Posts

নন ফিকশন

ভারতের ডাউকি সেতুর সাথে বাংলাদের একজন জড়িত

February 5, 2025

লবেরু

48
View

যারা সিলেট হয়ে মেঘালয় বেড়াতে যান তাদেরকে ডাউকি সেতু পার হতে হয়। যারা জাফলং জিরো পয়েন্ট বেড়াতে গিয়েছেন, তারা সেখানে ভারতের একটি ঝুলন্ত সেতু দেখতে পান। এই সেতুটি নির্মিত হয়েছিল ১৯৩২ সালে। আপনারা জানান কি, এই সেতু নির্মাণের প্রধান প্রকৌশলী ছিলেন সিলেটের সন্তান প্রফেসর জামিলুর রেজা চৌধুরীর বাবা আবিদ রেজা চৌধুরী? 

সেতুটি নির্মাণের ইতিহাসও বেশ চমকপ্রদ। ১৯১৯ সালে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিলং বেড়াতে এসেছিলেন। এটা শুনে তৎকালীন শ্রীহট্টে (বর্তমান সিলেট) কবিকে নিয়ে আসার তোড়জোর শুরু হয়। কিন্তু বিপত্তি দেখা দেয় যাত্রাপথ। তখন উমগট নদীর উপর কোন সেতু ছিল না, গাড়ি চলার পথও সেভাবে ছিল না। মানুষ পার হতো মানুষের পীঠে চড়ে! রবীন্দ্রনাথ মানুষের পীঠে চড়ে এভাবে আসতে রাজী হননি। অনেকটা ঘুরে তাই ট্রেনে করে তিনি সিলেটে আসেন গৌহাটি-বদরপুর-লাতু (বড়লেখার শাহবাজপুর)-কুলাউড়া পথ দিয়ে। 

এরপরই সিলেট-শিলং সরাসরি সড়ক পথটি নির্মাণের আলোচনা জোরালো হয়। তখনকার প্রভাবশালী কংগ্রেস নেতা ও মন্ত্রী সিলেটের বুরঙ্গা গ্রামের বসন্ত কুমার দাস বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগী হন। তার চেষ্টায় বাজেট বরাদ্দও হয়ে যায়। কিন্তু উমগট নদীতে খাসিয়া ও জৈন্তিয়া পাহাড়কে যুক্ত করতে কঠিন একটি সেতু নির্মাণের দরকার পড়ে। তখন আবিদ রেজা চৌধুরী প্রকৌশলী হিসেবে শিলংয়ে চাকরি করছিলেন। আবিদ রেজার বাড়ি ছিল তৎকালীন সিলেটের করিমগঞ্জে, পরে তার পরিবার বড়লেখার শাহবাজপুরে থিতু হয়েছিল। তার উপরই পড়ে সেতুর নকশার ভার। ১৯৩০ সালে আবিদ রেজার নকশা, নির্দেশনায় তৈরি হতে থাকে এই সেতু। 

ব্রিটিশ ভারতে আসাম প্রদেশের রাজধানী ছিল শিলং। আর সিলেট ছিল আসামের একটি জেলা শহর। দুই গুরুত্বপূর্ণ শহরের মধ্যে ৯০ বছর আগে তৈরি হয় সরাসরি যোগাযোগের পথ। যা আজও চলামান। 

গল্পটি এই সময়ে প্রাসঙ্গিক কারণ আবিদ রেজার পুত্র অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীও আরেকটি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ সেতুতে ইতিহাসে নাম উঠালেন। প্রয়াত জামিলুর রেজা ছিলেন পদ্মা সেতুর প্রধান পরামর্শক। মানুষের চলাচলের ব্যবস্থাকে সহজ করে দেওয়া দুই কীর্তিমানকে শ্রদ্ধা। 

Comments

    Please login to post comment. Login