এক গ্রামের ছেলে মুহি, সাদমান, লাবিব, এবং রাগিব ছিল খুব ভালো বন্ধু। তাদের জীবনের সেরা সময় কাটছিল একে অপরের সাথে, তবে এক রাতের পর তারা আর আগের মতো ফিরে যেতে পারেনি। এই চার বন্ধু একদিন গ্রাম থেকে কিছুটা দূরে থাকা এক পুরনো বাড়িতে যেতে সিদ্ধান্ত নেয়। বাড়িটি দীর্ঘ সময় ধরে পরিত্যক্ত, আর গ্রামের লোকজন মনে করে সেখানে ভুতেরা থাকে।
মুহি বললো, “আজ রাতে আমরা যেতেই হবে! এটা আমাদের জন্য একটা অ্যাডভেঞ্চার।"
সাদমান একটু ভয়ে বললো, “দুঃখিত, আমি ওখানে যেতে চাই না, অনেকদিন ধরে শুনে আসছি ওই বাড়িতে অদ্ভুত কিছু ঘটে।"
লাবিব: “তবে, আমরা তো সবাই আছি, কিছু হবে না। আর ভুতুড়ে গল্পে বিশ্বাস করি না।"
শেষে রাগিবের সাহসে সবার মাঝে ঘুরে গেল, "সবাই চল, আজ রাতে যেয়ে আসবো।"
রাতের অন্ধকারে, চার বন্ধু হাত ধরে পুরনো বাড়ির দিকে পা বাড়ায়। বাড়িটি একদম নির্জন, জানালার কাচ ভেঙে গিয়েছে এবং দরজা খোলামেলা, যেন সারা বাড়ি তাদের অপেক্ষা করছে। বাড়িতে প্রবেশ করার পর, তারা গন্ধ অনুভব করলো – মাটি আর পুরনো কাঠের অদ্ভুত গন্ধ।
বাড়ির ভেতর প্রবেশ করার পর, সবার মধ্যে অদ্ভুত একটা অনুভূতি হতে থাকে, যেন কিছু দেখানোর জন্য বাড়ি তাদের ডেকে এনেছে। মুহি প্রথমে একটি বড় আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে, বললো, “এটা কেমন দেখাচ্ছে?" সাদমান আয়নার দিকে তাকিয়ে বললো, “এটা কি ঠিক আছে? আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।”
হঠাৎ, আয়নার মধ্যে কিছু অস্বাভাবিক ঘটতে শুরু করলো। আয়নার মাঝে কুয়াশা ঘনীভূত হতে থাকে এবং ধীরে ধীরে একটা কালো ছায়া তৈরি হয়। মুহি আঁতকে উঠল, সাদমান আর লাবিব র্যাগিবকে ঘিরে দাঁড়াল, সবাই আতঙ্কিত হয়ে একে অপরকে সান্ত্বনা দিতে চেষ্টা করছিল। কিন্তু ততক্ষণে, আয়নার ভেতর থেকে গুমোট কণ্ঠ ভেসে আসে, “এখানে কেন এসেছো?"
চার বন্ধু একে অপরের দিকে তাকায়, কেউই কিছু বলতে পারে না। মুহি সাহস করে বলতে থাকে, "আমরা শুধু দেখেছি, এখানে কোনো ক্ষতি করতে আসিনি।"
তবে হঠাৎ আয়নাটি টুকরো টুকরো হয়ে যায় এবং সমস্ত ঘর অন্ধকারে ডুবতে থাকে। চার বন্ধু দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে, কিন্তু বাড়ির দরজা অদ্ভুতভাবে বন্ধ হয়ে যায়। তারা যেখানে দাঁড়ায়, সেখানে একটি ভয়ঙ্কর শব্দ শোনা যায়, যেন কিছু একটা আকাশ থেকে পড়ছে।
রাগিব ভয়ে চিৎকার করে ওঠে, "আমরা কোথায় আছি! এই জায়গা কি সত্যিই আমাদের আগে থেকে জানানো ছিল?"
এই সময়, তারা লক্ষ্য করে যে, কাচের জানালার সামনে একটা পুরনো ছবি ঝুলছে। ছবিটি দেখে তারা আবার আতঙ্কিত হয়ে যায়, কারণ ছবির ভেতরে সাদমানের মুখ উল্টানো অবস্থায় দেখা যাচ্ছে। সবকিছু ছিঁড়ে ফেললে, সাদমানের মুখটি ফিরে আসে কিন্তু সে যেন আর কোনো মানবিক সত্ত্বা ছিল না, এক অন্ধকার প্রাণী হয়ে উঠেছিল।
পালানোর কোনো পথ নেই, চার বন্ধু একে অপরকে শক্ত করে ধরে রাখে, আর ঠিক তখনি তাদের সামনে এক ভয়ঙ্কর ঝলক দেখা যায়। বাড়ি ধীরে ধীরে তাদের গ্রাস করতে শুরু করে, যেন সেই বাড়ির একমাত্র উদ্দেশ্য তাদের ধ্বংস করা।
শেষমেশ, চার বন্ধু কোনো একটা অদ্ভুত শক্তির কারণে বাইরে বেরিয়ে আসে, তবে তারা জানত, এই রাতের পর পৃথিবী আর আগের মতো থাকবে না। তারা জানতো, যে কিছু এক অজানা ভয়ের শক্তি তাদের কাছে এসেছে, সেটা কখনোই তাদের ছেড়ে যাবে না।