Posts

গল্প

অন্ধকারের রহস্য

January 26, 2025

Sayara Begum

127
View

ঢাকার এক ব্যস্ত সাংবাদিক তানভীর রহমান। রহস্য উদ্ঘাটনে তার নাম চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। সে সবসময় এমন কিছু খুঁজতে চায় যা মানুষের সামনে সত্য তুলে ধরবে। একদিন রাতে, যখন শহরের বাতিগুলো ম্লান হয়ে এসেছে, তানভীর তার ল্যাপটপে বসে খবর লিখছিল। ঠিক তখনই, একটি অজানা ইমেইল আসে।

ইমেইলের বিষয়বস্তু ছিল অদ্ভুত। সেখানে লেখা ছিল, "তোমার শহরের নিচে এমন কিছু লুকানো আছে যা প্রকাশ পেলে সবকিছু বদলে যাবে। এটা শুধু ধনসম্পদ নয়, বরং ইতিহাস বদলে দেওয়ার এক সত্য।" সঙ্গে ছিল একটি পুরোনো মানচিত্রের ঝাপসা ছবি। তানভীর প্রথমে গুরুত্ব দেয়নি, ভেবেছিল কেউ হয়তো মজা করছে। কিন্তু মানচিত্রে ঢাকার কিছু জায়গার নাম দেখে তার কৌতূহল বাড়ে।

পরদিন সকালে তানভীর তার বন্ধু নীহারিকাকে নিয়ে ঘটনাটি আলোচনা করে। নীহারিকা একজন প্রত্নতত্ত্ববিদ। তিনি পুরোনো কাগজ ও মানচিত্র পড়তে পটু। মানচিত্রটি দেখে তিনি নিশ্চিত করেন, এটি ব্রিটিশ আমলের একটি গুপ্তনথি হতে পারে।

দুজন মিলে রহস্য সমাধানে নেমে পড়ে। প্রথম ক্লু অনুযায়ী তারা পুরান ঢাকার এক পরিত্যক্ত কেল্লায় যায়। সেখানে সন্ধান করতে গিয়ে তারা মাটির নিচে একটি ছোট ঘর পায়। ঘরের ভেতরে ছিল প্রাচীন ভাষায় লেখা একটি শিলালিপি। সেখানে লেখা ছিল, “যে সত্য জানবে, তাকে তার মূল্য দিতে হবে।”

তারা আরো গভীরে প্রবেশ করতে থাকে। প্রতিটি ক্লু তাদের ঢাকার অন্য একটি জায়গায় নিয়ে যায়। কখনো সেটা কোনো পুরোনো মসজিদের দেয়াল, কখনো কোনো পরিত্যক্ত টানেলের ভেতর।

তবে রহস্য যত বাড়ছিল, ততই তাদের উপর নজরদারি শুরু হয়। তারা টের পায়, একটি অজ্ঞাত সংগঠন তাদের অনুসরণ করছে। সংগঠনটির উদ্দেশ্য ছিল এই ধনসম্পদকে নিজেদের কব্জায় নিয়ে যাওয়া। তাদের একাধিকবার প্রাণনাশের চেষ্টা হয়।

এক রাতে, নীহারিকাকে অপহরণ করা হয়। তানভীর বুঝতে পারে, ধনসম্পদের চেয়েও বড় কিছু লুকিয়ে আছে এই রহস্যে। তিনি নীহারিকাকে উদ্ধার করতে গিয়ে সংগঠনটির সদর দপ্তর আবিষ্কার করে। সেখানে দেখা যায়, শুধু ধনসম্পদ নয়, এই গুপ্তনথি এমন কিছু প্রমাণ ধারণ করে যা দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতির চিত্র পাল্টে দিতে পারে।

গল্পের শেষে তানভীর ও নীহারিকা ধনসম্পদ ও নথি উদ্ধার করে। কিন্তু তাদের সামনে একটি কঠিন সিদ্ধান্ত আসে—এই সত্য কি সবাইকে জানানো উচিত, নাকি এর মধ্যে যা মূল্যবান, তা দেশের সেবায় ব্যবহার করা উচিত।

তানভীর সত্যকে গোপন রাখার সিদ্ধান্ত নেয়, কারণ সেই সত্য জানলে দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট হতে পারে। ধনসম্পদ ব্যবহার করে দেশের কিছু উন্নয়নমূলক কাজে অর্থায়ন হয়।

শেষ দৃশ্যে তানভীর একটি কাগজ হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে, যেখানে লেখা, "কিছু সত্য লুকানো থাকাই ভালো। কারণ তারা আলোর থেকে অন্ধকারেই বেশি নিরাপদ।"

Comments

    Please login to post comment. Login