রাহুলের হাত-পা জমে গেল।

মূর্তিটি ধীরে ধীরে তার দিকে এগিয়ে এল। কাঁচা গলায় বলল, “তুই কেন এলি এখানে? কেউ আমার ঘুম ভাঙায় না। তোকে এর শাস্তি পেতে হবে!”

রাহুল চিৎকার করে পেছন ফিরে দৌড় দিল। কিন্তু মূর্তিটি তার পেছনে ছুটতে লাগল। রাহুলের মনে হলো, পায়ের নিচে মাটি সরে যাচ্ছে। পুকুর থেকে বহু দূরে গ্রামের প্রথম বাড়িটি দেখে রাহুল ধপ করে সেখানে ঢুকে পড়ল।

সকালে গ্রামবাসী রাহুলকে অজ্ঞান অবস্থায় পেল। তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে, সে কাঁপতে কাঁপতে পুরো ঘটনা বলল। এরপর থেকে কেউ আর সেই পুকুরের ধারে যায়নি।

আর রাহুল? সে আর কখনো ভূতের অস্তিত্ব নিয়ে সন্দেহ করেনি।

Comments

    Please login to post comment. Login