Posts

গল্প

the book of Darkness episode 2

February 17, 2025

MY DREAM STORY

86
View

#The_Book_of_Darkness –
#Episode_2
 

ডার্ক ওয়ারলর্ডের শীতল হাসি অধীরের মনকে আরো বিভ্রান্ত করে তুলল। তার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা এই অদ্ভুত অস্তিত্বের শক্তি স্পষ্ট ছিল। অধীর জানত, এই চরিত্রটি যে সহজে হারবে না, সেটা স্পষ্ট। কিন্তু সে আর পিছিয়ে যেতে পারে না। যদি তাকে সত্যিকার অর্থে এই শক্তির রহস্য উন্মোচন করতে হয়, তাকে আগাতে হবে, না হলে তাকে নিজের আত্মার মূল্য চোকাতে হতে পারে।

"তুমি আমাকে অনুসরণ করো, অধীর।" ডার্ক ওয়ারলর্ড বলল। তার কণ্ঠ যেন এক অন্ধকার গভীরতা থেকে উঠে আসছিল, যা অধীরকে এক বিভীষিকা অনুভূতির মধ্যে ফেলছিল।

অধীর, কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে, বুকের ভেতর অদ্ভুত এক ঝাপটা অনুভব করল। যদি সে এই অন্ধকার পথ অনুসরণ করে, তাহলে তার জীবনের পরিণতি কী হতে পারে? কিন্তু এখন তাকে কোনো বিকল্প পথ দেখতে পাচ্ছিল না।

"তুমি সত্যিই জানো না তোমার সামনে কী আসছে," ডার্ক ওয়ারলর্ড আবার বলল, "তবে আমি তোমাকে একটি উপহার দেব—একটি শক্তি, যা তোমার পুরো পৃথিবীকে বদলে দিতে পারে।"

অধীর কিছু সময় নীরব রইল, তার মস্তিষ্ক দ্রুত চিন্তা করতে লাগল। সে জানত, এই শক্তির পরিণতি অন্ধকার হতে পারে, কিন্তু অন্যদিকে, যদি সে এই সুযোগ হারায়, তাহলে হয়তো কখনোই তা আর ফিরে পাবে না।

"আমি তোমার সঙ্গে আসব," অধীর অবশেষে বলল, তার কণ্ঠে অদ্ভুত এক দৃঢ়তা ছিল, যদিও তার মনের মধ্যে ভয় ছিল।

ডার্ক ওয়ারলর্ড এক ঝলক হাসল। "সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছ, অধীর। তবে মনে রেখো, তোমার ক্ষমতা বাড়তে থাকবে, কিন্তু এর বিপদও বাড়বে। তুমি চাইলে শক্তি পেতে পার, তবে একে নিয়ন্ত্রণে রাখাও তোমার একমাত্র কাজ।"

এ কথা বলে, ডার্ক ওয়ারলর্ড একটি অদ্ভুত ভোরের মতো আলোর ঝলক দিয়ে একটি অদৃশ্য পোর্টাল খুলে ফেলল। অধীর এক মুহূর্ত দ্বিধায় পড়েছিল, তবে তার কোনো আর উপায় ছিল না। সে জানত, তাকে কিছু একটা করতেই হবে—এই অন্ধকারের শক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করেই তাকে পৃথিবীকে রক্ষা করতে হবে।

পোর্টালটি পার হয়ে অধীর, ডার্ক ওয়ারলর্ডের সাথে এক অদ্ভুত দুনিয়ায় প্রবেশ করল। এই নতুন পৃথিবী একেবারে আলাদা—এখানে সবকিছু অদ্ভুতভাবে ভিন্ন। আকাশে লাল, আন্ধকার মেঘের জমাট বাঁধা ছিল, এবং পৃথিবীর পৃষ্ঠে কোথাও কোথাও অগ্নিসংকুল ঢেউ উথলাচ্ছিল। এখানকার বাতাসও ভারী ছিল, যেন সবকিছু মৃদু সাসপেন্সে আটকে আছে।

ডার্ক ওয়ারলর্ড তাকে সামনে থেকে এগিয়ে নিয়ে গেল, তার মুখের মধ্যে আবার সেই রহস্যময় হাসি ফুটে উঠল।

"এই জগৎকে তোমার জানা উচিত। এখানে তোমার ক্ষমতা পূর্ণ হতে পারে, তবে একইসাথে তোমাকে অনেক কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে।"

অধীর আরেকবার তার সিদ্ধান্তে অটল থাকল। সে জানত, এখন তাকে শক্তিকে পূর্ণভাবে বুঝতে হবে। যদি এই অন্ধকার শক্তিকে তার পক্ষে ব্যবহার করতে না পারে, তবে শেষ পর্যন্ত তাকে ভোগ করতে হবে। কিন্তু সবচেয়ে বড় প্রশ্ন ছিল—কীভাবে সে এই শক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করবে, তা কি জানার সময় এসেছে?

