জান্নাত ছোটবেলা থেকেই অস্থির প্রকৃতির মেয়ে। চার দেয়ালের মাঝে তার মন টেকে না। জানালা দিয়ে যখনই সে বাইরের আকাশের দিকে তাকায় তখনই মনে হয় এ শহরের বাইরে একাই চলে যেতে পারলে ভালো হতো।
একদিন সে ঠিক করল, শহরের কোলাহল থেকে একা একা বেরিয়ে পড়বে। গন্তব্য? সে নিজেও জানে না! শুধু ব্যাগে প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস নিয়ে বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছলো
বাসে বসে বাইরে জানালার দিকে বাতাসে চুল উড়িয়ে দিল সে । রাস্তার পাশে সবুজ মাঠ, ছোট ছোট গ্রাম, নদীর মাঝখানে কাঠের সেতু– সবকিছু তার মনে রং ছড়িয়ে দিল। সে ঠিক করল সিলেটের পাহাড়ি কোন অঞ্চলে যাবে।
দুই দিনের মধ্যে সে পৌঁছলো খাসিয়া পল্লীতে।সেখানকার লোকদের জীবনধারা, তাদের সহজ সরল কথায় সে মুগ্ধ হল। এক বৃদ্ধ তাকে বুনো ফল খেতে দিল। একটি কিশোর তাকে ঝর্ণায় গোসল করা মজা শেখালো।
সন্ধ্যাবেলায় পাহাড়ের চূড়ায় বসে সে বুঝতে পারলো এটাই তার ভালো লাগার জগত। কিন্তু পৃথিবী এত বড়, এত সুন্দর? সে কি এক জায়গায় আটকে থাকতে পারবে?
তারপর থেকে জান্নাত কখনো পাহাড়ে, কখনো সমুদ্রে, কখনো অরণ্যে, ঘুরে বেড়াতো। একেক জায়গা তাকে নতুন কিছু শেখালো, নতুন অনুভূতি, এনে দিল।
তবে জান্নাতের মনে কখনো কখনো প্রশ্ন জাগে— ঘুরে বেড়ানোর কি তার একমাত্র স্বপ্ন? নাকি সে কিছু খুঁজছে? এমন একটা জায়গা যেখানে তার মন স্থির হয়ে যাবে? অথবা হয়তো তার মন সারা জীবন যাযাবরজীবন কাটাতে চায়?
সমাপ্ত