ঢাকা শহরের এক গোপন ডিনার পার্টিতে একত্রিত হলেন তিন প্রভাবশালী ব্যক্তি—ড. ইউসুফ, সাবেক সেনাপ্রধান ওয়াহিদ জামান এবং সদ্য বিদায়ী সরকারপ্রধান স্যাকসিনা। 'তিন মহারথীর মহাসম্মেলন' নামের গোপন আসরের আয়োজক ছিল এক রহস্যময় কণ্ঠস্বর, যার কথা সবাই কেবল ফোনেই শুনেছেন।
তিনজনই গোপন আমন্ত্রণপত্র পেয়ে প্রথমে দ্বিধায় পড়েছিলেন। স্যাকসিনা কপালে হাত দিয়ে বললেন,
— "আরে, আমাকেই বা কে দাওয়াত দেয়? আমি তো অবসর নিয়েছি। এখন তো ঘর গুছানোর কথা!"
ওয়াহিদ জামান ফিটফাট ইউনিফর্মের বদলে এখন সাদা পাঞ্জাবি-পায়জামা পরেন। তিনি ফাইল উল্টে-পাল্টে দেখে বললেন,
— "আমি কি সত্যিই অবসর নিয়েছি? নাকি নতুন কোনো দায়িত্বের জন্য ডাক পড়েছে?"
ড. ইউসুফ, যিনি বহুদিন ধরে আন্তর্জাতিক পুরস্কার আর মামলা-মোকদ্দমার মাঝেই আটকে আছেন, খুশি হয়ে বললেন,
— "বাহ! নিশ্চয়ই কোনো নতুন সম্মাননা আসছে!"
তিনজন যখন আসলেন, দেখলেন টেবিলে রাখা আছে ব্যতিক্রমী সব খাবার। ওয়াহিদ জামান কাঁটা-চামচ হাতে নিতেই প্লেটে লেখা ফুটে উঠল— "নতুন দায়িত্ব আসছে!" তিনি আঁতকে উঠলেন।
স্যাকসিনার সামনের পানির গ্লাসে লেখা উঠল— "আপনি কি সত্যিই অবসর নিতে চান?"
আর ড. ইউসুফের কফির কাপে লেখা উঠল— "নোবেলওয়ালা মানুষ, আবার রাজনীতি?"
একজন রহস্যময় কণ্ঠস্বর বললেন,
— "আপনাদের তিনজনকে একত্র করেছি, কারণ বাংলাদেশে একটা বড় পরিবর্তন দরকার। সেনাবাহিনী, রাজনীতি আর অর্থনীতি—এই তিন শক্তির সমন্বয়ে নতুন পথ তৈরি হবে।"
ওয়াহিদ জামান বললেন,
— "মানে, আবার কি সামরিক শাসন আসবে?"
ড. ইউসুফ বললেন,
— "আমি তো ব্যাংক খুলতে চেয়েছিলাম, সেটা কি সম্ভব?"
স্যাকসিনা বললেন,
— "আমি তো ইতিহাস লিখতে চাই, নতুন সরকার গড়ার সময় কোথায়?"
গোপন কণ্ঠস্বর হাসল,
— "আপনারা সবাই যা চান, তা-ই হবে... শুধু শর্ত একটাই—জনগণের মত জানতে হবে!"
পরের দিন সকালে জাতীয় সংবাদমাধ্যমে ঘোষণা এলো— "বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গণভোট: সামরিক শাসন, নোবেল অর্থনীতি নাকি স্যাকসিনার রাজনীতি?"
বিপুল সংখ্যক মানুষ ভোট দিতে এল। ভোটের ফলাফল বের হলো—
"আমরা আমাদের সাধারণ জীবনটাই চাই! কোনো ঝামেলা চাই না!"
তিন মহারথী একে অপরের দিকে তাকিয়ে মাথা চুলকালেন। গোপন কণ্ঠস্বর ফিসফিস করে বলল—
— "বাংলাদেশের মানুষ সত্যিই দারুণ!"
এবং ঠিক তখনই টেবিলের উপর ভেসে উঠল নতুন বাক্য—
"তাহলে চা-নাস্তা করেই বিদায় হোন!"