তার সামনে একটি বিশাল প্রাসাদ ফুটে উঠল, যা অদ্ভুতভাবে জ্বলন্ত ছিল। এর চারপাশে বিশাল বিশাল মূর্তি দাঁড়িয়ে ছিল, যেন তারা কেবল তাকে দেখছে। একে একে, সমস্ত মূর্তিগুলি জীবন্ত হয়ে উঠতে লাগল। অধীর কেমন যেন অনুভব করল, সে এক ঘোরের মধ্যে পড়েছে, যেখানে একদিকে তার শক্তির পটভূমি রয়েছে, অন্যদিকে তার রক্তে বইয়ের রহস্য রয়ে গেছে।

ডার্ক ওয়ারলর্ড ধীরে ধীরে তাকে সেই প্রাসাদের দিকে নিয়ে যেতে থাকল। তার সামনে ছিল নতুন এক বিপদ, কিন্তু অন্ধকার শক্তির সঙ্গে এক নতুন চ্যালেঞ্জও ছিল।

তবে অধীর জানত—যতই বিপদ আসুক, তাকে সংগ্রাম করতে হবে। তাকে নিজেকে খুঁজে বের করতে হবে। এই পৃথিবীকে বাঁচাতে হলে, তাকে এই অন্ধকারে পথ চলতে হবে।

অধীর আর ডার্ক ওয়ারলর্ড প্রাসাদের দিকে এগিয়ে চলেছিল। প্রাসাদটি যেন এক অন্ধকারের বিশালতা, যা দূর থেকে দেখতে এক অস্বাভাবিক ভয়ংকর প্রতিকৃতি ধারণ করছিল। গা dark ় মেঘের আচ্ছাদিত আকাশে তীব্র ঝলকানির সাথে কোথাও কোথাও বজ্রপাত হচ্ছিল, যেন এই পৃথিবীটি সৃষ্টির পর থেকে এক ধরনের শূন্যতার মধ্যে আটকে আছে।

প্রাসাদের ভেতরের পরিবেশ ছিল আরও রহস্যময়। এখানে আলো ছিল না, বরং অস্পষ্ট জ্বলন্ত অগ্নিকণা এবং মায়াময় অন্ধকার ছড়িয়ে ছিল। প্রতিটি দেয়াল যেন জ্বলছিল, এবং এর মধ্যে সেই অদ্ভুত পাথর-মূর্তিগুলি জীবন্ত হয়ে উঠছিল, তাদের চোখে অসীম ক্ষুধা ও গোপন রহস্যের প্রতিফলন।

"এখানে তোমার আসল পরীক্ষা শুরু হবে," ডার্ক ওয়ারলর্ড বলল, তার কণ্ঠে এক রহস্যময়তা ছিল। "যতই তুমি এই পৃথিবীতে প্রবেশ করবে, ততই তোমার ক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পাবে, তবে মনে রেখো, এর ফলাফল ভয়ংকর হতে পারে।"

অধীর শ্বাস ফেলে সোজা দাঁড়িয়ে রইল। সে জানত, এই নতুন পথ তার জন্য শুধুই এক অন্ধকার যাত্রা, কিন্তু তাকে আর কোনো পথ বাছতে হবে না। তার হৃদয়ের গভীরে, সেই শক্তির রহস্য জানার আগ্রহ প্রবল হচ্ছিল।

"তুমি আমাকে জানাবে কী ধরনের পরীক্ষা?" অধীর শেষ পর্যন্ত প্রশ্ন করল।

"সবকিছু তোমার সামনে আসবে," ডার্ক ওয়ারলর্ড মৃদু হেসে বলল, "তবে আগে তোমাকে নিজের আত্মাকে পরীক্ষা দিতে হবে।"

তাদের সামনে একটি বিশাল কক্ষ ফুটে উঠল, যেখানে একাধিক দরজা ছিল, প্রতিটি দরজার উপরে অজানা চিহ্ন ছিল। তবে একটি দরজা বিশেষভাবে আলোকিত ছিল, যেন সেখানে এক অন্ধকার ভ্রমণ অপেক্ষা করছিল।

