উপন্যাস: শব্দহীন পৃথিবী
প্রথম অধ্যায়: নিঃশব্দ এক সকাল
জয় ঘুম ভাঙতেই বুঝতে পারল, কিছু একটা অস্বাভাবিক।
খুব ভোর, জানালার বাইরে সূর্যের আলো ছড়িয়ে পড়ছে। গাছের পাতায় বাতাস দুলছে, রাস্তায় গাড়ি চলছে, মানুষ হাঁটছে—কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, কোথাও কোনো শব্দ নেই!
সে চমকে উঠে বিছানা থেকে নেমে চিৎকার করল, "মা!"
কিন্তু তার গলার আওয়াজই বের হলো না। না ফিসফিস, না গর্জন—একদম কিছুই না!
ভয় পেয়ে সে বাইরে বেরিয়ে এল। পাশের বাসার লোকেরা দরজা খুলে বেরিয়ে এসেছে, চোখেমুখে আতঙ্ক। সবাই একে অপরকে কিছু বলার চেষ্টা করছে, কিন্তু কেউ কারও কথা শুনতে পাচ্ছে না।
বিশ্ব থেকে শব্দ চিরতরে হারিয়ে গেছে।
দ্বিতীয় অধ্যায়: এক নিঃশব্দ বিপর্যয়
খবরের চ্যানেলগুলো চালু আছে, স্ক্রিনে রিপোর্টাররা কিছু বলছে, কিন্তু ঠোঁট নাড়ানো ছাড়া আর কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। কিছুক্ষণের মধ্যেই টিভির স্ক্রলে ভেসে এল একটি জরুরি ঘোষণা—
"বিশ্বব্যাপী রহস্যময় নীরবতা! কেউ কিছু শুনতে পাচ্ছে না! বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটি কোনো প্রযুক্তিগত সমস্যা নয়, বরং প্রকৃতির এক অজানা ঘটনা।"
মানুষ ইশারায় কথা বলতে শুরু করল, কেউ হাতের লেখায় মেসেজ আদান-প্রদান করছে, কেউ চোখেমুখের অভিব্যক্তিতে অনুভূতি প্রকাশ করছে। কিন্তু ধীরে ধীরে সবাই বুঝতে পারল, শব্দের অনুপস্থিতি কেবল কান পর্যন্ত সীমাবদ্ধ নয়—মানুষের মনের মধ্যেও ভাবনার শব্দ হারিয়ে যাচ্ছে।
কথা না বলতে পারলে চিন্তাও কি মুছে যাবে?
তৃতীয় অধ্যায়: শব্দের খোঁজে
জয় ও তার কিছু বন্ধু ঠিক করল, তারা এই রহস্যের সমাধান বের করবে। তারা শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াল, খোঁজ করল বিজ্ঞানীদের, কিন্তু কেউ কোনো উত্তর দিতে পারল না।
এমন সময় তারা পেল এক অদ্ভুত বার্তা—এক অদৃশ্য উৎস থেকে আসা একটি সংকেত, যা ইশারায় লেখা ছিল,
"তোমরা শব্দ হারাওনি, শব্দ তোমাদের ছেড়ে চলে গেছে।"
কে পাঠিয়েছে এই বার্তা? শব্দ কি সত্যিই আমাদের পরিত্যাগ করেছে?