Posts

গল্প

The Book Of Darkness

February 17, 2025

MY DREAM STORY

106
View

#The_Book_of_Darkness 
Episode 1

রাতের ঢাকাতে তখনও উত্তাপ ছিল, যদিও সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হয়ে এসেছে। শহরের ব্যস্ততা কিছুটা কমলেও, পুরনো ঢাকার গলিতে একটা অদ্ভুত নীরবতা ছিল। আশেপাশের দোকানপাট বন্ধ, রাস্তায় তেমন কোনো মানুষ ছিল না। একদম নিস্তব্ধতা।

অধীর মনে হয়, সে কেন এমন রাতে একা বের হয়েছে—কোনো কারণ ছাড়াই। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শেষ হওয়ার পর কিছু সময়ের জন্য তার মনে হয়েছিল, বাড়ি ফিরে বিশ্রাম নেবে, কিন্তু কিছু একটা তাকে বারবার বাইরে টেনে নিয়ে আসছিল। প্রতিটি পদক্ষেপের সাথে, এক অদ্ভুত চাপ অনুভব করছিল তার বুকের ভেতর।

এটা ছিল সেই পুরনো লাইব্রেরি, যেখানে সে প্রায়ই সময় কাটাতো। যদিও কয়েক বছর ধরে এখানে কেউ আসেনি, অধীর জানত, এই জায়গাটা একটা রহস্যের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে রয়েছে। বইগুলো পুরনো, পৃষ্ঠাগুলো ছিঁড়ে গেছে, কিন্তু সবসময় তার মধ্যে কিছু একটা ছিল যা তাকে প্রতিবার আকৃষ্ট করত।

বাইরের বাতাস শীতল হয়ে উঠেছিল, তবে লাইব্রেরির ভেতরে ঢুকলে যেন পুরনো গরম অনুভূতি ফিরে আসতো। অধীরের কাঁধের ওপর বইয়ের ভার ছিল, কিন্তু তার মন কোথাও হারিয়ে গিয়েছিল। একটি বিশেষ বইয়ের জন্য সে এখানে এসেছে, সেটা সে জানত।

প্রবেশদ্বারে পৌঁছিয়ে, অধীরের হাত ধীরে ধীরে এক পুরনো কাঠের দরজায় চলে গেল। দরজাটা অল্প ঠেলে দিলে সেটা ভেতরে ঢুকে পড়ল। তীক্ষ্ণ শব্দ হলো, যেন বহুদিন পর দরজাটি খোলা হল। তারপর ধীরে ধীরে ভেতরে চলে গেল।

ধোঁয়ার মতো কিছু একটা কুয়াশা ভেতরটা ঢেকে রেখেছিল। আলো আসছিল না, কিন্তু সেই অদ্ভুত বইয়ের শক্তি যেন অধীরকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল।

অধীর জানত না, কী হচ্ছিল—কিন্তু জানত, সে যেন জানত যে এই লাইব্রেরির কোন না কোন কোণায় তার জন্য কিছু অপেক্ষা করছে। এক কোণে পুরনো বইয়ের তাক ছিল, যেখানে একধরণের অদ্ভুত নীরবতা বিরাজ করছিল।

তার চোখ থেমে গেল এক বইয়ের দিকে, যে বইটির মলাট ছিল একদম কালো। এমন কালো, যা আকাশের গভীর রাতের মতো, এমনকি আলোকে শুষে নিত। এই বইটি যেন নিজেই এক অন্ধকারের প্রবাহ ছিল, যা অধীরের চোখে চোখে জ্বলছিল।

সে এগিয়ে গেল। প্রথমে তার হাত একটু কাঁপছিল, কিন্তু তার মন বলছিল, এটা শুধু একটা বই নয়। এটা একটি শক্তি। এক ভয়ানক শক্তি।

অধীরের মনে হচ্ছিল, কিছু একটা ঘটতে চলেছে, কিন্তু সে নিজেও জানত না কী। সে বইটি হাতে নিল। তৎক্ষণাৎ তার শরীরে শীতল এক স্রোত বয়ে গেল। তার শরীরের প্রতিটি কোষ যেন জেগে উঠল। তাঁর মাথার ভেতর অজস্র চিন্তা ঢুকে গেল। তার মনে হলো, বইটি তার ভিতর ঢুকে গেছে—এবং সে আর সেভাবে সাড়াশব্দ পায় না।