ডার্ক ওয়ারলর্ড ওই দরজার দিকে ইঙ্গিত করে বলল, "এই দরজা তোমার প্রথম পরীক্ষার পথ। যদি তুমি এখানে পাস করো, তাহলে তুমি আরও শক্তিশালী হবে। তবে, যদি তুমি ব্যর্থ হও, তখন তোমাকে এই পৃথিবী থেকে কখনো বেরিয়ে আসতে হবে না।"

অধীরের মধ্যে এক অদ্ভুত চাপ অনুভূত হতে লাগল। সে জানত, এই পরীক্ষা তার জন্য জীবনের এবং মৃত্যুর মাঝের সীমানা হয়ে দাঁড়াতে পারে। তবে, সে আর পিছিয়ে যাবে না। সে এক গভীর শ্বাস নিয়ে দরজার দিকে এগিয়ে গেল।

দরজা খুলে গেল, এবং একটি অদ্ভুত পরিবেশ তার সামনে আসল। একটি বিশাল অগ্নিশিখার মধ্যে এক অদ্ভুত অন্ধকার শক্তি ঝলকাতে লাগল। এই শক্তি যেন প্রতিটি সেকেন্ডে তার আত্মাকে শুষে নেয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল। অধীর বুঝতে পারল, তাকে একের পর এক এমন শক্তির মুখোমুখি হতে হবে, যা তাকে নিজের ইচ্ছাশক্তি দিয়ে জয় করতে হবে।

দরজার ওপাশে একটি বিশাল দানব দাঁড়িয়ে ছিল। তার চোখে ভয়াবহ শক্তি ছিল, এবং তার শরীর থেকে এক বিপজ্জনক শক্তির ঢেউ বের হচ্ছিল।

"এটাই তোমার প্রথম পরীক্ষা," ডার্ক ওয়ারলর্ড বলল, "তোমাকে এই দানবকে পরাস্ত করতে হবে। তবে, মনে রেখো, এর প্রতিটি আক্রমণ তোমার আত্মাকে পরীক্ষা করবে।"

অধীর জানত, এই পরীক্ষার মাধ্যমে তাকে নিজের ভেতরের অন্ধকার শক্তি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সে জানত, যদি এই শক্তিকে নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে, তাহলে তার জন্য কোনো ভবিষ্যৎ থাকবে না।

"আমি প্রস্তুত," অধীর নিজের মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি করে বলল, "তবে আমি শুধু শক্তি চাই না। আমি চাই এই শক্তির আসল রহস্য বুঝতে।"

দানবটি আরেকটি তীব্র গর্জন করে অধীরের দিকে ছুটে এল। অধীর তখন পুরোপুরি প্রস্তুত ছিল। সে বইয়ের শক্তি ব্যবহার করে, মনের মধ্যে সমস্ত শক্তি একত্রিত করে, অন্ধকার শক্তির বিরুদ্ধে তার প্রথম আক্রমণ শুরু করল।

তার হাত থেকে এক তীব্র শক্তির তরঙ্গ বের হয়ে, দানবটির দিকে ছুটে গেল। দানবটি সেই তরঙ্গের সামনে এক মুহূর্ত স্থির ছিল, তারপর মৃগযাত্রার মতো সরে গিয়ে প্রতিরোধ গড়ল।

এই চ্যালেঞ্জ শুরু হয়েছে, এবং অধীর জানত, যতই সে এগোবে, ততই তার আত্মাকে আরো কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে।

"এই শক্তি নিয়ন্ত্রণ করতেই হবে," অধীর শ্বাস ফেলে বলল, তার চোখে নতুন এক দৃঢ়তা।

এখন এই দানবের সাথে লড়াই শুধু তার বুদ্ধিমত্তা এবং আত্মবিশ্বাসের পরীক্ষা নয়, বরং এটি তার ভবিষ্যতের পথও নির্ধারণ করবে—একটি পথ যা তাকে শক্তির অন্ধকার গহ্বরে নেবে, অথবা তাকে পৃথিবী রক্ষার জন্য প্রস্তুত করবে 
---

দানবটি আরও তীব্র গর্জন করে অধীরের দিকে আক্রমণ চালিয়ে গেল। তার বিশাল হাতগুলো এক ভয়ংকর গতিতে এগিয়ে আসছিল। অধীর জানত, এই শত্রুর সাথে সরাসরি মোকাবিলা করলে সে হারবে। তবে সে এখন আর সাধারণ মানুষ নয়—তার হাতে অন্ধকার শক্তির বই, যার মাধ্যমে সে নিজের শক্তি ক্রমাগত বাড়াচ্ছে।

