হযরত মূসা (আ.) এর রুহ যখন আল্লাহর দরবারে হাজির করা হয়।
তখন আল্লাহ তায়ালা তাকে জজ্ঞিসে করলনে,
হে মূসা! মৃত্যুর যন্ত্রনা কেমন বোধ করলে।
উত্তরে মূসা (আঃ) বললনে,
একটি জীবন্ত পাখিকে গরম তপ্ত পানির ডেকছিতে ফেললে যমেন হয়,
আমার ঠিক তেমন হয়ছে।
অন্য এক র্বণনায় আছে,
মূসা (আঃ) বলেছেন, যদি কোনো জীবন্ত বকরির চামড়া ছোলা হয়,
তাহলে ঐ বকরীর কাছে যেমন ভীষণ কষ্টকর হবে,
আমারও ঠিক সেরকম অনুভূতি হয়েছে।
একবার হযরত ঈসা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক কবরের নিকট গিয়ে বললনে,আল্লাহর নির্দেশে জীবিত হও।
যখন লোকটি আল্লাহর নির্দেশে জীবিত হলো,
তখন ঈসা (আ.) জিজ্ঞেস করলনে,
তুমি কে? তোমার নাম কি?
তখন লোকটি বলল,
আমার নাম সাম ইবনে নূহ।
হযরত ঈসা (আ.) তাকে আবার প্রশ্ন করলেন যে,
আপনি কি আবারও কবরে থাকতে চান?
নাকি দুনিয়ায় থাকতে চান?
লোকটি হযরত ঈসা (আ.) এর প্রশ্নের জবাবে বললেন,
হে আল্লাহর নবী হযরত ঈসা (আ.), আমি যদি দুনিয়ায় আবার থেকে যাই,
তাহলে কি আগের মৃত্যুর সময় আজরাইল যেমন আমার রুহ কবজ করেছে,
তেমন আবার রুহ কবজ করবে?
তখন আল্লাহর নবী হযরত ঈসা (আ.) কে বললনে,
আপনি আল্লাহর পয়গম্বর,
আপনি কেন আজরাইল (আ.) কে এতটা ভয় করনে?
হযরত ঈসা (আ.) এর প্রশ্নের জবাবে
সাম ইবনে নূহ বলনে, হে আল্লাহর নবী হযরত ঈসা (আ.)
আপনার সাথে তো আর আজরাইলের দেখা হয়নি এজন্য এরকম মন্তব্য করছেন।
হে আল্লাহর নবী হযরত ঈসা (আঃ),
আজ হতে চার হাজার বছর র্পূবে আমার মৃত্যু হয়েছিল,
অর্থাৎ রুহ কবজ করা হয়েছিল।
কিন্তু, আজও আমি আমার সেই মৃত্যুর যন্ত্রণা ভুলতে পারিনি।
মৃত্যুর যন্ত্রণা সর্ম্পকে মহান আল্লাহ তাআলার সর্বশ্রেষ্ঠ আল কোরআন বলেন ,
সেদিন পায়ের সঙ্গে পা জড়িয়ে যাবে,
( সুরা কিয়ামাহ আয়াত -৩০)
আল্লাহ তাআলা আরো বলেছেন,
সেদিন প্রাণ কণ্ঠাগত হব,
(সূরা ওয়াকিয়া আয়াত -৮৩)।
আল্লাহ তাআলা আরও বলেছেন,
কখনো নয়, যখন প্রাণ কণ্ঠাগত হবে এবং
বলা হবে,
কে তোমাকে রক্ষা করবে?