বইটির পৃষ্ঠাগুলি একে একে উল্টানো শুরু হল, যেন নিজের অজান্তে সে সেটি করতে লাগল। বইটির মধ্যে লেখা ছিল অদ্ভুত এক ভাষায়, যে ভাষাটি অধীর কখনো শোনেনি।

হঠাৎ, একটি শব্দ ভেসে উঠল—

"তুমি প্রস্তুত তো?"

অধীর পা মচকে পড়ল। বইটি তার হাত থেকে আরও দৃঢ়ভাবে শক্তি নিয়ে যেন তাকে আটকিয়ে রাখল। তার মাথা ফেটে যাওয়ার মতো এক তীব্রতা অনুভব করতে লাগল।

বইয়ের পৃষ্ঠা আবার উল্টে গেল এবং একটি নতুন লেখার প্রকাশ ঘটল—

"শক্তি চাও, তবে মূল্য দিতে হবে। তুমিই এখন বইয়ের উত্তরাধিকারী, তবে শুধুমাত্র যদি তুমি এই শক্তির প্রাথমিক পরীক্ষা পাস করতে পারো।"

এটি যেন একটা সতর্কবার্তা, একটা চ্যালেঞ্জ। অধীর তীব্রভাবে শ্বাস নিল, তার চোখ জ্বলজ্বল করতে লাগল। তার কাছে মনে হচ্ছিল, কোন এক অদৃশ্য শক্তি তার চারপাশে ঘুরছে, যেন তার প্রতিটি চলাচল লক্ষ্য করা হচ্ছে।

সে জানত, এই বই তার জীবনের এক অন্ধকার অধ্যায় শুরু করছে। এবার তাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে—এ শক্তি গ্রহণ করবে, নাকি সরে যাবে, এই অন্ধকার থেকে নিজেকে মুক্ত রাখবে?

দ্বিধা থাকলেও, তার চোখে একটা স্থিরতা ছিল। সে জানত, যে কোনো পরিস্থিতিতে, সে শুধু একটাই সিদ্ধান্ত নিতে পারে—এ শক্তিকে গ্রহণ করতে হবে।

---

রাত আরও গভীর হয়েছে। শহরের কোলাহল থেকে অনেক দূরে, পুরনো লাইব্রেরির ভেতর, অধীরের নিঃশ্বাস দ্রুত চলছিল। তার চোখের সামনে বইয়ের পৃষ্ঠাগুলো ধীরে ধীরে উল্টে যাচ্ছিল, যেন কোনও এক অদৃশ্য শক্তি সেগুলো স্পর্শ করছিল। প্রতিটি শব্দ, প্রতিটি বাক্য এক অদ্ভুত জাদুময় আলোয় জ্বলজ্বল করছিল, যদিও বইয়ের আশেপাশে কোনো আলোর উৎস ছিল না।

তার চারপাশের বাতাস ভারী হয়ে উঠছিল।

কেন যেন মনে হচ্ছিল, এই মুহূর্ত থেকে সে আর আগের মতো থাকবে না।

হঠাৎ, বইয়ের প্রথম পৃষ্ঠায় একটি অজানা প্রতীক উদ্ভাসিত হলো। প্রতীকটি আগে স্থির ছিল, কিন্তু এখন তা যেন ধীরে ধীরে নড়ছিল, শ্বাস নিচ্ছিল। এক মুহূর্তের জন্য মনে হলো, সেটি জীবন্ত!

অধীরের হাত নিজে থেকেই প্রতীকটির ওপর চলে গেল।

ঠিক তখনই চারপাশের পৃথিবী বদলে গেল।

সে অনুভব করল, তার চারপাশের লাইব্রেরি উধাও হয়ে যাচ্ছে।

অন্ধকার এক জগতে সে তলিয়ে যাচ্ছে, যেখানে সময়ের অস্তিত্ব নেই। শূন্যতার মাঝে সে ভাসছিল, আর তার সামনে একটা ছায়া গড়ে উঠছিল।

একটি ফিসফিসে কণ্ঠ বাতাসে ধ্বনিত হলো—

"তুমি কি সত্যিই প্রস্তুত?"

