সিটি হলে তখন বেশ উত্তেজনা। "বৈষম্য বিরোধী জাগরণ" নামের নতুন রাজনৈতিক দলের প্রথম জাতীয় সম্মেলন চলছে। ব্যানারে বড় বড় অক্ষরে লেখা— "নিপীড়নের বিরুদ্ধে আমরা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিহাদ!"
দলের প্রধান রফিক সেলিম মঞ্চে উঠে বললেন, "দুর্নীতিবাজদের কোনো ছাড় নেই! আমরা হবো এক নতুন প্রজন্মের রাজনীতিক, যারা জনতার জন্য জীবন উৎসর্গ করব।"
তখনই পেছন থেকে কাশির শব্দ। মঞ্চের এক কোণায় দাঁড়িয়ে থাকা এক নেতা আজিজ কুদ্দুস কাশি থামিয়ে বললেন, "আচ্ছা, দলের কোষাধ্যক্ষ কোথায়? সম্মেলনের বাজেটের হিসাব এখনো পাইনি!"
কোষাধ্যক্ষ কামাল হোসেন একটু অস্বস্তিতে পড়লেন। কিন্তু মাইক্রোফোনে এসে ঘোষণা দিলেন— "সব হিসাব ক্লিয়ার! শুধু কিছু টাকা আমাদের কর্মীদের চা-বিস্কুট আর ব্যানার ছাপানোর পেছনে গেছে।"
হঠাৎ করেই একজন কর্মী চিৎকার করে উঠল, "ব্যানার তো স্পন্সররা ছাপিয়ে দিয়েছে! তাহলে টাকা গেল কোথায়?"
সবাই হতবাক। আরেকজন ফিসফিস করে বলল, "শুনেছি কামাল ভাইয়ের নতুন একটা বাইক কেনা হয়েছে!"
বিষয়টা মুহূর্তেই বিস্ফোরিত হলো। দলের একাংশ বলল, "এই দুর্নীতিবাজদের সঙ্গে আমরা থাকব না!" অন্য পক্ষ বলল, "এইসব ভিত্তিহীন অভিযোগ! আমাদের অভ্যন্তরীণ তদন্ত দরকার!"
এরপর কেউ একজন বোতল ছুড়ে মারল, কেউ চেয়ার তুলে ধরল। কয়েকজন এতই উৎসাহী হয়ে গেল যে, দুর্নীতিবিরোধী শ্লোগান দিতে দিতে একে অপরের কলার চেপে ধরল।
দু'ঘণ্টার মধ্যে "বৈষম্য বিরোধী জাগরণ" দুইভাগে বিভক্ত হয়ে গেল— একপক্ষ হল "শুদ্ধ বৈষম্য বিরোধী দল", আর অন্যপক্ষ "খাঁটি বৈষম্য বিরোধী দল"।
কিছুদিন পর জানা গেল, দুই দলেরই নতুন অফিস হয়েছে, বিলাসবহুল গাড়ি কেনা হয়েছে, এবং দুই পক্ষই নিজেদের "একমাত্র সৎ দল" হিসেবে প্রচার করছে।
সর্বশেষ খবর পাওয়া গেছে, "সততার অটল কসম" নামের আরেকটি নতুন দল গঠনের প্রস্তুতি চলছে!