"মানুষের জন্য কেবল তাই, যা সে চেষ্টা করে।"
(সূরা আন-নাজম: ৩৯)
এই আয়াতে মহান আল্লাহ্ তা’আলা একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দিয়েছেন। এখানে বলা হয়েছে, মানুষের জীবন এবং আখিরাত—উভয়ের সফলতা তার চেষ্টা ও শ্রমের ওপর নির্ভরশীল। অর্থাৎ, কোনো ব্যক্তি যে পরিমাণ চেষ্টা করবে, সে ততটুকুই ফল পাবে। এই নীতিটি জীবন এবং ধর্মের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
ব্যাখ্যা:
1. ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা:
আল্লাহ্ মানুষের জন্য পৃথিবীতে কাজ করার ও সফল হওয়ার সুযোগ দিয়েছেন। কিন্তু তার জন্য প্রয়োজন নিজস্ব প্রচেষ্টা। কেবল আশা বা প্রার্থনা করলেই সফলতা আসবে না, তা বাস্তবায়নের জন্য কাজ করতে হবে।
কুরআনের উদাহরণ:
হযরত মুসা (আঃ) যখন মিসর থেকে পালিয়ে মাদইয়ানে পৌঁছান, তখন তিনি কুয়োর কাছে গিয়ে দুজন মহিলাকে পানির জন্য অপেক্ষা করতে দেখেন। তিনি নিজেই এগিয়ে গিয়ে তাদের সাহায্য করেন। পরবর্তীতে তাদের বাবা শুআইব (আঃ)-এর কাছ থেকে চাকরি এবং আশ্রয় পান। এখানে মুসা (আঃ)-এর প্রচেষ্টা তার জন্য সফলতার পথ খুলে দেয়।
2. দুনিয়াবি জীবনে প্রয়োগ:
যদি কেউ জীবনে ভালো চাকরি, ব্যবসা বা আর্থিক স্থিতি চায়, তাকে কঠোর পরিশ্রম এবং জ্ঞানার্জন করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, একজন ছাত্র যতক্ষণ না অধ্যবসায় এবং পড়াশোনায় মনোনিবেশ করবে, ততক্ষণ সে ভালো ফলাফল করতে পারবে না।
3. আখিরাতের দৃষ্টিভঙ্গি:
ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে, আখিরাতে সফলতার জন্য ভালো আমল, ইবাদত এবং মানবসেবার মতো কাজ করতে হবে। কেবলমাত্র ভালো নিয়ত করলেই হবে না; সেই নিয়ত বাস্তবে প্রমাণ করতে হবে। যেমন, একজন ব্যক্তি নামাজের গুরুত্ব বোঝে, কিন্তু নিজে নামাজ আদায় না করলে তা কোনো ফল বয়ে আনবে না।
---
উদাহরণ:
1. তোমার নিজের ভাগ্য গড়ে নাও:
একজন ব্যক্তি যদি কৃষি কাজে সফল হতে চায়, তাকে ভালো বীজ বপন করতে হবে, জমি চাষ করতে হবে, এবং যথাযথ যত্ন নিতে হবে। যদি সে কেবল বীজ ফেলে দিয়ে আশা করে যে ফসল ভালো হবে, তবে তা সম্ভব নয়।
2. ব্যবসায়িক উদাহরণ:
একজন ব্যবসায়ী যদি তার ব্যবসা বাড়াতে চায়, তাকে ভালো পরিকল্পনা করতে হবে, পরিশ্রম করতে হবে এবং কাস্টমারদের সন্তুষ্ট করতে হবে।