রাত গভীর। গ্রামে গভীর নীরবতা। ছোট্ট কুঁড়েঘরের ভিতরে চুপচাপ বসে আছে কিশোরী সুমি। ওর বয়স মাত্র পনেরো, কিন্তু জীবনের ভার যেন তাকে বয়সের চেয়ে অনেক বড় করে তুলেছে। মা-বাবা নেই, একমাত্র আপন দাদু ছিলেন। গত মাসে তিনিও চলে গেলেন।
সুমি এখন সম্পূর্ণ একা। তার স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া করে শিক্ষিকা হবে, কিন্তু দারিদ্র্য আর একাকিত্ব সেই স্বপ্নকে ধূলিসাৎ করেছে। তার চাচা, যিনি শহরে থাকেন, সুমিকে তাদের কাছে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি শর্ত দেন—সুমি কাজ করবে বাড়ির কাজে। সুমি জানে, সেখানে গেলে তার স্বাধীনতা পুরোপুরি হারাবে।
হঠাৎ বাইরে কারও পায়ের আওয়াজ শুনে সুমি চমকে ওঠে। দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ। “সুমি, দরজা খোল!” পরিচিত কণ্ঠ। প্রতিবেশী মিজান ভাই।
দরজা খুলতেই মিজান ভাই বলেন, “সুমি, আমি শহরে চাকরি পেয়েছি। কিন্তু গ্রামের বাচ্চাদের পড়ানোর জন্য একটা স্কুল খোলার স্বপ্ন ছিল আমার। তুমি কি আমার সঙ্গে যুক্ত হবে? আমরা সবাই মিলে স্কুল চালাবো।”
সুমি বুঝতে পারে, এই ডাক তার জীবনের নতুন পথচলা। অসমাপ্ত জীবন হয়তো এখানেই নতুন রূপ পাবে।
সে গভীর নিশ্বাস নিয়ে বলে, “হ্যাঁ, আমি রাজি।”