গুপ্তচর গোবিন্দ
গোবিন্দ ছিল একেবারে সাধারণ এক যুবক। বেকার, কিন্তু উচ্চাশী। তার স্বপ্ন ছিল গুপ্তচর হওয়ার, কিন্তু সমস্যা একটাই—দেশের কোনো গোয়েন্দা সংস্থা তাকে নিয়োগ দিতে চাইতো না।
একদিন রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে কাঁচা বাদাম খেতে খেতে সে ভাবছিল, “গুপ্তচর হতে গেলে কী লাগে? চালাকি, ধৈর্য আর চুপচাপ কাজ করার দক্ষতা।”
ঠিক তখনই সে দেখতে পেল, এক ভদ্রলোক তার ওয়ালেট ফেলে চলে যাচ্ছেন। গোবিন্দ সুযোগ হাতছাড়া করলো না। সে চটপট সেই ওয়ালেট নিয়ে দৌড় দিলো ভদ্রলোকের দিকে।
— “স্যার! স্যার! আপনার ওয়ালেট!”
ভদ্রলোক অবাক হয়ে বললেন, “ধন্যবাদ ভাই, তুমি না থাকলে তো আমার অনেক ক্ষতি হয়ে যেত। তুমি কি পুলিশের লোক?”
গোবিন্দ ভাবলো, “এই তো সুযোগ!” সে গম্ভীর গলায় বলল, “আমি আসলে… গুপ্তচর!”
ভদ্রলোক চোখ কপালে তুলে বললেন, “গুপ্তচর?! কোথায় কাজ করো?”
গোবিন্দ গলা নামিয়ে ফিসফিস করে বলল, “গোপন সংস্থা, নাম বলা যাবে না। কিন্তু আমার মিশন চলছে।”
ভদ্রলোক বেশ মুগ্ধ হয়ে বললেন, “তাহলে একটা কাজ আছে তোমার জন্য। আমার দোকানে প্রতিদিন চায়ের কাপ চুরি হয়ে যায়। তুমি পারবে চোর ধরতে?”
গোবিন্দ মনে মনে ভাবলো, “এটাই হয়তো আমার প্রথম মিশন!” সে সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে গেলো।
সন্ধ্যায় সে দোকানে গিয়ে লুকিয়ে রইলো। সারারাত চুপচাপ বসে থাকলো, কিন্তু কোনো চোর এল না। ঠিক সকালবেলা এক পাগলাটে বিড়াল লাফ দিয়ে একটা কাপ নিয়ে পালালো!
গোবিন্দ চিৎকার করে উঠলো, “ধরা পড়েছিস, কাপ চোর!”
দোকান মালিক হাসতে হাসতে বললেন, “ওই বিড়ালটাই চোর! এখন থেকে তুমিই এই দোকানের গোয়েন্দা!”
গোবিন্দের মুখ শুকিয়ে গেল। তার স্বপ্ন ছিল আন্তর্জাতিক গুপ্তচর হওয়ার, আর বাস্তবে হলো ‘চায়ের কাপ চোর ধরার বিশেষজ্ঞ’!
এদিকে তার নাম ছড়িয়ে পড়লো। মানুষ তাকে নিয়ে হাসাহাসি করতে লাগলো। একদিন এক বড় গোয়েন্দা সংস্থা খবর পেলো যে, গোবিন্দ নাকি ভয়ানক দক্ষ গুপ্তচর! তারা গোবিন্দকে ডাকলো ইন্টারভিউতে।
বস বললেন, “তুমি কী কী মিশন করেছো?”
গোবিন্দ গম্ভীর গলায় বললো, “আমি একবার একটা কাপ চোর ধরেছি।”
বস হাসি চেপে বললেন, “ওহ, তা বেশ! আমরা তোমাকে একটা বিশেষ মিশনে পাঠাবো। কিন্তু একটা শর্ত আছে। তোমাকে তিন মাস চুপ থাকতে হবে।”
গোবিন্দ খুশিতে রাজি হয়ে গেলো।
তিন মাস পর…
গোবিন্দ বুঝতে পারলো, আসলে তাকে ভুলে গিয়েছিল সবাই!