Posts

গল্প

অভিশপ্ত ম্যানোর

February 20, 2025

Boros Marika

9
View

শীতের রাত। অন্ধকার রাস্তা ধরে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিল রাজীব। রাত তখন প্রায় ২টা। চারপাশ শুনশান, শুধু হেডলাইটের আলোয় দেখা যাচ্ছিল ঘন কুয়াশায় ঢাকা পথ।

গুগল ম্যাপে গন্তব্য দেখিয়ে দিলেও, অদ্ভুতভাবে রাস্তা শেষ হয়ে গেল একটা বিশাল পুরনো বাড়ির সামনে। রাজীব আশ্চর্য হলো। এটা তো তার গন্তব্য নয়!

বাড়িটির নাম "ডার্কউড ম্যানোর"। বিশাল আয়তনের পুরনো দালান, জানালার কাচ ভাঙা, দেয়ালে ছোপ ছোপ দাগ। গেটের ওপরে মরচে ধরা ফলকে লেখা, "এই বাড়িতে প্রবেশ নিষেধ"। কিন্তু রাজীবের মোবাইলের ব্যাটারি শেষ হয়ে গেছে, আর তার গাড়ির তেলও প্রায় ফুরিয়ে এসেছে। বাধ্য হয়েই সে দরজায় কড়া নাড়ল।

"ঠক ঠক..."

দরজা নিজে থেকেই খুলে গেল। ভেতরে এক অদ্ভুত গন্ধ, যেন শ্যাওলা আর পোড়া কাঠের মিশ্রণ। বিশাল ঝাড়বাতি ধুলোয় ঢেকে গেছে, দেয়ালে ঝুলছে পুরনো পোর্ট্রেট—সবগুলোতেই ধূসর চেহারার মানুষ, চোখদুটো যেন শূন্য, অথচ কিছু একটা দেখছে।

রাজীব ধীরে ধীরে ভেতরে পা রাখল।

পেছনে দরজাটা আপনাআপনি বন্ধ হয়ে গেল।

সে চমকে তাকাল। এবারই প্রথম তার মনে হলো, এখানে কিছু একটা ঠিক নেই।

তখনই পেছন থেকে শোনা গেল ফিসফিস আওয়াজ—

"তুমি চলে এলে..."

রাজীব দ্রুত ঘুরে তাকালো।

কিন্তু কেউ নেই।

শুধু সামনের আয়নাতে...

সে দেখল, একটা নারীর ছায়া ঠিক তার পেছনে দাঁড়িয়ে আছে!

নারীটি ধীরে ধীরে আয়নার ভেতর থেকে বেরিয়ে আসছে। চোখদুটো রক্তবর্ণ, মুখে অস্বাভাবিক হাসি।

"তুমি আমার জায়গা নিয়েছ..."

রাজীব চিৎকার করে বেরিয়ে যেতে চাইল, কিন্তু পা যেন জমে গেল মেঝের সঙ্গে। শরীরে কোনো শক্তি নেই। নারীটি এগিয়ে আসছে...

তার বরফঠান্ডা হাত রাজীবের গলায় ছুঁল মাত্রই...

"আরেকটি আত্মা অভিশপ্ত হল..."

পরদিন সকালে, পুলিশ এসে খুঁজে পেল শুধু একটা খালি গাড়ি।

আর ম্যানোরের দরজায় রক্তে লেখা ছিল মাত্র দুটি শব্দ—

"আমাকে বাঁচাও..."

Comments

    Please login to post comment. Login