পোস্টস

কবিতা

বেঁচে থাকার সুখ

১৯ মে ২০২৪

ইউসুফ আহমেদ শুভ্র

মূল লেখক ইউসুফ আহমেদ শুভ্র

রোদ পরে যাওয়া বিকেলে মেয়েটি এসে বসলো পাশে
নিচু স্বরে বললো- আমি উড়তে চাই
আমি শহর,বন্দর,গ্রাম,নদী আর পাহাড়ে ঘুরতে চাই
আমি মানুষকে দেখতে চাই
আমি মানুষের হাসিমুখ দেখতে চাই
আমি প্রেম দেখতে চাই
আনন্দ দেখতে চাই
সুখ দেখতে চাই, দেখতে চাই সুখের ঘর!

এক নাগাড়ে বলে গিয়ে থামলো সে  অবশেষে! 

আমি আমার বুকের বা পাশে হাত রাখলাম
চোখ ছলছল করে উঠলো
কেমন যেনো একটা চিনচিনে ব্যথা
হাহাকার 
কষ্ট 
হারানোর বেদনা
মরে যাওয়ার তীব্র বাসনা
অসহনীয় যন্ত্রনা!

তবুও আমার সংকীর্ণ আকাশ থেকে মুক্তি দিলাম তাকে
সে উড়ে বেড়াক, সে ঘুরে বেড়াক
তবুও সে ভালো থাকুক!

বহুদিন কেটে গেলো
আমিও তার না থাকাতে অভ্যস্ত ভীষণ
ইচ্ছে হলেই একলা একা নিজের সাথে কথা বলি
মধ্য রাতের আকাশ দেখি
মনের ভুলে আকাশ পানে কখনো কখনো তাকে খুঁজি!

তারও বহু বছর পর সে ফিরে আসে
সে ফিরে আসে ভেঙে যাওয়া চোয়ালে
সে ফিরে আসে উদ্ভ্রান্ত দৃষ্টি নিয়ে
সে ফিরে আসে ভীষণ রকমের রিক্ত আর নিঃস্ব হয়ে!

"এতো বিশাল আকাশে উড়তে যাওয়া ভীষণ কষ্ট রে
ডানা ভেঙে আসে
ক্লান্ত লাগে
উড়তে উড়তে কথা বলতে ইচ্ছে হয়"
সে বলে আমায়!

আমি চুপ করে শুনতে থাকি!

"আমি মানুষের হাসিমুখ দেখতে চেয়েছিলাম
অথচ মানুষ শুধু বিষাদের চাষ করে
আমি মানুষের ঘর দেখতে চেয়েছিলাম
অথচ মানুষ শুধু ঘর ভেঙে চলে যায়
সুখের ঘর!"

সে বলে, আমি চুপ করে শুনতে থাকি! 

"মানুষ হাসতে ভুলে গেছে রে মৃত্যুঞ্জয়
মানুষ বাঁচতে ভুলে গেছে!"

আমি তার দিকে ফিরে তাকাই
চোখে চোখ রাখি
তার চোখের বিষাদে ডুবে যাই
ভুলে যাই সব অভিমান
হাতে হাত রাখি
"চল আমরা আবার এক সাথে বাঁচি
সারিয়ে তুলি মানুষের অসুখ"! 

সে হাসে, আমি হাসি
আমাদের পৃথিবী এক সাথে হেসে উঠে!!