পোস্টস

গল্প

স্পর্শ

১৯ মে ২০২৪

সানজিদা সিদ্দিকা

মূল লেখক সানজিদা সিদ্দিকা

প্রতি অমাবস্যায় একটি লিকলিকে বিষধর সাপ যেন অণ্ডকোষে ছোবল মেরে ধীরে ধীরে নাভিতে উঠে এসে সাড়া শরীরে ব্যথার বিষ ছড়িয়ে দিত। এই একশিরা রোগ থেকে মুক্তির জন্য কত চিকিৎসা-ই না করানো হয়েছে। আর এ রোগটির কারনেই প্রথম জেনেছি নারীকে এবং নিজেকে। একবার প্রচন্ড ব্যথার সময় আমার কোমরে হুজুরের দেয়া তাবিজ পরানোর দায়িত্ব পড়লো মায়া বুবুর উপর। যখন মায়া বুবু তাবিজ পরাতে লাগলো অকারণেই বার কয়েক  আমার যৌনাঙ্গ স্পর্শ করলো। ঈষৎ সংকোচ, লজ্জা,  গোপন নারী বাসনা সব মিলে মিশে অন্যরকম ভাষা তৈরী হয়েছিলো মায়া বুবুর মায়াবী চোখের চকমকি পর্দায়। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াকালে ওই ভাষা তো কোনো বইয়ে পড়িনি। কেমন দুর্বোধ্য লাগলো। যৌবনে সেই ভাষা একদিন সহজ হলো যেদিন টের পেলাম মায়া বুবুর সে চাহনি, স্পর্শ মনে করতেই নেতিয়ে পড়া লতাটি হয়ে উঠে অনাদিকালের আদিম বৃক্ষ। অবশেষে নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় কালীসাধকের দেয়া ছাতার কাটার আংটি ডান পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলে পরে রোগটি থেকে মুক্তি মিলেছিলো। কিন্তু মুক্তি মিলেনি সেই নারী স্পর্শ আর গোপন অতৃপ্ত চাহনি থেকে...

আজ সেই ঘটনার বিশ বছর পর আমার চেয়ে দশ বছরের বড় খালাতো বোন মায়াবুবুর সামনে বসে চায়ে  চুমুক দিচ্ছি। মায়া বুবুর ভরা সংসার। নাতি-নাতনি আছে। আমি সদ্য বিবাহিত। সাথে বউ নিয়ে বেড়াতে এসেছি। হঠাৎ কথা বলতে বলতে মনোযোগ হাতে রাখা চায়ের কাপের উপর পড়লো। কাপের ধোঁয়াগুলো একে অপরকে জড়িয়ে জড়িয়ে উপরে ওঠছে আর আমার মনের চিন্তারাও ধোঁয়ার সাথে পাল্লা দিয়ে একে অপরকে প্রশ্ন করছে, মায়া বুবুর কি মনে আছে সে স্পর্শের কথা? নাকি ভুলে গেছেন? আজ কি আমাকে দেখে ভেতরে ভেতরে লজ্জা পাচ্ছেন? যে আকাঙ্খা নিয়ে সেদিন স্পর্শ করেছিলেন সেই আকাঙ্খার চরম অনুভূতি কি পরবর্তীতে বিবাহিত জীবন থেকে পেয়েছেন?

এমন সময়  আট বছরের ছোট্ট একটি ছেলে দৌড়ে মায়াবুবুর কাছে এসে কেঁদে কেঁদে বললো, 'দেখো ওরা না আমাকে ব্যথা দেয়।' শিশুটি জোর করে মায়া বুবুর হাত তার খতনা করা লিঙ্গের দিকে টেনে নিয়ে বললো, তুমি ধরে দেখো নানু, কি ব্যথা ওটাতে? মায়া বুবু আলতো করে শিশুটির লিঙ্গে স্পর্শ করে বললেন, 'কেঁদো না সোনামানিক, 'সময়ের সাথে সাথে সব ঠিক হয়ে যাবে। ব্যথা ভুলে যাবে।' কথাটি বলেই মায়া বুবু আমার দিকে তাকালেন। চোখে তার শামুক ভাষা....