Posts

উপন্যাস

দ্বিতীয় পরীক্ষার চ্যালেঞ্জ

March 4, 2025

মোঃ রাজিব

31
View

নয়ন নিজের ভেতর একটা পরিবর্তন অনুভব করছিল। মনে হচ্ছিল, সে আগের চেয়ে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী। প্রথম পরীক্ষায় সফল হওয়ার পর থেকে সে বুঝতে পারছিল—ডিভাইসটা শুধু একটা যন্ত্র নয়, এটা তার জীবন বদলানোর চাবিকাঠি।

কিন্তু… এই শক্তির আসল মূল্য কি?

স্কুল থেকে ফেরার পথে মনি হঠাৎ বলল, "ভাইয়া, ডিভাইসটা কি সবসময় তোমার সঙ্গে থাকবে?"

নয়ন হাতের দিকে তাকিয়ে বলল, "হ্যাঁ, যতক্ষণ আমি এটা খুলে না ফেলি। কিন্তু মনে হচ্ছে, এটা আরও অনেক কিছু লুকিয়ে রেখেছে।"

ঠিক তখনই, ডিভাইসটা হালকা কম্পন করতে শুরু করল। নয়নের হাত কেঁপে উঠল। স্ক্রিনে একটা নতুন বার্তা ভেসে উঠল:

"দ্বিতীয় পরীক্ষা: ভয়কে জয় করো।
সময়: ২৪ ঘণ্টা
লক্ষ্য: এমন এক কাজ করো, যা করতে তোমার ভয় লাগে।"

নয়নের মন হঠাৎই ভারী হয়ে গেল। ভয়!

তার সবচেয়ে বড় ভয় ছিল—লোকসমক্ষে কথা বলা। ক্লাসে যখন তাকে কিছু বলতে বলা হতো, তখন তার হাত-পা কাঁপত।

মনি উচ্ছ্বসিত হয়ে বলল, "ভাইয়া, এবার কী করবে?"

নয়ন ধীরে ধীরে বলল, "আমাকে এই ভয়টা জয় করতে হবে।"

নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি

পরের দিন স্কুলে একটা গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দেওয়া হলো। প্রধান শিক্ষক বললেন, "আগামীকাল আমাদের বার্ষিক বিতর্ক প্রতিযোগিতা হবে। যারা অংশ নিতে চাও, তারা আজকের মধ্যে নাম লিখিয়ে দাও।"

নয়নের বুক ধক করে উঠল। এটা কি তার সুযোগ? ভয়কে জয় করার চ্যালেঞ্জ কি এখানেই?

সে একটু দ্বিধাগ্রস্ত ছিল। কিন্তু ডিভাইসটা হালকা নীল আলো ছড়াতে শুরু করল। যেন বলছে—এটাই তোমার পরীক্ষা।

মনি হাত চেপে ধরল। "ভাইয়া, এটা তোমার জন্য পারফেক্ট সুযোগ! তুমি পারবে।"

একটা গভীর শ্বাস নিয়ে নয়ন সাহস করে দাঁড়িয়ে বলল, "স্যার, আমি অংশ নেব।"

সবাই অবাক হয়ে তার দিকে তাকাল। নয়ন, যে কখনো ক্লাসে মুখ খোলে না—সে বিতর্কে অংশ নেবে!

মঞ্চে প্রথম পদক্ষেপ

পরদিন, অডিটোরিয়াম লোকে লোকারণ্য। নয়নের মনে ভয় ঢেউ তুলছিল। হাত-পা ঘামছিল। কিন্তু সে জানত—এই পরীক্ষায় পাস করতেই হবে।

তার পালা এলো। ধীরে ধীরে মঞ্চে উঠল সে। আলো তার মুখে পড়তেই মনে হলো, তার হৃদয়টা গলা দিয়ে বেরিয়ে আসবে।

কিন্তু ঠিক তখনই ডিভাইসটা আলতোভাবে কাঁপল। স্ক্রিনে নতুন বার্তা ভেসে উঠল:

"ভয়কে জয়ের জন্য আত্মবিশ্বাস সক্রিয় করা হয়েছে।"

হঠাৎ নয়নের মন শান্ত হয়ে গেল। গলা থেকে ভয় যেন উড়ে গেল। সে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলা শুরু করল:

"সম্মানিত বিচারকমণ্ডলী, আমার বক্তব্য হলো—ভয়কে জয় করলেই প্রকৃত সাফল্য সম্ভব। আমাদের জীবন এগিয়ে নেওয়ার পথে সবচেয়ে বড় বাধা হলো ভয়। কিন্তু সেই ভয় জয় করতে পারলে, আমরা সব অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারি।"

তার কথা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পুরো অডিটোরিয়াম করতালিতে ফেটে পড়ল। শিক্ষকরা প্রশংসার দৃষ্টিতে তাকালেন।

দ্বিতীয় পরীক্ষার সফল সমাপ্তি

মঞ্চ থেকে নামার পর নয়ন অনুভব করল, সে সত্যিই ভয় জয় করেছে।

ডিভাইসটা আবার ঝলমল করে উঠল। স্ক্রিনে লেখা:

"দ্বিতীয় পরীক্ষা সফল!
পুরস্কার: আত্মবিশ্বাস +৩০% বৃদ্ধি।
পরবর্তী পরীক্ষা আসছে। প্রস্তুত থাকো।"

নয়ন হাসল। সে জানত—এটাই কেবল শুরু।
 

Comments

    Please login to post comment. Login