কবেরি
কবেরি, সুখ আচ্ছন্ন হৃদয় আমাদের— ভয় হয়,
ভয় হয় কোনো কিছুই তীব্রভাবে অনুভব করলাম না।
শুনেছি আমরা নাকি অনুভবেই মানুষ হতে পারি,
অথচ কোনো অনুভবের বহিঃপ্রকাশ ছিলোনা গভীরতা।
কথার মধ্যে আপন করার কোনো টান থাকেনা,
আমরাই মনে করি, “এইতো এমন ভাবে কেউ কথা বলুক,
এমন ভাবে কেউ টানুক, এমন ভাবে দেখুক
এইটাই তো চেয়ে আসছি আজীবন!” অথচ খানিক পরে–
যেখানে একটু জিরিয়ে নেওয়া যায় বলে ভাবা হয়—-
পরক্ষনেই সেখানে অগ্নিয়গিরির চরম উত্তাপ।
থাকা যায়না, ভাবা যায়না, জিরানোর কোনো সময় নেই,
কোনো অসমাপ্ত আত্মকথনের প্রশ্নই নেই।
যেদিন প্রথম তোমার চিঠি ডাকে পেলাম হাতে
ডাকটিকিটে অনেক দূর দেশের সিলমোহর
প্রথমে আমি লেখা দেখিনি, ধূসর কাগজে কালো কালির ঘন লেখা,
আমি গন্ধ নিয়ে ছিলাম আগে শিউলি ফুলের মতন সুবাস,
চটপট খাম খুলে দেখলাম ভেতরে দুইটা কাগজ, একটায় চিঠি
আরেকটায় সযত্নে মোড়ানো আমার চাওয়া তোমার ছবি।
তোমার মনে ছিল, দেশ ভাগের আগে তোমার কাছে
থেকে আমি তোমার একটা ছবি চেয়েছিলাম।
আজকে ডাকে— তোমার চিঠি আর ছবি পেলাম।
কি দুরহ যাতনা, ভাবলাম ছবি না দিলেই পারতে
বুকের কোলে অঝথা খানিক ব্যাথা জমিয়ে দিলে।
আর সেদিন পারলাম না চিঠি খুলে নিয়ে পড়তে।
যখন সময় হলো, তখন তুমি চিঠি আসা সমান দূরে।
আমি পড়িনি চিঠি আর, তাই রেখে দিলাম ছবির সাথে,
যখন পড়বো আমার দুরুত্ব যেন পাশাপাশি হয় তোমার।
কবেরি, আমি তোমাকে নিয়মিত চিঠি লিখব
কিন্তু তোমার লেখা আর পড়তে পারবো না:
কাগজের উপরে লিখতে লিখতে চোখের অশ্রু,
কিংবা থেমে থেমে সাজিয়ে গুছিয়ে মিথ্যে সুখ,
আজকে কত মজার ঘটনা ঘটেছে; এমন লেখা আমি পড়তে পারবো না,
আমার শিক্ষাগত যোগ্যতা সর্বোচ্চ কোনো পেপার আর্টিকেল পড়ার মতন,
তোমার গম্ভির ছন্দময় চিঠি বোঝার সমান ঘিলু আমার নেই।