অধীর দ্রুত একটি স্পেল পড়ল—"স্পেস ব্যারিয়ার!" একে একে তার চারপাশে একটি অদৃশ্য শক্তির প্রাচীর তৈরি হয়ে গেল। দানবটির আক্রমণ এসে পড়ল, কিন্তু স্পেস ব্যারিয়ারের দেয়ালটি তা ঠেকিয়ে দিল। দানবটি ক্ষিপ্ত হয়ে আরও বেশি আক্রমণ করতে শুরু করল। অধীর জানত, তার উচিত এই মুহূর্তে প্রতিরক্ষা না করে, পাল্টা আক্রমণ করা।

সে বইয়ের পৃষ্ঠাগুলি ঘুরিয়ে এক শক্তিশালী স্পেল খুঁজে বের করল—"স্পেল কম্বাইন!" একটি শক্তিশালী সমন্বিত আক্রমণ তৈরি করতে, সে বই থেকে দুটি স্পেল একত্রিত করল—একটি "ফ্লেম স্টর্ম" (অগ্নির ঝড়) এবং একটি "এলেকট্রিকাল শক" (বৈদ্যুতিক শক)।

ফ্লেম স্টর্মের আগুন এবং বৈদ্যুতিক শকের তীব্রতা একসাথে তার চারপাশে ভস্মের মতো ছড়িয়ে পড়ল, এবং দানবটি সেই শক্তি থেকে পালাতে পারল না।

দানবটি কয়েক মুহূর্তের জন্য অচেতন হয়ে গেল। কিন্তু সেই সময়েও অধীর জানত, এটি এক সশস্ত্র দানব, এবং সে যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা কিছু সময়ের জন্য।

তবে, অধীরের ভেতরে একটি অদ্ভুত চিন্তা জাগল—এ শক্তি কি তাকে সত্যিই ভালো ফল দেবে, না কি একদিন এটি তাকে সম্পূর্ণ গ্রাস করে ফেলবে?

দানবটি ঘুরে দাঁড়িয়ে আবার আক্রমণ শুরু করতে চাইল, কিন্তু অধীর একবারে একটি শক্তিশালী "ক্রিয়েশন" স্পেল ব্যবহার করে, কিছু মুহূর্তের মধ্যে একটি বিশাল শিলাবৃষ্টি তৈরি করে, যা দানবটির গতি থামিয়ে দেয়।

"এটা কি আসলেই শক্তির পরীক্ষা?" অধীর নিজের কাছে প্রশ্ন করছিল। "আমি কি শুধু শক্তি নিয়ে এগিয়ে চলছি, না কি সত্যি আমাকে নিজের আত্মার দিকে নজর দিতে হবে?"

তবে এখন তার সামনে যে শত্রু দাঁড়িয়ে ছিল, তাকে পরাস্ত করতে হতো। অধীর দ্রুত সিদ্ধান্ত নিল, শক্তির জায়গায় তাকে এবার আত্মবিশ্বাস এবং বুদ্ধিমত্তা দিয়ে মোকাবিলা করতে হবে।

সে আবার বইয়ের পৃষ্ঠায় চোখ বুলিয়ে একটি স্পেল খুঁজে বের করল—"আই ভিজন!" এই স্পেলটি তাকে ভবিষ্যতের দৃশ্য দেখাতে সাহায্য করবে। অধীর কয়েক সেকেন্ডের জন্য স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকল, এবং তার সামনে ভবিষ্যতের দৃশ্য ফুটে উঠল। সে দেখতে পেল, দানবটি মাত্র কয়েক সেকেন্ডে তার দিকে আক্রমণ করতে যাবে, কিন্তু তার পেছনে একটি দুর্বল জায়গা ছিল, যে স্থানটি সে আক্রমণ করে পরাস্ত করতে পারবে।

অধীর দ্রুত সেদিকে এগিয়ে গেল, আর এক তীব্র আক্রমণ চালিয়ে দানবটিকে সরাসরি আঘাত করল। দানবটি আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারল না, আর অচেতন হয়ে পড়ল।

কিন্তু এই মুহূর্তে অধীরের মন আর শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল। তার শক্তি অনেকটাই ক্ষয় হয়ে গিয়েছিল, এবং সে জানত যে, এই যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর তাকে কিছু সময় বিশ্রাম নিতে হবে। কিন্তু, একদিকে তার জয়, অন্যদিকে ভয়—এই ক্ষমতা কি তাকে কখনোই শান্তি দিতে পারবে?