অধীর শ্বাসরুদ্ধ হয়ে পড়ল।

সে তাকিয়ে দেখল, অন্ধকারের মাঝখান থেকে এক ভয়ঙ্কর অবয়ব তার দিকে এগিয়ে আসছে। তার মুখ দেখা যাচ্ছিল না, শুধু দুটি চোখ লাল আগুনের মতো জ্বলছিল।

"তুমি এই শক্তি ধারণ করতে চাও, কিন্তু তুমি কি জানো, এর মূল্য কত?"

অধীর বুঝতে পারল, এটা কোনো সাধারণ বই নয়। এই বই কেবল তার জ্ঞান বা শক্তি বাড়াবে না—এটি তাকে পরীক্ষা করবে, হয় তাকে শক্তিধর করবে, নাহলে তাকে শেষ করে দেবে।

কণ্ঠস্বর আবার শোনা গেল—

"প্রথম পরীক্ষা: ভয়কে জয় করো। যদি ব্যর্থ হও, তবে তুমি এখানে চিরতরে হারিয়ে যাবে।"

বাতাস থমকে গেল।

অধীরের চারপাশে ছায়ারা নড়াচড়া করছে, তার মনে হচ্ছিল, এগুলো তার চারপাশ থেকে তাকে গ্রাস করতে আসছে।

তার মনে ভয় ঢুকে যাচ্ছিল। কিন্তু তার অন্তরের গভীরে একটা কণ্ঠস্বর বলছিল—

“ভয় পেও না… ভয়কে গ্রহণ করো…”

তার শরীর হালকা হয়ে গেল, মাথার মধ্যে অসংখ্য চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছিল।

সে অনুভব করল, সে যদি ভয় পায়, তবে এই ছায়ারা তাকে টেনে নিয়ে যাবে। কিন্তু যদি সে ভয়কে গ্রহণ করে, তবে হয়তো…

সে চোখ বন্ধ করল, গভীর শ্বাস নিল।

ছায়ারা তার চারপাশ ঘিরে ফেলেছিল, শীতল হাওয়া তার ত্বক কাঁপিয়ে দিচ্ছিল।

তারপর…

সে চোখ খুলল, সরাসরি ছায়ার চোখে তাকাল।

এক মুহূর্তের জন্য সবকিছু স্তব্ধ হয়ে গেল।

তার মন শান্ত ছিল।

তার হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক হয়ে গেল।

ঠিক তখনই, চারপাশের অন্ধকারের মাঝে একটা বিশাল বিস্ফোরণ ঘটল!

ছায়ারা হঠাৎই পিছু হটতে শুরু করল, আর সেই কণ্ঠস্বর আবার শোনা গেল—

"তুমি ভয়কে জয় করেছো। এবার দ্বিতীয় ধাপ শুরু হবে।"

অধীরের চারপাশে আলো ঝলসে উঠল।

তার শরীর ভারী হয়ে গেল, মনে হলো, সে মাটিতে পড়ে যাচ্ছে।

তারপর…

সে আবার লাইব্রেরিতে ফিরে এল।

কিন্তু এবার কিছু পরিবর্তিত ছিল।

তার হাতের তালুর মধ্যে সেই প্রতীকটি এখনো উজ্জ্বল হয়ে জ্বলছে।

তার মাথার মধ্যে অসংখ্য তথ্য এসে ঢুকছিল।

এটা ছিল তার প্রথম জাদু—"মনের শক্তি বৃদ্ধি"।

অধীর জানত না, কতদূর যেতে হবে তাকে।

কিন্তু এটা ছিল কেবল শুরু।

এখন, সে আর একজন সাধারণ মানুষ নয়।

সে The Book of Darkness এর উত্তরাধিকারী।

---

অধীরের মস্তিষ্কে এখন অনেক প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল। লাইব্রেরির মধ্যে ফিরে এসে, সে নিজেকে অনুভব করছিল এক অদ্ভুত পরিবর্তনের মধ্যে। তার শরীরের প্রতিটি কোষ যেন নতুন কোনো শক্তির সমাহার হয়ে উঠেছে। সে জানত, এই বইয়ের শক্তি তাকে বদলে দিয়েছে, কিন্তু কতটা বদলেছে, সেটা সে এখনই বুঝতে পারছিল না।

