অজস্র কাঁটার আলিঙ্গনে
--শাহাদাত সুফল
শিশিরের একেকটা বিন্দু ঝরে পড়ে
খেয়ালের আড়ালে সূর্য ওঠার পায়তারা করে,
ভোরের মুয়াজ্জিন ডাকে- হাইয়া আলাস-সালাহ
ঘুমের ঘোর অন্ধকারে উদ্ভ্রান্ত যাত্রী বানিয়ে ছাড়ে;
অস্তিত্বের ইথারে ভাসে আজন্মের ইতিহাস
আমি ভুলে গেছি কালের পাখিদের গান,
শহীদের রক্তাক্ত জখম;
হৃদয়ের প্রান্তর পাথরের দেয়ালে হয়েছে পরিণত;
রক্ত কী জানে বুলেটের আঘাতের মানে!
রাজপথ রঞ্জিত করে ভাসায়- ফসলিয়া তরুণের উজ্জীবনের গান, নয়া-ইতিহাস
রাষ্ট্রকাঠামোর বন্দোবস্ত ও আগামীর ফুল তোলা
ইশতেহারের করুণ হালখাতা;
জীবনের আয়োজনে ফুল ও কাঁটার ব্যবহার
রক্তের স্রোতধারা ভাসিয়ে নিয়ে যায়
চূর্ণ-বিচূর্ণ করে ফ্যাসিবাদের অন্ধ প্রকোষ্ঠ- আয়নাঘর;
আমি দেখি সে ঘর ও ঘরের আয়নায়
আমার ও আমাদের মুখচ্ছবি;
মুখোশ কী যায় তাতে খোলা!
চেহারার অবয়ব কতোটুকু যায় তাতে দেখা!
কতোটুকু চেনা হয় ঘাত-প্রতিঘাত!
কতোটুকু জানা হয় মির্জাফরের পরিচয়!
কতোটুকু বোঝাপড়া বাড়ালেই ভয় হয় লয়ের দেশে!
আমজনতার ইনকেলাব- কবিতার পয়ারের মতো
একটি একটি করে বাঁধে শব্দ, স্লোগানে-স্লোগানে মাতোয়ারা রাখে- বাঁধে আন্দোলনের সুর,
ঝরে পড়া ডালিমের দানার মতো দেহ,
অস্ফুটস্বরে প্রণয়, প্রাণ ও প্রেমিকের দস্তরখান
ছিন্নভিন্ন করে; ক্ষমতার অনলে
প্রাণ যদি যায় তবে যাক,
শিশু বৃদ্ধ যুবা-যুবতীরা এই দেশের তরে
মৃত্যুর পরোয়ানা হাতে নিয়ে
পথে নামে, জেগে ওঠে আরো একটি বার
যেমন গোলাপ ফোটে অজস্র কাঁটার আলিঙ্গনে;
রচনাকাল:
২৪-০১-২০২৫ খ্রিঃ।