ডার্ক ওয়ারলর্ড তার পাশেই দাঁড়িয়ে ছিল, তার মুখে সেই অদ্ভুত হাসি ফুটে উঠেছিল।

"তুমি প্রথম পরীক্ষা পাস করেছ, অধীর," ডার্ক ওয়ারলর্ড বলল, "তবে তোমার আসল যাত্রা এখনও শুরু হয়নি।"

অধীর একটু থামল, তার চোখে এক নতুন সিদ্ধান্ত ছিল। সে জানত, এই অন্ধকার শক্তির সাথে তাকে এগিয়ে যেতে হবে, তবে একে সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ না করলে শেষ পর্যন্ত সে হারিয়ে যাবে।

"আমি প্রস্তুত," অধীর বলল, তার কণ্ঠে দৃঢ়তা ছিল।

এবার, ডার্ক ওয়ারলর্ড তাকে নিয়ে আরও গভীরে চলে যেতে শুরু করল—তাদের সামনে আরও কঠিন পরীক্ষা অপেক্ষা করছিল। কিন্তু অধীর জানত, যতই বড় বিপদ আসুক, সে কখনোই ফিরে যাবে না।

এটা ছিল শুধু তার যাত্রার প্রথম ধাপ—এক শক্তির, এক রহস্যময় জীবনের যাত্রা, যা তাকে পরবর্তী পৃথিবী, পরবর্তী ইউনিভার্স এবং এক অন্ধকার ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাবে।

---

অধীরের শরীর কাঁপছিল, তার শক্তি প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল। দানবকে পরাস্ত করার পর তার আত্মবিশ্বাস বেড়েছিল, তবে এই জয় নিয়ে তার মনে এক গভীর অস্বস্তি ছিল। ডার্ক ওয়ারলর্ড তার দিকে এক নজরে তাকাল এবং মৃদু হাসল, যেন সে অধীরের অবস্থা বুঝতে পারছিল।

অধীর নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করল, কিন্তু সে জানত, ডার্ক ওয়ারলর্ড যা বলেছে, তাতে আর কোনো অন্ধকার পথ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সহজ হবে না। তার ভেতরের শক্তি এখন তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে, এবং সে জানত—এটি তার অস্তিত্বের শেষ সীমা পর্যন্ত যাবে।

ডার্ক ওয়ারলর্ড ধীরে ধীরে বলল, "তুমি এখনও পুরোপুরি বুঝতে পারোনি, অধীর। এই ক্ষমতার সঙ্গে যুক্ত রহস্য অনেক গভীর। তুমি যখন নিজের আত্মাকে সঠিকভাবে জানবে, তখনই বুঝবে, তুমি কীভাবে পৃথিবী এবং এর সমস্ত অস্তিত্বকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। তবে, তার জন্য তোমাকে আরও অনেক কিছু শিখতে হবে।"

অধীর কিছুটা অভিভূত হয়ে গিয়েছিল, তবে সে জানত, তাকে এই পথে যেতে হবে। "আমি প্রস্তুত," সে বলল, মুখে এক কঠিন দৃঢ়তা নিয়ে। "যে শক্তিই আমাকে এ পথে ঠেলে দিয়েছে, আমি সেটাই গ্রহণ করব। তবে আমি আমার পথ নিজেই চয়ন করব।"

ডার্ক ওয়ারলর্ড একটি দীর্ঘ নীরবতা বজায় রাখল, তারপর তার চোখে এক ধরনের আভাস ফুটে উঠল। "তোমার ইচ্ছাশক্তি শক্তিশালী, অধীর। তবে, তুমি যে অন্ধকারের দিকে যাচ্ছ, সেখানে তোমাকে এক অদ্ভুত পথ বেছে নিতে হবে। এটি শুধুমাত্র ক্ষমতার অর্জন নয়, বরং আত্মবিশ্বাসেরও একটি পরীক্ষা।"

প্রাসাদে একটি গভীর নীরবতা বিরাজ করছিল, যেন পুরো পরিবেশ এই রহস্যময় যাত্রার মধ্য দিয়ে যেতে বাধ্য। কিন্তু অধীর এক সিদ্ধান্তে স্থির ছিল—যতই অন্ধকার হয়ে উঠুক না কেন, সে তার পথ অব্যাহত রাখবে।