কিছুক্ষণের জন্য সে লাইব্রেরির পুরনো কাঠের চেয়ারে বসে পড়ল। বাইরে রাত বাড়ছিল, এবং ঢাকার অদ্ভুত গুমোট পরিবেশ ঘরে ঢুকে পড়ছিল। কিন্তু তার মন শান্ত ছিল। হ্যাঁ, শান্ত, যেহেতু সে জানত যে ভয়কে জয় করার পর তার ভিতর এক ধরনের দৃঢ়তা সৃষ্টি হয়েছে।

তবে, ভয় তার পিছু ছাড়েনি। এই শক্তি গ্রহণ করার পর তার মনে একটা অস্বস্তি ছিল, যেন কোনো কিছু তার দিকে আসছে, তাকে ধ্বংস করার জন্য।

বইটি তার পাশে রেখে অধীর আবার চোখ বন্ধ করল। অদ্ভুতভাবে, বইটি যেন তাকে আবার ডেকে নিচ্ছিল। তার মাথার ভেতর আবার সেই ফিসফিসে কণ্ঠ আসতে শুরু করল—

"তুমি এখন আরো শক্তিশালী, অধীর। কিন্তু তোমার পথ মোটেও সহজ হবে না। দ্বিতীয় পরীক্ষা তোমার জন্য অপেক্ষা করছে..."

এবার, কণ্ঠটি আরও ঝাঁঝালো ছিল। অধীর অনুভব করল, তাকে আর কোন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। তার নতুন ক্ষমতা এবং শক্তি তার অজান্তেই তাকে একটি অন্ধকার জগতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন ছিল—এই শক্তির মূল্য কত?

হঠাৎ, বইয়ের পৃষ্ঠা একে একে উল্টানো শুরু হল। এবার সেগুলোর মধ্যে কিছু অদ্ভুত, রহস্যময় চিত্র ফুটে উঠছিল। বইটি নিজে যেন কোনো জীবন্ত অস্তিত্ব ছিল, যার শক্তি মানুষকে টেনে নিয়ে যায় অনন্ত অন্ধকারে।

অধীর এক মুহূর্তে বইটির মধ্যে হারিয়ে গেল, পুরোপুরি। একের পর এক স্পেল তার মস্তিষ্কে ঢুকতে শুরু করল। প্রথমেই, তার মনে হলো, সে বুঝতে পারছে স্পেলগুলোর ভাষা, যেন এসব তার জন্য প্রাকৃতিক ছিল।

"প্রথম স্পেল: মাইন্ড রিডিং"

সে অনুভব করল, তার চারপাশের পৃথিবী বদলে গেছে। যেকোনো মানুষের মন সে পড়তে পারছে। তার চোখের সামনে যেন সবার চিন্তা একে একে উন্মোচিত হতে লাগল।

তবে, এটা যে শুধু একটি ক্ষমতা নয়, তা বুঝতে সে সময় নিল। তার হাতে যদি এতটুকু শক্তি থাকে, তবে সেটা কখনো ভালো, কখনো খারাপ হতে পারে। যে কেউ তার মনের গভীরে প্রবেশ করতে চাইলে, সে তাকে কোনো বাধা ছাড়া গ্রহণ করতে পারে। কিন্তু, সে যদি নিজের আত্মাকে হারিয়ে ফেলে, তখন?

