Posts

উপন্যাস

ডিভাইসের শক্তি তাকে ধীরে ধীরে বদলে দিচ্ছে

March 5, 2025

মোঃ রাজিব

30
View

নয়ন এখন আগের চেয়ে অনেক আত্মবিশ্বাসী। ডিভাইসের শক্তি তাকে ধীরে ধীরে বদলে দিচ্ছে। ভয় জয় করার পর মনে হচ্ছে—কোনো কিছুই অসম্ভব নয়। কিন্তু সে জানে, ডিভাইসের প্রতিটি পরীক্ষা তার জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ আনবে।

স্কুল থেকে ফেরার পথে মনি হেসে বলল, "ভাইয়া, তুমি তো এখন সুপারহিরো হয়ে যাচ্ছ!"

নয়ন হাসল। "সুপারহিরো নয়, শুধু নিজের সীমা ছাড়িয়ে যেতে শিখছি।"

হঠাৎই ডিভাইসটা আবার কম্পন করল। নয়নের হাত কেঁপে উঠল। স্ক্রিনে নতুন বার্তা ভেসে উঠল—

"তৃতীয় পরীক্ষা: সত্যিকারের বন্ধুত্ব।
সময়: ৭২ ঘণ্টা
লক্ষ্য: কারও সমস্যার সমাধান করে তার বিশ্বাস অর্জন করো।"

নয়ন থমকে দাঁড়াল। এই পরীক্ষা আগের দুটোর চেয়েও কঠিন মনে হলো। কারও বিশ্বাস অর্জন—এটা সহজ নয়।

মনি বলল, "ভাইয়া, এবার কী করবে?"

নয়ন ভাবল, স্কুলে তো সবাই তার চেনা। কিন্তু কাকে সাহায্য করলে সত্যিকারের বন্ধুত্ব তৈরি হবে?

রিহানের রহস্য

পরদিন স্কুলে নয়নের নজর গেল রিহানের দিকে। নতুন ছেলেটা সবসময় একা থাকে। কারও সঙ্গে মিশে না। নয়নের মনে হলো, হয়তো রিহানই তার পরীক্ষার চাবিকাঠি।

বিরতির সময় নয়ন সাহস করে রিহানের পাশে গিয়ে বসল।

"কী খবর?"

রিহান চমকে উঠল। "আমার সঙ্গে কথা বলছো কেন?"

নয়ন মৃদু হেসে বলল, "কেন? বন্ধু হতে কি সমস্যা?"

রিহান কিছু বলল না। চোখে অদ্ভুত এক গোপন দুঃখ লুকানো। নয়ন বুঝল, এই ছেলেটার ভেতরে একটা গভীর কষ্ট আছে।

"কিছু সমস্যা হচ্ছে?" নয়ন জিজ্ঞেস করল।

রিহান একটু চুপ থেকে ধীরে ধীরে বলল, "তুমি বুঝবে না। সবাই শুধু মজা নেয়, কেউ আসল সমস্যা বোঝে না।"

নয়ন বলল, "আমি সত্যিই বুঝতে চাই। বলো, তোমার সমস্যাটা কী?"

বিশ্বাসের পথে প্রথম ধাপ

কিছুক্ষণ চুপ থেকে রিহান বলল, "আমার বাবা-মা এক মাস হলো আলাদা হয়ে গেছে। মা আমাকে এই শহরে নিয়ে এসেছে, কিন্তু এখানে আমি একদম একা। বন্ধু নেই, কারও সঙ্গে কথা বলতে পারি না। সবসময় মনে হয়, আমি একা…"

নয়ন মনের গভীরে রিহানের কষ্টটা অনুভব করতে পারল। সে জানত, একাকিত্ব কতটা কষ্ট দেয়।

"আমি আছি, রিহান। যদি বন্ধু হতে চাও, আমি সবসময় পাশে থাকবো।"

রিহান অবাক হয়ে তার দিকে তাকাল। কেউ আগে কখনো এভাবে তাকে বোঝার চেষ্টা করেনি।

ডিভাইসটা হালকা আলো ছড়াল, কিন্তু স্ক্রিনে কিছু লেখা এল না। নয়ন বুঝল, এখনও পরীক্ষাটা সম্পূর্ণ হয়নি।

বন্ধুত্বের সত্যিকারের পরীক্ষা

স্কুল শেষে নয়ন দেখল, রিহান ধীর পায়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করছে। হঠাৎ কয়েকজন দুষ্টু ছেলে এসে তাকে ঘিরে ফেলল।

"এই তো নতুন ছেলে! আমাদের সঙ্গে একটু 'মজা' করবি না?"

রিহান ভয় পেয়ে গেল। নয়ন দূর থেকে দেখছিল। এটাই তার সুযোগ—রিহানকে সত্যিকারের সাহায্য করার।

সে দ্রুত ছুটে গিয়ে বলল, "তোমরা ওকে বিরক্ত করছো কেন? যদি সাহস থাকে, তাহলে আমার সঙ্গে কথা বলো।"

দুষ্ট ছেলেগুলো হেসে বলল, "ওহ, নায়ক এসে গেছে!"

নয়ন সাহস করে বলল, "বন্ধুকে রক্ষা করতে সবসময় প্রস্তুত। তোমরা এখন চলে যাও।"

ছেলেগুলো অবশেষে চলে গেল। রিহান বিস্মিত হয়ে বলল, "তুমি…তুমি কেন সবসময় আমাকে সাহায্য করছো?"

নয়ন হাসল। "কারণ আমি জানি, বন্ধু মানে একে অপরের পাশে থাকা।"

ডিভাইসটা আবার ঝলমল করে উঠল। এবার স্ক্রিনে বড় করে লেখা ভেসে উঠল—

"তৃতীয় পরীক্ষা সফল!
পুরস্কার: সহানুভূতি +২৫% বৃদ্ধি।
পরবর্তী পরীক্ষা শীঘ্রই আসবে। প্রস্তুত থাকো।"

রিহান নয়নের দিকে হাত বাড়িয়ে দিল। "তুমি সত্যিকারের বন্ধু।"

নয়ন হাত ধরে বলল, "এখন থেকে আমরা একসঙ্গে সব সমস্যার মুখোমুখি হবো।"

Comments

    Please login to post comment. Login