**প্রথম অংশ: অদ্ভুত আমন্ত্রণ**
শীতের সন্ধ্যা। কলকাতার গলিতে গলিতে ঠাণ্ডা হাওয়া বইছে। রাস্তার আলোগুলো ম্লান হয়ে আসছে। অফিস থেকে ফেরার পথে অরুণাব বসু হঠাৎ একটি চিঠি পায়। চিঠিটা তার নামে, কিন্তু ঠিকানা অদ্ভুত—"কলকাতার অন্ধকার গলি, বাড়ি নং ১৩"। চিঠির কাগজ পুরনো, কালো কালিতে লেখা—"আপনার সাহায্য প্রয়োজন। আসুন আজ রাত ১০টায়। বিপদে আছি।"
অরুণাব গোয়েন্দা। তার কাছে এ ধরনের চিঠি নতুন নয়। কিন্তু এই চিঠির ভাষা, টোন, সবকিছুই যেন একটু আলাদা। তার মনে হলো, এটা শুধুই কৌতুক নয়। চিঠির শেষে একটি নাম—"ডঃ সোমনাথ রায়"।
অরুণাব সিদ্ধান্ত নিল, সে যাবে। রাত ১০টায় ঠিকানা অনুযায়ী সে পৌঁছাল। বাড়িটি পুরনো, দেয়ালে মস লাগা। দরজা খোলা। ভিতরে অন্ধকার। অরুণাব টর্চ জ্বালিয়ে ভিতরে ঢুকল। হঠাৎ একটি আওয়াজ শুনতে পেল—"আসুন, অরুণাব বসু। আমি আপনার অপেক্ষায় আছি।"
**দ্বিতীয় অংশ: রহস্যময় ডঃ সোমনাথ**
অরুণাব টর্চের আলো ফেলে দেখল, একটি কক্ষে একজন বৃদ্ধ বসে আছেন। তিনি ডঃ সোমনাথ রায়। তার চোখে ভয়, মুখে উদ্বেগ। তিনি বললেন, "আমি জানি আপনি একজন দক্ষ গোয়েন্দা। আমার জীবন বিপন্ন। কেউ আমাকে হত্যা করতে চায়।"
অরুণাব জিজ্ঞাসা করল, "কেন? কে করতে চায়?"
ডঃ সোমনাথ বললেন, "এটা জটিল। আমি একজন বিজ্ঞানী। আমি একটি গোপন প্রজেক্টে কাজ করছি। এই প্রজেক্টের সাথে জড়িত অনেক রহস্য। কেউ চায় না এই প্রজেক্ট সফল হোক।"
অরুণাবের মনে হলো, এটা শুধুই একটি সাধারণ হুমকি নয়। এর পেছনে বড় কিছু আছে। সে জিজ্ঞাসা করল, "এই প্রজেক্ট কী?"