সামনের পথটা সত্যিই কঠিন হতে যাচ্ছে।

বইয়ের পৃষ্ঠায় আরও এক পৃষ্ঠা উল্টে গিয়ে একটি নির্দেশনা দেখা গেল—

"তোমার ক্ষমতা এখনও পুরোপুরি মুক্ত হয়নি। তোমাকে সামনে যেতে হবে, এক অভিশপ্ত জগতে। দ্বিতীয় পরীক্ষা তোমার সামনে।"

এবার অধীরের মন প্রস্ততি নিতে শুরু করল। সে জানত, বইয়ের শক্তি তাকে পেয়ে গেছে, কিন্তু এর সাথে একটা অদৃশ্য অশুভ শক্তিও তার জীবন থেকে টেনে নিচ্ছে। সে নিজের পক্ষে শক্তি পাচ্ছিল, কিন্তু বইটি তার আধ্যাত্মিকতা এবং চিন্তার মধ্যে একটা অন্ধকার ছায়া ফেলছিল।

---

অধীরের শরীরের মধ্যে অদ্ভুত এক অনুভূতি জাগ্রত হয়েছিল। সে বইটির শক্তি অনুভব করছিল, কিন্তু কি সেই শক্তি—এখনো তা পুরোপুরি জানত না। বইয়ের প্রতিটি পৃষ্ঠা যেন তাকে এক গভীর গর্তে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল, যেখানে অন্ধকারের শক্তি তাকে ধীরে ধীরে গ্রাস করে ফেলছিল। সে কিভাবে তার আত্মাকে রক্ষা করবে? সে জানত না।

পরের দিন, সকালে, অধীর তার ঘরের জানালা দিয়ে বাইরের দৃশ্য দেখছিল। ঢাকা শহরের নীরবতা এক অদ্ভুত কোলাহলে পরিণত হচ্ছিল। তার মনে হচ্ছিল, যেন পৃথিবীটি বদলে যাচ্ছে, বা পরিবর্তন হয়ে গেছে।

তবে, সবচেয়ে বড় পরিবর্তনটা ছিল তার নিজের মধ্যে। তার মস্তিষ্কে শক্তি প্রবাহিত হচ্ছিল, যা তাকে আগের চেয়ে অনেক বেশি তীক্ষ্ণ ও ক্ষমতাবান করে তুলছিল। কিন্তু প্রতিটি নতুন শক্তির সঙ্গে বাড়ছিল বিপদের সম্ভাবনা।

বইটি তাকে যা বলেছিল, তা যেন বাস্তবে রূপ নিতে শুরু করছিল।
"তুমি যতই শক্তিশালী হবে, ততই অন্ধকার তোমার দিকে এগিয়ে আসবে..."

অধীর জানত, তাকে এবার ঐ শক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, নাহলে সে নিজের অস্তিত্বই হারাবে। কিন্তু একেই তো সে বুঝতে পারছিল না, এই বই কি তাকে সত্যিই শক্তি দিচ্ছে, নাকি এটিই তার শেষ রাস্তাটি?

বইয়ের পরবর্তী স্পেল খুলতে সে প্রস্তুত ছিল।
"ইউনিভার্স পোর্টাল" — ভিন্ন ভিন্ন ইউনিভার্সে যাতায়াত করার ক্ষমতা, যা সে ইতিমধ্যেই শিখে নিয়েছে। এবার তার সামনে ছিল এক নতুন সুযোগ—ভিন্ন ভিন্ন জগতের মধ্যে যেতে। কিন্তু এই ক্ষমতার বিপদও ছিল।

তার মাথায় এক সময় একটি চিন্তা উঁকি দিল: এটি কি কেবল তার শক্তি বৃদ্ধি করার জন্য, নাকি শত্রুদের আরো বেশি শক্তিশালী করে তুলতে?

এটা তার প্রথম স্পেল চয়েস, এবং পরবর্তীতে এক অদ্ভুত দৃশ্য ঘটল। অধীর যখন "ইউনিভার্স পোর্টাল" ব্যবহার করার চেষ্টা করছিল, তখন সে দেখতে পেল, অন্ধকারে কিছু বড় বড় ছায়ামূর্তি তার দিকে এগিয়ে আসছে। এগুলো তাকে আক্রমণ করবে কি না, তা জানার জন্য সে প্রস্তুত ছিল না।

এক মুহূর্তের জন্য, তার দেহ আকাশে উঁচু হয়ে উঠল। পায়ের তলার মাটি শূন্য হয়ে গেল। চারপাশের বিশ্বটিও পরিবর্তিত হতে থাকল।

