Posts

উপন্যাস

””গায়ক পাখি””

February 15, 2025

Israt Jahan

Original Author Israt Jahan

Translated by Zara

34
View

একসময়ের কথা, এক দূরের রাজ্যে একটি ছোট গ্রাম ছিল, যার নাম ছিল "প্রজ্ঞাপুর"। এই গ্রামটি ছিল অত্যন্ত শান্ত ও সুন্দর, কিন্তু এখানকার মানুষদের মধ্যে একটি সমস্যা ছিল—তারা জ্ঞান ও শিক্ষাকে তেমন গুরুত্ব দিত না। তারা শুধু নিজেদের দৈনন্দিন কাজে ব্যস্ত থাকত, বই পড়া বা নতুন কিছু শেখার প্রতি তাদের কোনো আগ্রহ ছিল না।

একদিন, গ্রামের পাশের ঘন জঙ্গল থেকে একটি অদ্ভুত পাখি উড়ে এলো। তার নাম ছিল "জ্ঞানী"। এই পাখিটির পালক ছিল সোনালি রঙের, এবং তার চোখে যেন অসীম জ্ঞানের আলো ঝলমল করত। জ্ঞানী পাখিটি গ্রামের মাঝখানে একটি বিশাল গাছে বাসা বাঁধল। সে প্রতিদিন সকালে গান গাইত, কিন্তু তার গান সাধারণ গান ছিল না। তার গানের মাধ্যমে সে মানুষদের জ্ঞান, ইতিহাস, বিজ্ঞান, এবং নৈতিকতার গল্প শোনাত।

প্রথমে কেউই পাখির গান শুনত না। তারা মনে করত, এটা শুধুই একটি পাখির শব্দ। কিন্তু একদিন, গ্রামের একটি ছোট মেয়ে, যার নাম ছিল মিতু, পাখির গান শুনতে পেল। সে গানটির অর্থ বুঝতে পারল এবং মুগ্ধ হয়ে গেল। মিতু প্রতিদিন পাখির গান শুনতে শুরু করল এবং তার মাধ্যমে নতুন নতুন জ্ঞান অর্জন করতে লাগল।

মিতু তার বন্ধুদের বলল, "এই পাখির গানে অনেক রহস্য লুকিয়ে আছে। আমরা যদি মনোযোগ দিয়ে শুনি, তাহলে অনেক কিছু শিখতে পারব।" ধীরে ধীরে, আরও কয়েকজন শিশু পাখির গান শুনতে শুরু করল। তারা জ্ঞানী পাখির কাছ থেকে শিখল কিভাবে প্রকৃতির সাথে বন্ধুত্ব করতে হয়, কিভাবে একে অপরের সাহায্য করতে হয়, এবং কিভাবে জীবনে সত্যিকারের সাফল্য অর্জন করতে হয়।

কিছুদিন পর, গ্রামের বড়রাও পাখির গানে আগ্রহী হয়ে উঠল। তারা বুঝতে পারল যে জ্ঞান ছাড়া জীবন অসম্পূর্ণ। তারা বই পড়া শুরু করল, নতুন দক্ষতা শিখল, এবং একে অপরের সাথে জ্ঞান বিনিময় করতে লাগল। গ্রামটি ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হতে শুরু করল। প্রজ্ঞাপুর গ্রামটি শুধু শান্তই নয়, বরং জ্ঞানী ও উন্নত হয়ে উঠল।

জ্ঞানী পাখি একদিন মিতুকে বলল, "তোমরা এখন জ্ঞান ও শিক্ষার মূল্য বুঝেছ। আমার কাজ শেষ। আমি এখন অন্য একটি জায়গায় যাব, যেখানে মানুষের জ্ঞানের প্রয়োজন।" মিতু ও গ্রামবাসীরা পাখিকে ধন্যবাদ জানাল এবং তার বিদায়ের সময় চোখের জল রাখতে পারল না।

সেই দিন থেকে, প্রজ্ঞাপুর গ্রামটি জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হয়ে উঠল। মিতু ও তার বন্ধুরা বড় হয়ে গ্রামের শিক্ষক ও নেতা হয়ে উঠল। তারা সবাই বুঝতে পেরেছিল যে জ্ঞানই হল জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ।

এই গল্পটি আমাদের শেখায় যে জ্ঞান ও শিক্ষা ছাড়া জীবন অসম্পূর্ণ। জ্ঞানের আলোয় আমরা আমাদের চারপাশকে আলোকিত করতে পারি এবং একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারি।


 

Comments

    Please login to post comment. Login