বৃষ্টির ছোঁয়া
রাতের আকাশে ঘন মেঘ জমেছে। বাতাসে বৃষ্টির আগমনী বার্তা ভাসছে। শোভন জানালার পাশে দাঁড়িয়ে উদাস চোখে বাইরে তাকিয়ে আছে। শহরের রাস্তা ধীরে ধীরে ফাঁকা হয়ে আসছে, দোকানপাট বন্ধ হচ্ছে, আর পথচারীরা তাড়াহুড়ো করে গন্তব্যের দিকে ছুটছে।
আজও সে অপেক্ষা করছে। প্রতিদিনের মতো। তানিয়ার অপেক্ষায়।
তানিয়া আর শোভনের পরিচয় হয়েছিল এক বর্ষার দিনে। অফিস থেকে ফেরার পথে হঠাৎ শুরু হওয়া ঝুম বৃষ্টিতে তারা একসঙ্গে একটা ছাউনির নিচে দাঁড়িয়েছিল। সে প্রথমবার তানিয়ার দিকে তাকিয়েই বুঝেছিল, এই চোখের গভীরতায় সে হারিয়ে যাবে। সেই পরিচয় থেকে বন্ধুত্ব, আর বন্ধুত্ব থেকে ভালোবাসা।
কিন্তু আজ তানিয়া আসবে কিনা, শোভন জানে না। তাদের শেষ দেখা হয়েছিল এক বছর আগে, এক তুমুল বৃষ্টির রাতে। ঝগড়া, ভুল বোঝাবুঝি, আর কিছু অপূর্ণ কথা—সব মিলে সেই রাত তাদের দূরে ঠেলে দিয়েছিল। তানিয়া চলে গিয়েছিল, তবে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল একদিন ফিরবে।
একটা বিদ্যুতের ঝলকানি, তারপর মুষলধারে বৃষ্টি নামল। শোভন জানালার কাঁচে হাত রাখল। এই বৃষ্টিতে কি আজও তানিয়া ফিরে আসবে?
বাইরে একটা ছাতা হাতে দাঁড়িয়ে থাকা ছায়ামূর্তিকে দেখে শোভনের বুক ধক করে উঠল। সে কি তানিয়া? নাকি তার কল্পনা?
বৃষ্টি নামার সাথে সাথে শোভনের মনে একটাই প্রশ্ন—এই বৃষ্টি কি পুরোনো গল্পের নতুন শুরু আনবে।