সে চোখ খুলতেই দেখল, এক অদ্ভুত বিশ্বের মধ্যে প্রবেশ করেছে। এখানে আকাশ ছিল গা dark ়, মেঘগুলি অদ্ভুতভাবে গড়ে উঠছিল, আর নিচে বিশাল বিশাল দানবদের মত তাপমান উঁকি মারছিল। অধীর বুঝতে পারল, সে এখন এক নতুন ইউনিভার্সে প্রবেশ করেছে—এটি ছিল তার দ্বিতীয় পরীক্ষা।

এখানে, সবকিছু অন্যরকম। দানবেরা তাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে ছিল, তাদের চোখে তীব্র ক্রোধ ছিল। অধীর জানত, তাকে এখন লড়াই করতে হবে। কিন্তু প্রশ্ন ছিল—কীভাবে? তার নতুন ক্ষমতাগুলি কি যথেষ্ট হবে?

তবে, সে ভাবল, তাকে পিছু হটলে লাভ হবে না। তার সামনে ছিল ভয়ঙ্কর দানবদের একটি দল, যারা তাকে ঘিরে ফেলেছিল। তবে অধীর জানত, ভয়কে জয় করেই তার পথ চলতে হবে।

তবে, বইয়ের শক্তি কি তাকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে, নাকি তার হারানোর সম্ভাবনা বাড়াবে?

এখন অধীরকে একটি কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে—এই অন্ধকার জগতের ভয়াবহতা থেকে কি সে নিজেকে বাঁচাতে পারবে?

---

পরবর্তী পর্বে:...---

The Book of Darkness – Episode 4

---

অধীরের শরীর অদ্ভুতভাবে টালমাটাল হতে থাকল। তার সামনে যেই দানবগুলি দাঁড়িয়ে ছিল, তাদের তীব্র চোখের মধ্যে যেন এক অজানা ভয় ছিল, যা তার মনকে আরও বিভ্রান্ত করে তুলছিল। তারা একে অপরের দিকে তাকাচ্ছিল, যেন অধীরের প্রতি কোনো নির্দেশনা ছিল—যে নির্দেশনা তাকে মরণযাত্রায় নেবে।

অধীর নিজের বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নিল। সে জানত, তাকে দ্রুত কোনো উপায় বের করতে হবে। সে বইটির শক্তি বুঝতে না পারলে, এই পৃথিবীকে তার হাতছাড়া হয়ে যেতে পারত।

"তুমি যদি বাঁচতে চাও, তাহলে এই শক্তি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে," বইটি আবার ফিসফিস করে বলল।

অধীর বুঝতে পারল, এটি তার একমাত্র পথ—শক্তির নিয়ন্ত্রণ। কিন্তু, এই শক্তি গ্রহণ করা সহজ ছিল না। তার মস্তিষ্কে তখন হাজারটা প্রশ্ন, হাজারটা চিন্তা ঘুরছিল—এটা কি অভিশাপ হতে যাচ্ছে?

সে এবার বইয়ের একটি নতুন স্পেল পরীক্ষা করতে চাইল—"স্পেল কম্বাইন"। বইয়ের ভিতরে এটি ছিল এক অজানা শক্তির মিশ্রণ, যা একাধিক স্পেলকে একত্রিত করে শক্তিশালী আক্রমণ সৃষ্টি করতে পারে। তার সামনে থাকা দানবগুলির প্রতি আক্রমণ করার জন্য এটিই ছিল তার একমাত্র উপায়।

সে বইটি খুলে কিছু পাতা উল্টাতে শুরু করল। বইটির পৃষ্ঠাগুলি শুষ্কভাবে কাঁপছিল, যেন বইটি নিজে থেকেই কোনও শক্তি সংগ্রহ করছিল। সে তার হাত মেলে দিয়ে এই স্পেলটি শুরু করল। হঠাৎ, তার শরীরের মধ্যে এক অদ্ভুত শক্তি সঞ্চারিত হতে লাগল। তার চারপাশে অন্ধকার পরিবেশ ছড়িয়ে পড়ল এবং সোজা আকাশে এক বিশাল স্ফীত আলো উদিত হল।