এখন, তার সামনে আরও একটি দরজা খুলল। এটি ছিল আরও বড় এবং ভয়ংকর। ভেতরে প্রবেশ করতেই অধীর বুঝতে পারল, এটি কোনো সাধারণ জায়গা নয়—এটি একটি "প্যারালাল ইউনিভার্স" ছিল, যেখানে সময় এবং স্থান একে অপরের সাথে জড়িয়ে গিয়েছিল। সেখানে একে একে বিভিন্ন অস্তিত্ব এবং শক্তি প্রভাবিত হচ্ছিল, এবং অধীর জানত, তার জন্য এখানেই আসল চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে।

"এটা কোন জগৎ?" অধীর প্রশ্ন করল।

ডার্ক ওয়ারলর্ড এর দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসল। "এটি 'টেম্পোরাল রিয়াল্ম'। এখানে সময় এবং শক্তি একে অপরকে পরিপূরক করে। তুমি যদি এখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারো, তবে তুমি শিখবে কীভাবে সময়ের শক্তি ব্যবহার করতে হবে।"

অধীর গভীর মনোযোগ দিয়ে চারপাশে তাকাল। তার সামনে একেকটি রহস্যময় দৃশ্য দেখতে পাচ্ছিল—একটি বিশাল যুদ্ধের সীমানা, যেখানে অজস্র অস্তিত্ব একে অপরকে ধ্বংস করতে ছুটছে, আবার কিছু জায়গায় অদ্ভুত শক্তির রশ্মি আলোর মতো ছড়িয়ে পড়ছে। এটি যেন এক দুনিয়া যেখানে কেবল শক্তি এবং সময়ের কৌশল কাজ করে।

"তুমি যদি সময় নিয়ন্ত্রণ করতে পারো," ডার্ক ওয়ারলর্ড বলল, "তাহলে তুমি সকল শক্তির মালিক হতে পারবে।"

অধীর তার চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষণ স্থির হয়ে রইল। তার মনে হচ্ছিল, এই ক্ষমতাগুলো তার কাছে শুধুমাত্র ভৌতিক জাদু নয়, বরং তাদের মধ্য দিয়ে নিজেকে খুঁজে পাওয়ার এক যাত্রা। সে জানত, এখানে সময় এবং শক্তির মধ্যে যে সম্পর্ক তা অত্যন্ত জটিল, তবে তাকে এটি বুঝতে হবে।

ধীরে ধীরে, অধীর নিজেকে সময়ের শক্তির দিকে মনোযোগ দিয়ে স্থির করল। তার বই থেকে একটি নতুন স্পেল "টাইম ব্লিস্ট" খুলে উঠল। স্পেলটি ছিল—"তিন সেকেন্ডের জন্য সময়কে স্থির করা, যাতে সে তার শত্রুদের আক্রমণ থেকে বাঁচতে পারে।"

অধীর সেই স্পেলটি বলল এবং তার চারপাশের সময় এক মুহূর্তের জন্য স্থির হয়ে গেল। এই স্পেলটির সাহায্যে, সে পুরো পরিসরে যুদ্ধের সকল পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে পারল, এবং তার সামনে আসা শত্রুদের একের পর এক পরাস্ত করতে শুরু করল।

এমন সময়, এক অদ্ভুত চমকপ্রদ ঘটনা ঘটল—একটি ভয়ংকর শক্তিশালী শত্রু তার সামনে উপস্থিত হল, যার চোখে অগাধ অন্ধকার ছিল। এটি ছিল সেই দানবগুলোর সবচেয়ে শক্তিশালী রূপ। শত্রুটির গলা থেকে একটি গম্ভীর আওয়াজ বের হল, "তুমি সময়কে নিয়ন্ত্রণ করতে চাও? তাহলে তোমাকে আমার সাথে লড়াই করতেই হবে।"

অধীর এক মুহূর্তের জন্য চুপ থেকে তার শক্তি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করল। কিন্তু সে জানত, তার সামনে এখন একেবারে নতুন এক যুদ্ধ আসন্ন—এবার, তাকে শুধু সময় নয়, নিজের শক্তি ও আত্মবিশ্বাসের পরীক্ষা দিতে হবে।

"যাও, অধীর।" ডার্ক ওয়ারলর্ড শেষবারের মতো বলে গেল। "এবার তোমার পথ একদম নিজেরই হতে হবে।"

---

চলবে...

Comments

    Please login to post comment. Login