কিচ্ছু পারেনা
বইয়ের পাতার উপরে কালো রঙের লেখা গুলো
কেমন যেন ঝাপসা ঝাপসা দেখাচ্ছিল তখন
পড়া একেবারেই যাচ্ছে না তা না, পড়া যাচ্ছে
সম্ভবত কয়েক রাত ধরে ঘুম নেই তার
অসহ্য বোধ হয় বইয়ের পাহাড়ে লুকানো এমন আধার
পরে আছে টেবিলের পাশে, স্তুপ হয়ে হিমালয় বেশে
হঠাৎ দু একটা বই উঠে এসে তার হাতে সাজে
সে তো চায়নি তো পড়া, কিংবা অঝথা ভয় ছেলে ধরা।
দুরন্ত বিকেলে ক্রিকেট ব্যাটের গ্রিপ ধরে
হতে চেয়ে ছিল সে ছক্কাবাজ ক্রিজ গেইল
লেপের নিচে নোকিয়া ফোনের মিহি আলোয়
পড়ে নিয়েছিল চাঁদের পাহাড়, তিন গোয়েন্দা।
হতে চেয়েছিলো শংকর, অন্নেষী কিশোর পাশা।
তার হাতে এখন বই ধরে রাখা, সামনে ক্যালকুলেটর
কিছু সংখ্যা দেখা যায় ভেসে উঠে আবার অলক্ষে ডুবে যায়
সে তো চায়নি হিসেব সহজ করা যন্ত্র, চায় নি প্রাসের মন্ত্র
ক্যালকুলেটর হাতে এখনো জানে না পরিপূর্ণভাবে চালাতে
জানে না কিভাবে ফ্যাক্টরিয়াল হয়, শূন্যের ঘাত কতই বা
কিংবা সে জানে না ছোট মাথায় অসীম কিভাবে করে মুখ হা।
তবুও বসে আছে বিচ্ছিরি বই হাতে, এমন কালির কলম
যার আবিস্কার হয়েছিল ইতিহাস মানুষের বীরগাথা লেখায় চরম।
সৃষ্টি যে কলমের আদিকথা ছিল, তার হাতে এখন আত্মবিধ্বংসিত
সে তো লেখিনি কলম দিয়ে জীবনের আদিম রূপকথা
কিংবা কোনো রূপবতীর রূপের অসম্ভব বর্ণনার তত্ত্ব ব্যাথা
তার হাতে কলম এখন কালির সমাহার রোমান সংখ্যা
থেকে শুরু করে হায়রোগ্লিফিক্স বাংলা ইংরেজি শব্দের বাহার।
এতো লেখা এতো শব্দের হঠাৎ আনাগোনা, বসে আছে হাতে নিয়ে
বসে আছে বই নিয়ে কেননা তা ছাড়া সে আর কিচ্ছু পারেনা।