"এটা কি সম্ভব?" অধীর মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে চিন্তা করল, যখন একটি বিশাল শক্তিশালী আক্রমণ তার হাতে একত্রিত হতে শুরু করল।

তার মনোবল আগের চেয়ে অনেক বেশি ছিল। সে এবার দানবগুলির দিকে তাকাল, আর একটি অস্বাভাবিক শক্তির তরঙ্গ তাদের দিকে ছেড়ে দিল। দ্রুত তারা ধ্বংস হতে লাগল। এর আগে কখনও অধীর এমন শক্তি অনুভব করেনি।

কিন্তু একে একে যখন দানবরা শেষ হতে থাকল, তখন অধীর লক্ষ্য করল, তাদের মধ্যে কিছু অদ্ভুত চিহ্ন রয়ে গেছে—মৃত্যুর পরেও তাদের শরীরে তীব্র শক্তির প্রবাহ ছিল। এটি যে শক্তি নিয়ন্ত্রণ করার বিষয়ে কিছু বড় বিপদ ডেকে আনছে, তা সে বুঝতে পারছিল।

হঠাৎ, তার সামনে একটি অন্ধকার অাকৃতি দেখা দিল। এটি ছিল ভয়ঙ্কর, একটি ডার্ক ওয়ারলর্ড, যার মুখটা অস্পষ্ট ছিল, কিন্তু তার চেহারা শক্তিশালী এবং ভয়াবহ ছিল।

"তুমি, অধীর," ডার্ক ওয়ারলর্ড হেসে বলল, "তুমি সেই বইয়ের রক্তচিহ্ন ধারণ করেছ। কিন্তু তুমি জানো কি, এর মূল্য কতটা ভীষণ?"

অধীর এক পা পিছিয়ে যেতে চাইল, কিন্তু তার মস্তিষ্কে অসংখ্য প্রশ্ন উঁকি মারছিল। এই ডার্ক ওয়ারলর্ড জানে কী?

"তুমি যে শক্তি পাচ্ছো, তা অন্যদের হাত থেকে পালাতে চাও, কিন্তু তুমি জানো না, এই বই তোমাকে কোথায় নিয়ে যাবে। তোমার শক্তি শেষ হলে, তুমি এক গভীর অতল গর্তে পড়বে।"

এই ভয়ঙ্কর কণ্ঠাধ্বনি অধীরকে সংকটের মধ্যে ফেলে দিল। সে জানত, তাকে এক কঠিন লড়াইয়ের মধ্যে প্রবেশ করতে হবে, কিন্তু কি তার সামনে আসছে, তা সে বোঝার চেষ্টা করছিল। তবে, সে বুঝতে পারছিল না, এত বড় শক্তি কি তাকে ধ্বংস করতে পারবে, নাকি সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে সে এই ভয়ংকর শত্রুকে পরাস্ত করতে পারবে?

ডার্ক ওয়ারলর্ডের হাসি আরও গভীর ও শীতল হয়ে উঠল। সে ধীরে ধীরে অধীরের দিকে এগিয়ে আসতে লাগল, যেন একটি দুর্দান্ত ঝড়ের মতো।

"তুমি যদি এই শক্তির আসল রহস্য জানতে চাও, আমাকে অনুসরণ করো। আমি তোমাকে তোমার দুর্বলতা দেখাবো।"

অধীর এবার বুঝতে পারল, এই লড়াই যে শুধু তাকে জীবিত রাখার জন্য নয়, বরং এই বইয়ের অন্তর্নিহিত রহস্য উন্মোচন করার জন্যও। তার সামনে ভয়ংকর শত্রু আসছে, কিন্তু সে কীভাবে এই অন্ধকার জগতের রহস্যকে উদ্ধার করবে, তাও এখন পর্যন্ত স্পষ্ট হয়নি।

এটা ছিল তার এক গুরুত্বপূর্ণ মোমেন্ট, যেখানে তার বুদ্ধিমত্তা এবং শক্তির পরীক্ষা হবে—এখন তাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে: অন্ধকারের প্রতি নত হওয়া, না সেখান থেকে মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করা?

---

পরবর্তী পর্বে:...

Comments

    Please login to post comment. Login