ডঃ সোমনাথ বললেন, "এটা একটি নতুন ধরনের শক্তি। যা পৃথিবী বদলে দিতে পারে। কিন্তু এই শক্তি যদি ভুল হাতে পড়ে, তাহলে ধ্বংস হয়ে যাবে সবকিছু।"
**তৃতীয় অংশ: ষড়যন্ত্রের শুরু**
পরের দিন অরুণাব ডঃ সোমনাথের ল্যাব ভিজিট করল। ল্যাবটি অত্যাধুনিক, কিন্তু সবকিছু যেন গোপন। ডঃ সোমনাথ তাকে দেখালেন একটি ছোট ডিভাইস। বললেন, "এটা হলো সেই শক্তি। এটা কাজ করে অদৃশ্য শক্তির মাধ্যমে।"
হঠাৎ ল্যাবের আলো নিভে গেল। অন্ধকারে কেউ একজন ল্যাবে ঢুকল। অরুণাব টর্চ জ্বালালো। দেখল, একজন মাস্ক পরা লোক। লোকটি ডিভাইসটি ছিনিয়ে নিয়ে পালাল।
ডঃ সোমনাথ চিৎকার করে বললেন, "ওই লোকটা আমার সহকারী, ডঃ অমিতাভ। সে এই প্রজেক্টের সবকিছু জানে। সে এখন বিপদে।"
অরুণাব বুঝল, এটা শুধুই চুরি নয়। এর পেছনে বড় ষড়যন্ত্র আছে। সে ডঃ সোমনাথকে বলল, "আমি এই কেস নিলাম। আমি খুঁজে বের করব সত্যি কী হচ্ছে।"
**চতুর্থ অংশ: গভীর ষড়যন্ত্র**
অরুণাব তার তদন্ত শুরু করল। সে ডঃ অমিতাভের বাড়ি গেল। বাড়িটি খালি। কিন্তু সেখানে একটি ডায়েরি পেল। ডায়েরিতে লেখা—"আমি জানি, তারা আমাকে মারবে। এই প্রজেক্টের পেছনে বড় লোক জড়িত।"
অরুণাব বুঝল, এই প্রজেক্টের পেছনে শুধুই একজন নয়, অনেক বড় শক্তি কাজ করছে। সে ডঃ সোমনাথের ল্যাবে ফিরে গেল। ডঃ সোমনাথ বললেন, "আমি জানি, এই প্রজেক্টের পেছনে একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন জড়িত। তারা চায় এই শক্তি তাদের হাতে থাকুক।"
অরুণাব জিজ্ঞাসা করল, "এই সংগঠনের নাম কী?"
ডঃ সোমনাথ বললেন, "ব্ল্যাক শ্যাডো। তারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজ করে। তাদের নেটওয়ার্ক非常大।"
**পঞ্চম অংশ: শেষ লড়াই**
অরুণাব বুঝল, এই কেস শুধুই একটি চুরি নয়। এটা একটি আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র। সে ডঃ সোমনাথকে বলল, "আমাদের সময় কম। আমাদের এই ডিভাইস উদ্ধার করতে হবে।"
তারা ব্ল্যাক শ্যাডোর একটি গোপন মিটিং এর তথ্য পেল। মিটিং হবে কলকাতার একটি পুরনো গোডাউনে। অরুণাব এবং ডঃ সোমনাথ সেখানে গেল। গোডাউনে ঢুকতেই তারা দেখল, ডঃ অমিতাভ বাঁধা অবস্থায়। তার পাশে মাস্ক পরা লোকেরা।
অরুণাব লুকিয়ে তাদের কথোপকথন শুনল। একজন বলল, "আমরা এই ডিভাইস ব্যবহার করে বিশ্বকে নিয়ন্ত্রণ করব।"
অরুণাব বুঝল, এখনই সময় কাজ করার। সে ডঃ সোমনাথকে বলল, "আমি তাদের বিরুদ্ধে যাব। আপনি ডিভাইস উদ্ধার করুন।"
অরুণাব লড়াই শুরু করল। মাস্ক পরা লোকেরা সংখ্যায় বেশি, কিন্তু অরুণাবের দক্ষতায় তারা হার মানল। ডঃ সোমনাথ ডিভাইস উদ্ধার করলেন। ডঃ অমিতাভকে মুক্ত করা হলো।
**ষষ্ঠ অংশ: সমাপ্তি**
পুলিশ আসল। ব্ল্যাক শ্যাডোর সদস্যরা গ্রেফতার হলো। ডঃ সোমনাথ এবং ডঃ অমিতাভ নিরাপদ। অরুণাব বসু তার কাজ শেষ করল।
ডঃ সোমনাথ বললেন, "আপনার সাহায্য না পেলে সবকিছু শেষ হয়ে যেত।"
অরুণাব হাসল, "এটাই আমার কাজ।"
গল্পের শেষে অরুণাব বসু আবারও নতুন কেসের জন্য প্রস্তুত। কলকাতার রাস্তায় রহস্যের গন্ধ। আর অরুণাব বসু, সেই রহস্যের সমাধানকারী।