তখন তার প্রত্যয় হবে যে,
এটাই তার বিদায়ক্ষন।
মৃত্যুর যন্ত্রণা ও মৃত্যুর কঠোর কথা মহাগ্রন্থ আল কোরআনে অনেক একাধিক স্থানে এসেছে।
যেমন কোথাও এরশাদ হয়েছে,
যদি তুমি দেখতে,
যখন জালিমগণ মৃত্যুর যন্ত্রণায় পড়বে এবং ফেরেশতাগণ হাত বাড়িয়ে বলবে,
তোমাদের প্রাণ বের কর।
(সূরা আনআম আয়াত -৯৩)
অন্যত্র এরশাদ হয়েছে,
তুমি যদি দেখতে পেতে,
ফেরেশতাগণ কাফেরদের মুখমণ্ডলে
ও পৃষ্ঠদেশে আঘাত করে তাদরে প্রাণ হরণ করছে
এবং বলছে তোমরা দহন যন্ত্রণা ভোগ করো। (সূরা আনফাল আয়াত- ৫০)
মৃত্যুর যন্ত্রণা সম্পর্কে হযরত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হতে অসংখ্য হাদিস ও সাহাবায়ে কেরামদরে হতে বেশ কিছু
মূল্যবান বাণী রয়েছে।
হযরত রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন,
তোমরা বনী ইসরাইলরে বিভিন্ন ঘটনা র্বণনা কর।
কেননা সেখানে তোমাদের জন্য অনকে চমকপ্রদ শিক্ষা রয়েছে।
এরপর হযরত রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই
সেই জাতির বেশ কিছু ঘটনা র্বণনা করতে আরম্ভ করলেন,
বনি ইসরাইলের একটি দল একদা একটি কবরস্থানের নিকট এসে পরস্পর বলাবলি করতে লাগলো,
আমরা দুই রাকাত নামাজ আদায় করে মহান আল্লাহর কাছে আবেদন করবো,
তিনি যেন কবর হতে কোন একজনকে
আমাদের মুখোমুখি করার ব্যবস্থা করে দেন,
তাহলে আমরা তার কাছ থেকে মৃত্যুর অবস্থা যেনে নিতে পারবো।
যদি আমরা এ কাজটি করতে পারি তাহলে তা আমাদের জন্য অনেক উপকারী হবে।
এরপর তার দুই রাকাত নামাজ আদায় করে আল্লাহর দরবারে আরজি জানালো,
ইত্যবসরে একজন কালো বর্ণের র্মুদা কবর থেকে উঠে আসলো,
লোকটার কপালে সেজদা নিশান পড়া ছিল।
সে বলল, তোমরা আমার কাছে কি জানতে চাও?
একশত বছর র্পূবে আমার মৃত্যু হয়েছিল,
কিন্ত, এখন পর্যন্ত আমি মৃত্যুর যন্ত্রণা ভুলতে পারিনি।
তোমরা আমার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করবে তিনি যেন আমাকে র্পূবরে মতো করনে।
হযরত সাদ্দাত ইবনে আউস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে,
করাত দিয়ে চিরলে বা কাচি দিয়ে চামড়া ছিললে বা তপ্ত পানির পাতিলে ফেললে
সে পরিমাণ কষ্ট বোধ হবে না,
যে পরিমাণ মৃত্যুর সময় বোধ হবে।
হযরত আনাস ইবনে মালেক (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন হযরত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালাম এরশাদ করেছেন,
মালাকুল মউতের থাবা এক হাজার তরবারির আঘাত হতেও কঠিন হবে।
ইমাম গাযালী (রাঃ) বলেছেন,
রুহ কবজের প্রক্রিয়া ব্যক্তির পায়ের দিক থেকে শুরু হয়ে অন্যান্য অঙ্গে ছড়িয়ে পরে।
প্রথমে পায়ের রূহ, এরপর পায়ের কব্জি
বা গোছা, এরপরে উরুদেশ এরপর বক্ষদেশে এসে রূহ আটকে যায়।
তখন মানুষের বাকশক্তি লোপ পায়,
এরপর রুহ কন্ঠনালীতে পৌঁছে যায়,
তখন সে দেখতে পায় না এবং
শুনতওে পায় না।
আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদের সকলকে মৃত্যুর কঠিন যন্ত্রণা হতে রক্ষা করেন। (আমিন ছুম্মা আমীন)