প্রথম অধ্যায়: পরিচয়
গাঁয়ের মেঠোপথ ধরে হেঁটে চলেছে অয়ন, রাকিব আর তৃণা। গ্রামের মেঠোপথের ধুলোমাখা গন্ধ, নদীর বাতাস আর বিকেলের রোদের ছায়া মিশে যাচ্ছে তাদের কথাবার্তায়। তিনজনের সম্পর্কটা যেন অদ্ভুত, অন্যরকম, প্রচলিত নিয়মে বাঁধা নয়।
তৃণা শহর থেকে আসা মেয়ে, স্মার্ট, বুদ্ধিমতী আর অল্পতেই মন জয় করে নেওয়ার ক্ষমতা রাখে। প্রথম দিন থেকেই অয়ন আর রাকিবের মধ্যে এক অদ্ভুত অনুভূতি কাজ করতে শুরু করে। একদিকে বন্ধুত্বের টান, অন্যদিকে আকর্ষণের খেলায় তারা নিজেরাও হারিয়ে যায়।
দ্বিতীয় অধ্যায়: প্রেমের সূচনা
প্রথমে রাকিব সাহস করেছিল, তৃণার কাছে নিজের অনুভূতির কথা বলেছিল। তৃণা হেসে বলেছিল, “ভালোবাসা কি একতরফা হয়?” সেই হাসির মধ্যে একটা চ্যালেঞ্জ ছিল, একটা রহস্য ছিল। রাকিব সেটা বুঝতে পারেনি, কিন্তু অয়ন ঠিকই টের পেয়েছিল। সে জানত, তৃণা শুধু একজনকে নয়, দুজনকেই পছন্দ করে।
এক রাতে, পূর্ণিমার আলোয় নদীর ধারে বসেছিল তিনজন। কথা বলতে বলতে সময় কোথায় কেটে গিয়েছে, কেউ জানে না। অয়ন তখন বলল, “তৃণা, তুমি কি সিদ্ধান্ত নিয়েছ?”
তৃণা একটু থেমে তাকাল ওদের দিকে। “আমি দুজনকেই চাই। ভালোবাসা কি শুধু একজনের জন্য সংরক্ষিত?”
তৃতীয় অধ্যায়: আকর্ষণের বাঁধন
রাকিব প্রথমে একটু বিস্মিত হলো, কিন্তু ভেতরে ভেতরে সে জানত, সে একাই নয়। অয়নের চোখে এক অদ্ভুত উত্তেজনা ফুটে উঠল। তারা একে অপরের দিকে তাকাল। ভালোবাসা, আকর্ষণ আর কামনার যে খেলা, সেটার শুরু হয়েছিল সেদিনই।
এরপর তাদের সম্পর্কের বাঁধন আরও দৃঢ় হতে লাগল। গ্রামবাসীরা সন্দেহ করত, কিন্তু তারা তাতে কিছুই গায়ে মাখত না। রাতের পর রাত, নদীর ধারে বসে তাদের সময় কাটত। শরীর, মন, আকর্ষণ—সব একসাথে জড়িয়ে গিয়েছিল।
তৃণা কখনও অয়নের ঘরে থাকত, কখনও রাকিবের। একদিন রাতে তিনজন একসাথে ছিল, শরীরের উষ্ণতা আর ভালোবাসার গভীরতা একে অপরের মধ্যে মিশে গিয়েছিল। এ এক অন্যরকম অনুভূতি, যা প্রচলিত সমাজ মেনে নিতে পারবে না। কিন্তু তারা নিজেরাই নিজেদের ভালোবাসায় পূর্ণ ছিল।
চতুর্থ অধ্যায়: সমাজের বাধা
তাদের সম্পর্কের গুঞ্জন গ্রামে ছড়িয়ে পড়ল। বড়রা বলাবলি করছিল, “এ কেমন সম্পর্ক? মেয়েটি দুজনের সঙ্গেই ঘনিষ্ঠ!” কেউ কেউ তৃণাকে দোষারোপ করল, কেউ বলল, “ছেলেগুলো বিপথে গেছে।” কিন্তু তৃণা, অয়ন আর রাকিব নিজেদের নিয়েই মগ্ন ছিল।
একদিন গ্রামের এক প্রবীণ ব্যক্তি রাকিবের বাবাকে ডেকে বললেন, “তোমার ছেলে আর ওর বন্ধুর কীর্তি তো দেখছ? এটা বন্ধ করো।” রাকিবের বাবা রাগে ফেটে পড়লেন।
পঞ্চম অধ্যায়: পালানোর সিদ্ধান্ত
তিনজন বুঝতে পারছিল, সমাজ তাদের গ্রহণ করবে না। তারা কি তাদের ভালোবাসার জন্য লড়বে, নাকি পালিয়ে যাবে? তৃণা বলল, “আমরা যদি আমাদের মতো করে বাঁচতে না পারি, তবে এখানে থাকার মানে কী?”
তারা সিদ্ধান্ত নিল, শহরে পালিয়ে যাবে। এক রাতে, গাঁয়ের পথ ধরে তারা রওনা হলো।
পরিণতি
শহরে এসে তারা নতুন জীবন শুরু করল। নিজেদের মতো করে ভালোবাসার স্বপ্ন গড়তে লাগল। যদিও সমাজ তাদের স্বীকৃতি দেয়নি, তবু তারা একে অপরের ভালোবাসায় বাঁধা ছিল।
তাদের গল্প কি সত্যিই শেষ হলো? নাকি এটি এক নতুন জীবনের শুরু?
(সমাপ্ত)